পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষঃ নিহত ৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ চট্টগ্রামে বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নে এস আলম গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে ৪ জন নিহত হয়েছেন। বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হলেও স্থানীয়দের দাবি নিহতের সংখ্যা ৬।
৪ এপ্রিল (সোমবার) বিকেল সোয়া ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে ৩ জন এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তির পর রাতে আরো একজন মারা যায়। নিহতরা হলেন- জাকির হোসেন (৩০), জাকের আহাম্মদ (৫০), মোহাম্মদ মোর্তুজা আলী (৫০), অংকুর আলী (৬০)।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুজ্জামান প্রথমে ৩ জন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাকের হোসেন (৩০) নামের একজন মারা যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক পঙ্কজ বড়ুয়া। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় জনতা পুলিশের জারি করা ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে মিছিল বের করলে পুলিশ এতে বাধা দেয়। এ সময় সংঘর্ষের সূচনা হয়। স্থানীয়দের হামলায় পুলিশের ১১ জন সদস্য আহত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, গন্ডামারা এলাকায় এস আলম গ্রুপের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে পক্ষে বিপক্ষে বিরোধ চলে আসছিলো। সোমবার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পক্ষে বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ আয়োজন করলে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে এলাকাবাসী ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় ব্যাপক সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছে, পুলিশ সমাবেশে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা গ্রামবাসীর ওপর নির্বিচারে গুলি ছুঁড়লে ওই ৪ জন নিহত হয়। স্থানীয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের বাঁশখালীর উপজেলার গন্ডামারার উপকূলীয় এলাকায় এস আলম গ্রুপ ও চাইনা সেফকো কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের বিপক্ষে গত কয়েক মাস ধরে এলাকাসাীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাধা প্রদান করছে স্থানীয় জনতা। প্রকল্পের পক্ষে-বিপক্ষে দুইটি গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ওই বিপক্ষের নেতৃত্বে আছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা লিয়াকত আলী আর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষে আছেন স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল আলম মাস্টার। এ দুই গ্রুপ সোমবার বিকেলে পাল্টাপাল্টি সমাবেশের আয়োজন করলে পুলিশ ১৪৪ ধার জারি করে। স্থানীয়রা ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে মিছিল সমাবেশ শুরু করলে বিকেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।