বাজারে পেঁয়াজের দাম কমলেও বেড়েছে মাছের দাম
এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্ক: গত মাসের শেষে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দিলে হঠাৎ অস্থির হয়ে ওঠে বাংলাদেশের বাজার।ভারত থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘোষণায় হঠাৎ বেড়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম নানা উদ্যোগের ফলে কমে এসেছে। আগের সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় এ সপ্তাহে আরো কমেছে এর দাম। পাশাপাশি কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। তবে ইলিশের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দাম বেড়েছে অন্যান্য মাছের। অন্যান্য পণ্যের বাজারে তেমন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি।
গত মাসের শেষে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দিলে হঠাৎ অস্থির হয়ে ওঠে বাংলাদেশের বাজার। এক কেজি পেঁয়াজের দাম ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। তবে দেশি পেঁয়াজের মজুদ সন্তোষজনক ছিল বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এছাড়া মিয়ানমার, তুরস্ক ও মিসর থেকে দ্রুত পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। পাশাপাশি দেশে সরকারের কঠোর নজরদারি চালানো হয়। ফলে ধীরে ধীরে দাম কমে আসছে। গতকাল রাজধানীতে দেশি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আর আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। আগের সপ্তাহেও দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকার উপরে এবং আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম ছিল ৮০ টাকার উপরে। সরকারের পক্ষ থেকেও এর আগে বলা হয়েছিল বর্তমান পরিস্থিতে পেঁয়াজের দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা হতে পারে।
এদিকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় অন্যসব মাছে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গতকাল বাজারে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি (আকারভেদে) রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, মৃগেল ২২০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, পাঙাস ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, কৈ ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। এছাড়া ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে প্রতিকেজি বাগদা চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, গলদা ৪৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৮৫০ টাকা, দেশি মাগুর ৫০০ থেকে ৯৫০, বাইন (নদী) ৫০০ থেকে ৯৫০ টাকা, বাইলা ৪৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, কাচকি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, মলা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, পুঁটি (দেশি) ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মাংসের বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি দরে। এছাড়া লেয়ার মুরগি (সাদা) ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, লেয়ার (লাল) ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি গরু ও মহিষের মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, ছাগলের মাংস ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে লাল ডিমের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিমের দাম। এসব বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হতে দেখা গেছে ১১৫ টাকায়। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে অন্যসব ডিম। বাজারে হাঁসের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগির ডিম ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ২১০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া অপরিবর্তিত আছে চাল, ডাল ও ভোজ্য তেলের দাম।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন সবজি এলেও এখনো দাম বেশ চড়া। প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, ছোট আকারের ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা পিস, বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। মুলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। কয়েক মাস ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া পাকা টমেটো ও গাজরের দাম এখনো চড়াই রয়েছে। পাকা টমেটো আগের সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা কেজি। গাজর বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। গত সপ্তাহের মতো ছোট আকারের লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা পিস।
করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বরবটি। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজি। চিচিংগা, ঝিঙে, ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকার মধ্যে। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
অন্যান্য মুদিপণ্যের মধ্যে চিকন চাল প্রতি কেজি ৪৭ থেকে ৫৬ টাকার মধ্যে, মাঝারি চাল ৪২ থেকে ৪৮ টাকার মধ্যে এবং মোটা চাল ৩০ থেকে ৩৮ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ৫ লিটারের ভোজ্যতেলের বোতল ৪৩০ থেকে ৫০০ টাকা এবং এক লিটারের বোতল ৯৫ থেকে ১০৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। দেশি ছোট দানার মশুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে। চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৬ থেকে ৬০ টাকা দরে।