মাদার তেরেসার ‘সেইন্ট’ উপাধি লাভ
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ভারতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সেবায় ব্যাপক অবদানের জন্য সম্মান জানিয়ে মাদার তেরেসাকে ‘সেইন্ট’ উপাধিতে ভূষিত করেছে রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টধর্মের কেন্দ্র ভ্যাটিকান সিটি।
…
টানা কয়েক সপ্তাহের প্রস্তুতি শেষে ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে প্রায় এক লাখ পূণ্যার্থী উপস্থিতিতে এক বিরাট অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মাদার তেরেসাকে এই সম্মান প্রদান করেন পোপ ফ্রান্সিস।
…
১৯৯৭ সালে মারা যান মাদার তেরেসা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭। তার ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকীর একদিন আগে তাকে সেইন্ট ঘোষণা করা হলো।
…
১৯১০ সালের ২৫ আগস্ট আলবেনিয়ায় জন্ম নেন তেরেসা। এরপর আনিয়েজ গঞ্জে বয়াজিও ‘নান’ হন ১৯২৮ সালে। তখন তার নাম হয় সিস্টার তেরেসা। ১৯৩৭ সালের ২৪ মে তেরেসা ‘মাদার’ হন। আজ সেন্ট ঘোষণার পর থেকে তিনি হলেন ‘সেইন্ট তেরেসা’। এর পর তার নামে ‘হোলি মাস’ হতে পারবে। চার্চ নামাঙ্কিত হতে পারবে তেরেসার নামে এবং ছবিতে তার মাথার পিছনে ‘হেলো’ বা জ্যোতির্বলয় থাকতে পারবে।
…
মাদার তেরেসা ১৯৫০ সালে কলকাতায় মিশনারিজ অফ চ্যারিটি নামে সেবা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। সুদীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে তিনি গরীব, অসুস্থ, অনাথ, অসহায় ও মৃত্যুপথযাত্রী মানুষের সেবা করেছেন। সেই সঙ্গে মিশনারিজ অফ চ্যারিটির বিকাশ ও উন্নয়নেও নিবিড় পরিশ্রম করেছেন।
…
প্রথমে ভারত ও পরে পুরো বিশ্বে তিনি তার এই মিশনারি কার্যক্রম ছড়িয়ে দেন।
…
১৯৭৯ সালের ১৭ অক্টোবর তেরেসা তার কাজের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার ও ১৯৮০ সালে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন’ লাভ করেন।
…
সেন্ট ঘোষণা করার আগে কয়েকটি ধাপে কিছু প্রক্রিয়া থাকে। মাদার তেরেসার ক্ষেত্রে ১৯৯৯ সালে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেন্ট হওয়ার যোগ্য কোনো ব্যক্তির সেন্টহুড বা সেন্ট হওয়ার প্রক্রিয়াটি সাধারণত শুরু হয় তার মৃত্যুর অন্তত পাঁচ বছর পর। কিন্তু মাদার তেরেসার ক্ষেত্রে পোপ দ্বিতীয় জন পল এই নিয়ম শিথিল করেন।
…
মাদার তেরেসার ক্যানোনাইজেশন অনুষ্ঠানের আগে প্রস্তুতিতে ব্যস্ত মিশনারিজ অব চ্যারিটির নানরা।…
মাদার তেরেসাকে সেন্ট ঘোষণার জন্যে যে দু’টি অলৌকিক ঘটনা পোপ অনুমোদন করেন তার একটি ঘটেছে ভারতে। ১৯৯৮ সালে দেশটির দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরের নাকোড় গ্রামের মনিকা বেসরার ডিম্বথলির ক্যান্সার মাদার তেরেসার আশীর্বাদে সেরে যায়। ভ্যাটিকান ২০০২ সালে এটি অনুমোদন করে।
…
দ্বিতীয় অলৌকিক ঘটনাটি ব্রাজিলের এক ব্যক্তির। তার মাথায় একাধিক টিউমার ছিল, কিন্তু তিনি আশ্চর্যজনকভাবে সেরে ওঠেন। আর তার এই সেরে ওঠাকে মাদার তেরেসার আশীর্বাদ বলেই নিশ্চিত হয়েছে ভ্যাটিকান।