সঞ্চয়পত্রের সুদহার বাড়ানো হচ্ছে

সঞ্চয়পত্রের সুদহার বাড়ানো হচ্ছে

এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্ক: ব্যাংকে আমানতের সুদহার বাড়ার কারণে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদহারও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ ছাড়া এখন থেকে পেনশনার সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগকারীদের প্রতি মাসে সুদের টাকা দেওয়া হবে। মাস শেষে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীদের অ্যাকাউন্টে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সুদের টাকা জমা হবে। একই সঙ্গে ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডসহ সঞ্চয় অধিদপ্তর পরিচালিত ১১টি সঞ্চয় স্কিমের বিনিয়োগগুলো মেয়াদ শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনঃবিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হবে।

গতকাল মঙ্গলবার অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। মূলত সরকারের রাজস্ব আয়ে ঘাটতি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট মোকাবিলায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সভা সূত্রে জানা গেছে।

স্থায়ী আমানতে সাধারণত ৯ থেকে ১১ শতাংশ সুদ দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। তবে কোনো কোনো ব্যাংক ১৩ শতাংশ পর্যন্ত স্থায়ী আমানতে সুদ দিচ্ছে। সেখান বর্তমানে তিন মাস মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের মুনাফা দেওয়া হচ্ছে ১১ দশমিক ০৪ শতাংশ, পূর্ণ মেয়াদে পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ, পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, পেনশন সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। অথচ কয়েক বছর আগেও ব্যাংক আমানতের চেয়ে সঞ্চয়পত্রে অনেক বেশি মুনাফা দেওয়া হতো। বাজেটের ঘাটতি মেটাতে বাড়তি অর্থায়নের আশায় ব্যাংক আমানতের সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের সুদ হারে সামঞ্জস্য আনতেই সুদহার বাড়ানো হচ্ছে।

বর্তমানে মেয়াদ শেষে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীদের অর্থ সুদাসলে তাদের অ্যাকাউন্টে ফেরত দেয় সরকার। আইএমএফের চাপ ও অধিক সুদ ব্যয়ের কারণে গত কয়েক বছর ধরে সরকার জনগণের জন্য সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা কঠিন করে তুলেছিল। কিন্তু রাজস্ব আহরণ কমে যাওয়ায় এবং ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়া কমাতে আবারও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার দিকে ঝুঁকছে সরকার।
গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ঋণ কমিয়েছে। এ বছর সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া নিট ঋণের পরিমাণ ছিল ঋণাত্মক ৩ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৮ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা ঋণাত্মক ৭ হাজার ৩১০ কোটি নির্ধারণ করা হয়।

আর চলতি অর্থবছর এ খাত থেকে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইভাবে ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের অর্থও সুদাসলে ফেরত দেওয়া হয়। ডলার সংকটের কারণে কোনো কোনো ব্যাংক এসব বন্ডে বিনিয়োগকারীদের সুদাসল বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে বলে জানা গেছে।

নিজস্ব প্রতিনিধি

Related articles