হিলারি-প্রণব সফরে নতুন মাত্রার প্রত্যাশা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের
কাজী মাহফুজুর রহমান শুভ,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের ঢাকা সফর সন্ত্রাসবাদ দমন, গণতন্ত্র বিকাশ ও ধর্মীয় সহনশীলতায় বাংলাদেশের অর্জনে বেশ স্বীকৃতি পেয়েছে। আর এ সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কে আরো নতুন মাত্রা যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। হিলারি ক্লিনটনের আসন্ন সফর নিয়ে এমন আশাবাদ রয়েছে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের। মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারাও মনে করেন, এ সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে।
দেশের বিশিষ্টজনেরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, বাংলাদেশে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে হঠাৎ তৎপর হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। সরকারের মেয়াদের শেষার্ধে একসঙ্গে মার্কিন পরাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ও ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির মতো দুই ভিআইপির সফরকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে বেশ কৌতূহল। বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রানজিট, টিফাসহ যেসব চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয় দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে, এই সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তারা তা নিষ্পত্তি করতে চায়।
নিরাপত্তার কারণে পুরোপুরি তা প্রকাশ না করা হলেও প্রাথমিকভাবে জানা যায়, আজ ১টায় ঢাকা পৌঁছবেন হিলারি। ঢাকা ছেড়ে যাবেন পরদিন দুপুর ২টায়। দুজনই ঢাকা ছাড়বেন ৬ মে। অবশ্য আগে প্রণব মুখার্জি ৬ তারিখ সকালে ঢাকা এসে সেদিনই বিকালে ফেরত যাওয়ার বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে সর্বশেষ ভারতীয় পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রণব মুখার্জি ৫ মে বিকালে এসে ঢাকায় এক রাত অবস্থান করে পরদিন বিকালে দিল্লি রওয়ানা হবেন।
সরকারের সঙ্গে যেসব দেশের অঙ্গীকার ছিল, সেগুলো বাস্তবায়নে এখনই তৎপর হওয়ার উপযুক্ত সময়। সরকারের শেষ সময়ে এসব দেশ সেই স্বার্থ উদ্ধারে তৎপর হবেথ এটি খুবই স্বাভাবিক। কারণ বর্তমান সরকারের আগামী দিনগুলো খুবই অস্থিরতায় কাটবে, যার লক্ষণ হিসেবে রাজনৈতিক অস্থিরতা ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের বাংলাদেশ সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সুদৃঢ় হবে বলে আশা করছেন ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাদের মতে, এই সফরের মাধ্যমে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক নিয়ে যে সব গুজব আছে তাও দূর হবে। টিফা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে বর্তমান সরকারের গ্রিন সিগন্যালও নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর ভারতের অর্থমন্ত্রীর ঢাকা সফরে গত সেপ্টেম্বরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের সময় দেওয়া যৌথ বিবৃতির বাস্তবায়ন নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
সূত্রের খবর, সমুদ্রে তেল, গ্যাস অনুসন্ধানে মার্কিন কোম্পানিগুলোর আগ্রহ রয়েছে দীর্ঘদিনের। তাই বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তা দিতেই ইতোমধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে তৎপর হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
দুই ভিআইপির সফর সম্পর্কে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, দুই ভিআইপির সফরে অর্থনৈতিক সম্পর্কোন্নয়ন প্রচেষ্টার চেয়ে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশি গুরুত্ব পেতে পারে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের টিফা চুক্তি নিয়েও আগ্রহ আছে। এ ছাড়াও সন্ত্রাসবাদসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কৌশলগত মিত্র হিসেবে দুই দেশের কাজ করার ঘোষণাও আসতে পারে।