শীতের ভোর

শীতের ভোর

শাতি  ইফফাত: ভোরের আলো ফোটেনি আজ। শীত শীত অনুভবে কুয়াশার চাদরে ঢাকা আকাশ। সূয্যি মামার দেখা নেই যেন। গায়ে লেপ জড়িয়ে শীত ঋতুর ভালোবাসার উষ্ণ পরশ নিচ্ছে রুবি। চোখ মেলতে একটুও ইচ্ছে করছে না। আজ যদি শুভ্র ওর পাশে থাকতো! সেই ডিসেম্বরের শীত যেন জাপটে ধরে আছে।

এখন এক কাপ গরম চা এনে ওর ঘুম ভাঙ্গাতো শুভ্র। চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস ফেলছে আর ভাবছে—- গত শীতে ওরা একসঙ্গে ছিল। আর আজ ওর মনে শূন্যতা, হাহাকার। একাকিত্বের চাদরে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছে।

এবার উঠতে হবে। কারণ নিজেকেই চা বানাতে হবে। তার আগে উঠেই মুখ-হাত ধুয়ে নেয়। দুই পিস পাউরুটি টোস্ট করে নেয়। আর তাতে বাটার লাগিয়ে নেয়। চুলায় চায়ের জন্য পানি চাপিয়ে দেয়।  ডাইনিং টেবিলে বসে বাটার মাখা পাউরুটি মুখে নেয় আর ভাবে, শুভ্র ওর জীবনে এসেছিল হঠাৎ দমকা হাওয়ার মতো। আর ঝড় শেষে চলেও গেছে। যেন কোন এক ঝড়ের রাতে ওর দুয়ারে এসে কড়া নেড়েছিল। শীতের চাদরটা গায়ে জড়ায়। এমনি সকালে শুভ্র ওকে জড়িয়ে রাখতো বিছানায়। এত প্রেম, এত ভালবাসা—–
তবু মিথ্যে হয়ে যেতেও সময় লাগেনি। রুবি একদিন জানতে পারে শুভ্র ওকে ছেড়ে অন্য নারীর প্রেমের আকর্ষণে সাড়া দিয়েছে।

চায়ের পানি ফুটে গেছে। চা বানিয়ে কাপে ঢেলে নেয়। গরম চায়ে চুমুক দেয় আর ভাবে, আমাকে একা করে দিয়ে চলে যেতে পারলে শুভ্র? ভালবাসার সময়গুলো, অনুরাগের সময়গুলো—- সব ভুলে গেলে?

মেয়েটির নাম অন্তরা। রুবি শুভ্রকে বলেছিল, আমার তোমার ভালবাসায় চির ধরে গেছে। তুমি যে কোন একদিক বেছে নাও। এরপর শুভ্র চলে যায়। রুবি ফেরানোর চেষ্টা করে নি। আজ শুধু নিজেকেই প্রশ্ন করে, কুয়াশা মাখা সেই শীতের ভোর পেরেছি কি ভুলতে?

লেখক: শাতি  ইফফাত,প্রাবন্ধিক।।
iffatshati@gmail.com

অতিথি লেখক