নগরীতে জেব্রা ক্রসিং-সিগন্যাল বাতি-সাইন স্থাপন করার দাবি জানিয়েছে ‘পবা’
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ নগরে প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, মুটিয়ে যাওয়া ও অতিরিক্ত ওজনসহ কান্সার এর ঝুঁকি বাড়ছে। প্রতিদিন তিরিশ মিনিট থেকে এক ঘন্টা হাঁটলে এ সমসত্ম রোগ উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিরোধ করা যায়। নগরীতে হাঁটার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা হলে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটাবে। যা স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় হ্রাস করাসহ যানজট নিয়ন্ত্রণ, যাতায়াত খরচ কমানো এবং দূষণ হ্রাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ৭ এপ্রিল সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষ্যে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) সহ এগারটি সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষ্যে সুস্থতার জন্য নগরে নিরাপদে ও স্বচ্ছন্দে হাঁটার জন্য প্রশসত্ম ফুটপাত, জেব্রা ক্রসিং, পথচারী সহায়ক সিগন্যাল বাতি ও সাইন এর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
কর্মসূচিতে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, ঢাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় গড়ে প্রতিদিন প্রায় একজন পথচারী মারা যান। ঢাকা শহরে হেঁটে অধিকাংশ যাতায়াত হওয়া সত্ত্বেও তাদের নিরাপত্তায় প্রশসত্ম ফুটপাত, জেব্রা ক্রসিং, পথচারী সহায়ক সিগন্যাল বাতি ও সাইন স্থাপনের উদ্যোগ নেই। অথচ ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নের নামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়ালসড়ক) ও মেট্রোরেল এর মত প্রকল্পের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রসত্মাব করা হচ্ছে, যা গুটিকতক ধনী মানুষের যাতায়াত সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে করা হচ্ছে। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে গৃহীত প্রতিটি প্রকল্পে পথচারীর জন্য পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ রাখাসহ পথচারীর জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা প্রয়োজন।
প্রত্যাশার সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ বলেন, নগরে পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, মুটিয়ে যাওয়া ও অতিরিক্ত ওজন ও কান্সার এর মত অসংক্রাম রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। যা প্রতিদিন হেঁটে যাতায়াতের মাধ্যমে অর্ধেকের বেশি ঝূঁকি হ্রাস করা যায়। নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট এর চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা বলেন, ঢাকায় ৭৬ ভাগ যাতায়াত হয় ৫ কি.মি. এর মধ্যে, যার অর্ধেক আবার ২ কি.মি. এর কম। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে এই দূরত্বে হেঁটেই যাতায়াত করা সম্ভব। কিন্তু ফুটপাতে গাড়ি পার্কিং, ময়লা আবর্জনা রাখা ও কনস্ট্রাকশনের জিনিসপত্র থাকায় হাঁাটার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। অবিলম্বে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে এগলি অপসারণ হওয়া প্রয়োজন।
ক্যাম্পেইন ফর ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান রুবেল বলেন, গত পাঁচ মার্চ মাননীয় হাইকোর্ট কর্তৃক জারিকৃত রুল এ ফুটপাতে মোটর বাইক চলাচল ঠেকাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত তা অমান্য হচ্ছে। অবিলম্বে এর বাসত্মবায়নসহ পথচারীদের নিরাপত্তায় বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগ জরুরী। গ্রীণ মাইন্ড সোসাইটির প্রেসিডেন্ট আমির হোসেন বলেন, পথচারীদের জন্য সমতলে রাসত্মা পারাপারের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। কেননা শিশু, নারী, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধি, অসুস্থ এবং মালামাল নিয়ে যারা হেঁটে চলাচল করেন তাদের পক্ষে তিনতলা উচ্চতার ফুটওভার ব্রিজ অতিক্রম করা সম্ভব নয়।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান এর সভাপতিত্বে উক্ত অবস্থান কর্মসূচি পরিচালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর ন্যশনাল এডভোকেসী অফিসার মারুফ রহমান। কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য রাখেন পিস এর মহাসচিব ইফমা হোসেন, বাপা’র সদস্য ড. আব্দুল হাই মজুমদার, ঢাকা সাইক্লিং ক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস্ এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর নির্বাহী মাহবুবুর রহমান, ইনেশিয়েটিভ ফর পিস এর নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান, ইউনাইটেড পিপল ট্রাস্ট এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী হাজারী প্রমূখ।