পরলোকে ডা. এম আর খান
এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্ক: দেশের খ্যাতিমান শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান আর নেই। ৮৯ বছর বয়সে কিংবদন্তী এই চিকিৎসক শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ৫ নভেম্বর (শনিবার) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানান তার চিকিৎসার তত্বাবধানে থাকা হাসপাতলের পরিচালক ডা. এমএ কাশেম। তিনি জানান, বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা নিয়ে এম আর খান দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। সম্প্রতি দেশে ও দেশের বাইরে তার একাধিক অস্ত্রোপচার হয়েছিল।
…
ডা. এম আর খান নামে পরিচিত এই চিকিৎসকের পুরো নাম মোহাম্মদ রফি খান। ১৯২৮ সালের ১ আগস্ট সাতক্ষীরার রসুলপুরে তার জন্ম। ১৯৫৩ সালে এমবিবিএস পাস করেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে। তিনি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিটিএমঅ্যান্ডএইচ, এমআরসিপি, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিসিএইচ, ঢাকার পিজি থেকে এফসিপিএস, ইংল্যান্ড থেকে এফআরসিপি ডিগ্রি নিয়ে পেশাগত জীবনে নিবেদিত হন।
…
নিজের পেনশনের টাকায় খ্যাতিমান এই চিকিৎসক তার পেনশনের টাকা দিয়ে গড়ে তুলেন ডা. এম আর খান-আনোয়ারা ট্রাস্ট। দুস্থ মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, তাদের আর্থিক-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে এ ট্রাস্টের মাধ্যমে তিনি নিরন্তর কাজ করেছেন।তার উদ্যোগে গড়ে উঠেছে জাতীয় পর্যায়ের শিশুস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠা করেছেন শিশুস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। তার উদ্যোগেই গড়ে ওঠে সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতাল, যশোর শিশু হাসপাতাল, সাতক্ষীরা ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার, রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তরা উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতাল, নিবেদিতা নার্সিং হোমসহ আরও বহু প্রতিষ্ঠান। দেশ থেকে পোলিও দূর করতে উদ্যোগী ভূমিকা রেখেছেন ডা. এম আর খান। কাজ করেছেন ধূমপানবিরোধী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠান ‘আধূনিক’-এর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে।
…
প্রতিষ্ঠানতুল্য এই মানুষটির জীবনী স্থান পেয়েছে কেমব্রিজ থেকে প্রকাশিত ইন্টারন্যাশনাল হু ইজ হু অব ইন্টেলেকচুয়ালে। পেয়েছেন স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক, আন্তর্জাতিক ম্যানিলা অ্যাওয়ার্ডসহ আরও অনেক পুরস্কার। শিক্ষা, চিকিৎসা, শিশুস্বাস্থ্য সুরক্ষা, দুর্গত অসহায় মানুষের সেবাসহ সমাজকল্যাণমূলক কাজে অসামান্য অবদানের জন্যে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি স্বর্ণপদকে ভূষিত করেছে।