সোয়াইন ফ্লু: সতর্কতা জারি করেছে ডব্লিউএইচও
এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্ক: সোয়াইন-ফ্লু সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথা ডব্লিউএইচও। স্পেনের এক ব্যক্তি সম্প্রতি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। সেই খবর ডব্লিউএইচও-কর্তাদের গোচরে আসে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি। স্পেনীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারাই এ সংক্রান্ত তথ্য ডব্লিউএইচও-কে দেন। এই নিয়ে স্পেনে তিন জন ইনফ্লুয়েঞ্জা এ (এইচওয়ানএনওয়ান তথা সোয়াইন ফ্লু) ভাইরাস আক্রান্ত হলেন। এই ধরনের সংক্রমণের প্রথম ঘটনা ঘটেছিল ২০০৮ সালে। দ্বিতীয়টি ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের। ইন্টারন্যাশনাল হেলথ রেগুলেশনস (আইএইচআর) ২০০৫-এর তথ্য অনুযায়ী, ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা জনস্বাস্থ্যে বিপুল প্রভাব ফেলতে সক্ষম। আর তাই এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে তা দ্রুত ডব্লিউএইচও-র নজরে আনাই নিয়ম।
সাম্প্রতিক এই সংক্রমণের খবরের প্রেক্ষিতে ডব্লিউএইচওজানিয়েছে, আক্রান্ত ব্যক্তি একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ। তিনি স্পেনের লেইডা প্রদেশের একটি শূকর পালনকেন্দ্র তথা খামারে কাজ করেন। স্যাম্পল টেস্টিং এবং জিনোম সিকোয়েন্সিং করে তার সংক্রমণ পজিটিভ সাব্যস্ত হয়েছে। আরও জানা গেছে, ওই ব্যক্তি বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ। জ্বর, কাশি এবং শরীরে অস্বস্তির মতো উপসর্গ ছিল তার।
তবে ডব্লিউএইচও-য়ের তরফে সতর্কতা জারি করা হলেও আতঙ্কের কারণ নেই বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। স্বাভাবিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্ক থাকলেই এই ভাইরাসের থাবা থেকে দূরে থাকতে পারেন আমজনতা।
প্রসঙ্গত, সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গসমূহ অন্যান্য ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গের মতই। সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গের মধ্যে জ্বর হওয়া, মাথা ব্যথা, গলা ও শরীর ব্যথা, শ্বাস কষ্ট, ক্ষুদামন্দা ও আলস্যবোধ করা, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি অন্যতম।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অসুস্থ হলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সোয়াইন ফ্লু ছোঁয়াচে। ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি মুখ না ঢেকে হাঁচি দেন কিংবা একই হ্যান্ড ওয়াশ ব্যবহার করেন তাহলে সেখান থেকেও ছড়াতে পারে এই রোগ। আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়ে রোগ জীবাণুর প্রকোপ বাড়ে। আর তাই সেই প্রকোপ আটকাতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি। সোয়াইন ফ্লু প্রতিরোধে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় নিম্নোক্ত খাবারগুলো রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন।
সিম ও মটরশুঁটি: বিনস জাতীয় শস্য আমাদের সুস্থ থাকতে সহায়তা করে। আর এই সময় সিম ও মটরশুঁটি বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। তাই খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন মটরশুঁটি ও সিম। এছাড়াও কলাই বা রাজমা টমেটো দিয়ে সেদ্ধ করে অল্প পেঁয়াজ-রসুন কুচি দিয়ে সাঁতলে স্যুপের মতো করেও খেতে পারেন। ফ্লু দূরে থাকবে।
ব্রকোলি: অনেকটা ফুলকপির মতো দেখতে সবুজ রঙের সবজি ব্রকোলিতে আছে প্রচুর ভিটামিন সি, ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সোয়াইন ফ্লু থেকে বাঁচতে এটি নিয়মিত পাতে রাখতে পারেন। এছাড়াও যাদের ঠান্ডা লাগার ধাত রয়েছে তাদের পরতিদিন ব্রকোলি খাওয়া ভালো।
গাজর: খাদ্য তালিকায় নিয়মিত গাজর রাখলে তা আমাদের শরীরের নানা উপকারে আসে। গাজর খেলে আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া ভালো থাকে। গাজর, কুমড়ো, কমলা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন। কারণ এগুলোর মধ্যে বিটা ক্যারোটিন থাকে। আর বিটা ক্যারোটিন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।
লো ফ্যাট ইয়োগার্ট: দই আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে সব সময়ই উপকারী। তবে যেকোনো ধরনের ফ্লু থেকে বাঁচতে ফুল ক্রিম মিল্কের থেকে তৈরি দই নয়, পানি ঝরানো টকদই খান। এই দই আপনাকে ফ্লু থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করবে।
এই খাবারগুলো খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিতভাবে আদা, রসুন, হলুদ, গোলমরিচ ইত্যাদি খান। এসব উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।