বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক সৈকত রুশদী’র জন্মদিন

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক সৈকত রুশদী’র জন্মদিন
ছবি: সৈকত রুশদী।

এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্ক: ৫ নভেম্বর। বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক সৈকত রুশদী’র জন্মদিন। ১৯৫৯ সালের এই দিনে মেহেরপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। লেখাপড়ার শুরু মেহেরপুর বি এম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে ঢাকার ইন্টারমিডিয়েট টেকনিক্যাল কলেজ (বর্তমানে বিজ্ঞান কলেজ), আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে পড়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে সম্মানসহ স্নাতক (বি.এস.এস.) ও স্নাতকোত্তর (এম.এস.এস.) ডিগ্রী লাভ করেন।

.
ছাত্র জীবনেই সাপ্তাহিক ‘কিশোর বাংলা’সহ একাধিক পত্রিকায় ছড়া ও কবিতা লেখার শুরু। ১৯৭৮ সালে সেসময়ের সর্বাধিক প্রচারিত সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’য় ক্রীড়া বিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশের মধ্য দিয়ে তার সাংবাদিকতা পেশায় প্রবেশ। পরবর্তীতে তিনি সাপ্তাহিক ‘মতামত’ ও ‘দৈনিক দেশ’ পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে ভাষ্যকার হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৩ সালে লন্ডনে বিবিসি’র বাংলা বিভাগে ব্রডকাস্টার হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৮৬ সালে পর্যন্ত সেখানে কর্মরত ছিলেন। এরপর আবার ফিরে আসেন ঢাকায়। স্টাফ রিপোর্টার হিসাবে কাজ শুরু করেন দৈনিক খবর ও ইংরেজি দৈনিক দ্য বাংলাদেশ টাইমস-এ। একই সময় ভারতের সাপ্তাহিক ‘দেশ’ সহ একাধিক দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় তাঁর রচিত নিবন্ধ, গল্প ও কবিতা প্রকাশিত হয়।

.
১৯৯২ সালে তিনি ঢাকায় কানাডীয় হাইকমিশনে তথ্য ও রাজনৈতিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। এক বছর পর যোগ দেন অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনে। ১৯৯৩ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি ব্রিটিশ হাইকমিশনে প্রথমে উর্ধ্বতন গণমাধ্যম ও জন বিষয়ক কর্মকর্তা এবং পরে উর্ধ্বতন রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে দক্ষতার সাথে কাজ করেন। ২০০৩ সালে চাকরী ছেড়ে সপরিবারে অভিবাসী হন কানাডায়।

.
১৯৮০-এর দশকে লন্ডনে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস-এর সদর দপ্তরে ব্রডকাস্টার হিসেবে কাজের পর ১৯৯০ দশকে তিনি বাংলাদেশে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ব্রিটেনের হাইকমিশনে উর্ধ্বতন গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করেছেন। এক যুগ ধরে টরন্টোয় বসবাসকারী এই সাংবাদিক বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণমাধ্যম বিশ্লেষক (media intelligence) প্রতিষ্ঠান সিশন (Cision)-এর কানাডার সদর দপ্তরে মূল্যায়ন সম্পাদক ও বিশ্লেষক হিসেবে কর্মরত আছেন।

.
সৈকত রুশদী ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন ১৯৯১-১৯৯২ মেয়াদে। বর্তমানে তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সহযোগী সদস্য। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম ও বাংলাদেশ ক্রীড়া সাংবাদিক সমিতি’র সদস্য। পরিবেশ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান হল্ট গ্রীনহাউস-এর যুগ্ম আহ্বায়ক এবং লায়ন্স ক্লাব ও ঢাকা প্রগতি গ্রেটার-এর পরিচালক হিসেবে অবদান রেখেছেন। তিনি ১৯৮৫ সালে ব্রিটেনের বাংলা সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হিসাবে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলায় অবদান রাখেন। বাংলাদেশে দাবা ফেডারেশন ও ক্রিকেট বোর্ডের গণমাধ্যম বিষয়ক কমিটিতেও কাজ করেছেন তিনি। টরন্টোতে ভ্যালী পার্ক স্কুলের পরামর্শক কাউন্সিল-এর নির্বাচিত সদস্য এবং ভ্যালী পার্ক গো গ্রীন ক্রিকেট ফিল্ড প্রকল্পের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন।

.
তার প্রকাশিত রচনা ও কাজের মধ্যে রয়েছে, উপন্যাস ‘অচিন পাখী’ (২০০৩)। সম্পাদিত প্রকাশনা লন্ডনের বাংলাদেশ সেন্টারের জন্য ‘একুশে স্মরণিকা’ (১৯৮৪) ও ‘হল্ট গ্রীনহাউস’ (১৯৮৯) এবং কাঠের কাজ বাংলাদেশ সেন্টারের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের রেপ্লিকা।

.
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের দিনটিকে ভিত্তি করে মেহেরপুরে প্রতিবছর ১৪ থেকে ১৭ এপ্রিল ‘বাংলার ঐতিহ্য মেহেরপুর উৎসব’ নামে একটি সার্বজনীন উৎসব চালু করার প্রস্তাবক তিনি।

.
সাংবাদিক হিসেবে তিনি ঢাকায় দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্ক-এর উদ্বোধনী শীর্ষ সম্মেলন (১৯৮৫) ও কানাডার ভিক্টোরিয়ায় জাতিসংঘের শিশুদের জন্য পরিবেশ বিষয়ক বিশ্ব সম্মেলন (২০০২) সহ দেশে ও বিদেশে বহু সম্মেলন, অনুষ্ঠান ও ঘটনার খবর পরিবেশন করে খ্যাতি অর্জন করেন। বিভিন্ন সময়ে বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা, বাংলাদেশে চ্যানেল আই টেলিভিশন, কানাডার এশিয়ান টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ও স্যাটেলাইট রেডিও এক্সএম রেডিও তাঁর সাক্ষাতকার গ্রহণ করেছে।

.
কানাডা প্রবাসী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রাজনীতি ও গণমাধ্যম বিশ্লেষক, বেতার ও টেলিভিশন ভাষ্যকার, সাংবাদিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী, লেখক ও কবি সৈকত রুশদী। ২০১৫ সালের ৫ নভেম্বর ৫৭-তে পা রাখলেন তিনি। আ . ক. ম. মনিরুল হ্ক ও রোকেয়া বেগমের একমাত্র পুত্র সৈকত রুশদী। বিভাগ-পূর্ব নদীয়া-কুষ্টিয়া জেলার প্রখ্যাত চিকিৎসক ডাক্তার জাফর আলীর পৌত্র তিনি।

এসবিডি নিউজ ডেস্ক