জাবি প্রক্টরের দায়িত্বে মো. আলমগীর কবীর
এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্ক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সংঘঠিত ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের সহায়তার অভিযোগ এনে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের করা আন্দোলানের প্রেক্ষিতে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তার স্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটিকস ও ডাটা সায়েন্স বিভাগের প্রফেসর এবং শহীদ তাজউদ্দীন হলের প্রভোস্ট মোহাম্মদ আলমগীর কবীরকে সাময়িকভাবে প্রক্টরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ১৮ মার্চ (সোমবার) বিশ্ববিদ্যালয় নতুন প্রসাশনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করেন ভিসি প্রফেসর নূরুল আলম। পরে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানের পদত্যাগ ও নতুন প্রক্টর আলমগীর কবিরের দায়িত্বের বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়।
সম্প্রতি মীর মশাররফ হোসেন হলে ধর্ষণের ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলা ও ধর্ষকদের সহায়তা করা, নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনিকে বাঁচাতে অভিযোগকারী ছাত্রীকে দিয়ে জোরপূর্বক দায়মুক্তি পত্র লেখানোসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠক প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করে শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্লাটফর্ম ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’। গত কয়েকদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন দিনব্যাপী অবরোধসহ লাগাতার আন্দোলনের এক পর্যায়ে গত ১৩ মার্চ (বুধবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর মো. নূরুল আলম ১৮ মার্চের (সোমবার) মধ্যে প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন অথবা তাকে সরিয়ে দেয়া হবে বলে আন্দোলনকারীদের আশ্বাস দেন।
পরে আজ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো.আবু হাসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে নতুন প্রক্টরের নাম ঘোষণা করা হয়৷ এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ.স.ম.ফিরোজ-উল-হাসানের অব্যাহতি প্রদানপূর্বক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটিকস এন্ড ডাটা সায়েন্স বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মদ আলমগীর কবীরকে ১৮ মার্চ অপরাহ্ন হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ করা হলো। তিনি প্রচলিত নিয়মে সুবিধাদি ভোগ করবেন।
অপরদিকে, প্রক্টরের অব্যাহতির বিষয়ে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক প্রফেসর রায়হান রাইন বলেছেন, “আমাদের প্রধান দাবিগুলোর একটি ছিল মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া। গত ৩ ফেব্রুয়ারির ধর্ষণের ঘটনায় এতদিন পর্যন্ত কেউ কোনও দায় নেয়নি কিন্তু আমরা ওই হলের প্রাধ্যক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের দায় নেয়াটা সঙ্গত মনে করেছি। সেই দাবির প্রেক্ষিতে একজনকে (প্রক্টর) অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ওই হল প্রভোস্টের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। আমরা মনে করি, প্রভোস্টের অবশ্যই দায় আছে। একটা হলে যখন টর্চার সেল থাকে কিংবা সেখানে বহিরাগতরা আসে, মাদক ব্যবসা চলে; বহিরাগতরা এসে ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটায় সেখানে অবশ্যই প্রভোস্টের দায় থাকে। হলে এই ধরনের কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে ওই হল, প্রভোস্টকে অবশ্যই দায় নিতে হবে এই মর্মে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে অন্যান্য হল প্রাধ্যক্ষকেও বার্তা দেয়া জরুরি।”
উল্লেখ্য, গত ৩ ফেব্রুয়ারি স্বামীকে আটকে রেখে বহিরাগত নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকদের সহায়তার অভিযোগ উঠে প্রক্টরের আ স ম ফিরোজ উল হাসানের বিরুদ্ধে। এরপর থেকেই প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’।