প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর আসন্ন
বিশেষ নিউজ24 ডট কম,ডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিতে সেদেশে সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বিষয়টি তথ্য নিশ্চিত করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা ও নয়াদিল্লি সময়সূচি নির্ধারণ করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী এতে মৌখিক অনুমোদন দিয়েছেন। আগামী ৬-৭ সেপ্টেম্বর এই সফর হবে। এর আগে গত ১৮ জুন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথ পরামর্শক কমিশন-জেসিসি বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পরদিন ১৯ জুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের সময়সূচি নিয়ে আলোচনা হয়। সফর শেষে দেশে ফিরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, জাতিসংঘ অধিবেশনের আগেই সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাবেন। দিল্লিও সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান তিনি। দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আগে দুই দেশ যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) বৈঠক করবে। আন্তঃসীমান্ত নদীর পানিবণ্টন ২ দেশের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলেও মন্ত্রী পর্যায়ের এ বৈঠক গত ১০ বছরে অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বশেষ ২০১৯ সালের অক্টোবরে ভারত সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধে বৈশ্বিক অর্থনীতি টালমাটাল হওয়ার অন্যতম নেতিবাচক নিয়ামক হয়ে উঠেছে অস্থির জ্বালানির বাজার। প্রয়োজন মেটাতে সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে হলেও বাড়তি মূল্যে জ্বালানি সংগ্রহ করছে অপেক্ষাকৃত ধনী দেশগুলো। ফলে, স্বল্প আয়ের দেশগুলো হঠাৎ আর্থিক বিপাকে নাজুক হওয়ার পথে। সংকট উত্তরণে তেলের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যবহার কমানোর সরকারি উদ্যোগ নিলেও এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যার প্রভাব পড়ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে শুরু করে স্থানীয় বাজার পর্যায়েও। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে এ বিষয়ে রাজনৈতিক বোঝাপড়ায় আসতে চায় ঢাকা। এ ছাড়া দীর্ঘ মেয়াদে বন্ধুরাষ্ট্রটির সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা বাড়াতেও আগ্রহী বাংলাদেশ। তবে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলছেন,ভারতের উদ্বৃত্ত বা রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আনা হলে বর্তমান সংকট মেটানো সম্ভব হবে। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য থেকে উদ্বৃত্ত ডিজেল আনা সম্ভব হলে সাশ্রয় হবে পরিবহন খরচ। ভারত থেকে যদি আমরা ডিজেল ৫ থেকে ৭ ডলার কমে আনতে পারি, তাহলে এই সময় পরিবহন খরচে ব্যয় অনেকটা লাভজনক হবে। আর, রাশিয়া থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বন্ধুরাষ্ট্রটির শোধনাগারে প্রক্রিয়াজাত হওয়ার পর সেগুলো কম দামে বিক্রিতে ভারত সম্মত হলে উপকৃত হবে বাংলাদেশ।
ম তামিম বলেন, রাশিয়ার যে জ্বালানি তেল আনা হবে, সেটি আমাদের দেশে পরিশোধিত করার মতো মেশিন নেই। ভারতের পরিশোধনাগারে রাশিয়ান তেল পরিশোধিত করার পর যে প্রোডাক্টটা আসে ডিজেল বা পেট্রোল, সেটি যদি আমরা একটু কম দামে কিনতে পারি, মানে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কম দামে কিনতে পারি, ততটুকুই আমাদের জন্য লাভজনক হবে।’
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, সংকট উত্তরণে প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে জ্বালানি সহযোগিতা তৈরিতে মনোযোগী সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরেই এ বিষয়ে রাজনৈতিক বোঝাপড়া হওয়ারও ইঙ্গিত দিচ্ছেন তিনি। মোমেন বলেন, তাদের (ভারত) যদি উদ্বৃত্ত থাকে এবং তাদের সঙ্গে যদি আমরা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে পারি, সেটি নিয়ে নিশ্চয়ই আমাদের চেষ্টা থাকবে। পূর্বাঞ্চলে যেসব রাজ্য আছে, সেখানে যদি তেল বেশি থাকে, তাহলে সেখান থেকেও আনার চেষ্টা করা হবে।