এক দফার আন্দোলনে বিএনপি
এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্ক: এক দফার আন্দোলনে যাচ্ছে বিএনপি। ১০ দফা দাবিতে গত ছয় মাস নানা কর্মসূচি পালনের পর দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরাম দ্রুত সময়ের মধ্যে এক দফার আন্দোলনে নামার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শরিক দলগুলোর সাথেও বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছেন। জানা গেছে, কোরবানির ঈদের আগে না হলে এর পররপরই ঢাকায় বিশাল সমাবেশ করে এক দফার ঘোষণা দেয়া হবে। এক দফায় থাকছে সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্নুর্বহাল।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির সভায় এক দফার আন্দোলনে নামার পাশাপাশি রাষ্ট্র সংস্কারের ‘যৌথ রূপরেখা’ চূড়ান্তকরণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগের কয়েকটি বৈঠকের মতো এ বৈঠকেও রূপরেখার পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ নীতিনির্ধারক বৈঠকে বলেছেন, বিএনপির সামনে সময় খুবই কম। তাই যৌথ ঘোষণাপত্র নিয়ে সময় ক্ষেপণের সুযোগ নেই। এখন সময় এসেছে এক দফার আন্দোলনে যাওয়ার। আলোচনার মাধ্যমে ‘যৌথ রূপরেখা’ ইস্যুর সমাধান হলে ভালো, না হলে যার যার অবস্থান থেকে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।বৈঠকে এক দফার আন্দোলনে নামতে শীর্ষ নেতারা সুনির্দিষ্ট মতামত দিয়েছেন। কেউ কেউ ঈদের আগেই এক দফার ঘোষণা দেয়ার কথা বলেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, ঈদের আগে এক দফা ঘোষণা করা হলে ঈদের ছুটির কারণে তা ছন্দ হারাতে পারে। এ কারণে তারা ঈদের পর ঢাকায় বড় শোডাউন দিয়ে এক দফার ঘোষণার পরামর্শ দিয়েছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান এ প্রসঙ্গে বলেছেন, এখন দফা একটাই। সরকার পরিবর্তন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। সব দলেরই এখন সেই দফায় সরাসরি চলে যাওয়া উচিত। বিএনপি দ্রুত এক দফার আন্দোলনে নামার বিষয়ে চিন্তা করছে বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, গতকাল শুলশান কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোটের সাথে বৈঠক করেছে বিএনপি। এক দফার ঘোষণা নিয়ে জোট নেতাদের মতামত নিতেই এ বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে জোট নেতারা ঈদের পর এক দফার ঘোষণা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। যুগপৎ আন্দোলনের ভিত্তি হিসেবে ‘যৌথ ঘোষণাপত্র’ দ্রুত চূড়ান্ত করে এক দফার আন্দোলনে যেতে চায় বিএনপি। তার আগে আলোচনার মাধ্যমে এ ইস্যুতে গণতন্ত্র মঞ্চের সাথে সৃষ্ট মতানৈক্য দূর করতে চান নীতিনির্ধারকরা। তবে ঘোষণাপত্র নিয়ে শেষপর্যন্ত ঐকমত্য না হলে দলটি তার নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম থেকে এক দফার আন্দোলন শুরু করতে পারে। আর সে ক্ষেত্রে দাবি আদায়ে মিত্ররা যার যার অবস্থান থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ সূত্রে জানা গেছে, মোটা দাগে তিনটি দফায় আটকে রয়েছে বিএনপির প্রণীত ৩১ দফা খসড়া যৌথ রূপরেখা। সেগুলো হলো : সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার উচ্চকক্ষের নির্বাচন পদ্ধতি ও এমপিদের ক্ষমতা এবং নির্বাচনকালীন সরকারের কার্যক্রম। এর আগে এটা নিয়ে একাধিক বৈঠক হলেও উভয় পক্ষ নিজ অবস্থানে অনড় থাকায় সঙ্কট কাটেনি। তবে দেশ ও জাতির স্বার্থে প্রয়োজনীয় ছাড় দিয়ে ন্যূনতম ঐকমত্যের জায়গাগুলো নির্দিষ্ট করে ‘যৌথ ঘোষণাপত্র’ চূড়ান্তকরণের ব্যাপারে একমত হন তারা। এ ব্যাপারে এখন আলোচনা চলছে। ‘যৌথ রূপরেখা’ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, যৌথ ঘোষণাপত্র চূড়ান্তকরণের ক্ষেত্রে যেসব দফা নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের আপত্তি রয়েছে, সেগুলো সমাধানের সম্ভাব্য উপায় লিখিত আকারে বিএনপিকে জানানোর কথা রয়েছে। সেটি জানালে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।