আবাহনী জিতেছে ৩-১ গোলে
ক্রীড়া প্রতিবেদক,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ দ্বিতীয়ার্ধে হঠাৎই ম্যাচটা উত্তপ্ত। ২-০ গোলে এগিয়ে থাকা আবাহনীর একটা গোল শোধ করল ফরাশগঞ্জ। গোলদাতা জুনাপিউ বল জালে পাঠানোর আগে আবাহনী গোলরক্ষককে ধাক্কা মেরেছেন কি না, বিতর্ক তা নিয়েই। বাতাসে বল ধরতে লাফিয়ে উঠেন সোহেল। এ সময় জুনাপিউর ধাক্কায় বল তাঁর হাত থেকে বেরিয়ে যায়। সেই বল টোকা মেরে জালে পাঠান জুনাপিউ। জুনাপিউর বিরুদ্ধে ফাউল দেওয়া উচিত ছিল বলে উপস্থিত নিরপেক্ষ দর্শকদেরও অভিমত। কিন্তু তরুণ রেফারি জালালউদ্দিন ফাউল না দেয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে দুবার তেড়ে গিয়ে ধাক্কা মারেন আবাহনীর গোলরক্ষক সোহেল। এ নিয়ে হইচইয়ের পরও অবশ্য খেলা শুরু হয়েছে এবং আবাহনী জিতেছে ৩-১ গোলে।
তবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে লঙ্কাকাণ্ডটা বাধল ম্যাচের পর। রেফারি জালালকে ধাওয়া করে ইটের টুকরা ছুড়ে মারেন আবাহনীর এক সমর্থক। ওটা কুড়িয়ে রেফারি পাল্টা ছুড়েছেন বলে অভিযোগ আবাহনী সমর্থকদের। আবাহনীর একদল উত্তেজিত সমর্থক তাই ঢাকা মহানগরী ফুটবল লিগ কমিটি অফিসের বারান্দা পর্যন্ত ধাওয়া করে রেফারিকে! জালালের রেফারিং ছিল দুর্বল। আবাহনীর ডিফেন্ডার ওয়ালি ফয়সাল মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে মাঠে থেকে হাসপাতালে গেলেও ওই ফাউলের ঘটনায় রেফারি কার্ড দেননি। আবাহনী কোচ আলী আকবর পোরমুসলিমি মাঝখানে এক-দুই দিন রেফারিং নিয়ে প্রশংসা করলেও এদিন আবার অভিযোগ তুলছেন বিস্তর, ‘জুনাপিউর ফাউল না ধরে রেফারি আমাদের বিরুদ্ধে গোল দিয়েছেন। আবাহনী আজ ড্র বা হারলে রেফারি আজ মাঠ থেকেই বেরোতে পারত না!’
এ সময় আবাহনীর কয়েকজন পাঁড় সমর্থক রেফারিকে অশ্রাব্য গালাগাল করছিল। একজনের চিৎকার কানে এল আলাদা করে, ‘আজ দল পয়েন্ট লুস (হারালে) করলে রেফারির মাঠ থেকে কেমনে বাইর অইত দেখতাম। …মাইরাই হালাইতাম ওরে…।’
ম্যাচের সময় ঘটে আরেক কাণ্ড। ড্রেসিংরুমের দিক থেকে রেফারিকে মারতে দৌড়ে মাঠে ছুটে আসেন আবাহনী ক্লাবের এক বেয়ারা। অবস্থা বেগতিক দেখে ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস ওই বেয়ারাকে ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেন মাঠ থেকে। সত্যজিতের অভিযোগ, ‘আমাদের পয়েন্ট কাড়ার জন্য রেফারিরা বিশেষ মিশন নিয়েছেন। নইলে অমন ফাউলেও কেন গোল দেয়া হবে? ব্রাদার্সের বিপক্ষে আমরা পয়েন্ট হারিয়েছি বাজে রেফারিংয়ের কারণে।’
ফরাশগঞ্জের কোচ কামাল বাবু এদিন আবার রেফারির পক্ষে। তাঁর মুখে উল্টো আবাহনীর সমালোচনা, ‘ওরা যে কাণ্ড করেছে, এটা খুবই নিন্দনীয়।’
ম্যাচ শেষের এসব চাপান-উতোরে ঢাকা পড়ে গেছে আসল ব্যাপারটাই। টানা চতুর্থ জয়ে ৮ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে উঠে দাঁড়াল আবাহনী। মুক্তিযোদ্ধা অবশ্য একটা ম্যাচ বেশি খেলেছে। ১৯ দিন পর মাঠে নেমে এদিন আবাহনী জয়টা হাতের নাগালে নিয়ে আসে প্রথমার্ধেই।
ইব্রাহিম যথারীতি প্লে-মেকার। নজর কেড়েছেন রাইটব্যাক নাসির। বার কয়েক ওপরে উঠে আক্রমণ তৈরিতে রেখেছেন বাড়তি ভূমিকা। ম্যাচটিকে মনে রাখবেন আরমান আজিজ। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের ভূমিকা ছেড়ে এখন তিনি আক্রমণেও উঠছেন। কাল ৩৪ মিনিটে আলতো শটে আবাহনীকে এনে দিয়েছেন প্রথম গোল। অনেক দিন পর গোল পেলেন আরমান। লিংকনের পাস থেকে লাকি পল গড়ানো শটে ২-০ করেন বিরতির আগ মুহূর্তে। তারপর দ্বিতীয়ার্ধে গোল-বিতর্কের কিছুক্ষণ পরই পলের সাজিয়ে দেওয়া বল জালে ঠেলে আবাহনীর জয় নিশ্চিত করে ফেলেন বদলি খেলোয়াড় তৌহিদ।