সাতক্ষীরা শহর ও কলারোয়ায় ৪ হাজার নছিমন ।। মাসে ৩ লাখ টাকা চাঁদা আদায়!
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ সাতক্ষীরা ও কলারোয়া উপজেলায় পুলিশ ও শহরে ট্রাফিক পুলিশসহ শ্রমীক ইউনিয়ানের নামে ৪ হাজার নছিমন থেকে মাসে ২ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হচেছ। আদায়কৃত এ বিপুল পরিমান টাকা হাত ঘুরে পুলিশের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ ও শ্রমীক ইউনিয়ানের কতিপয় ব্যাক্তি পকেটে পুরছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নছিমন চালক ও মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কলারোয়া উপজেলায় কলারোয়া উপজেলা সদর থেকে সরসকাঠি বাজার,খোরদো বাজার,কাজিরহাটবাজার,চান্দিুড়িয়া দমদম,সোনাবাড়িয়া,গয়ড়া,বুজতলা,রায়টা,বাজার, মাদরা, ভাদিয়ালি, গাড়াখালি, বাটরা ও সাতক্ষীরা-যশোর মহা সড়কসহ ছোট বড় প্রায়২৫টি সড়কে ১৬/১৭’শ’নছিমন চলাচল করে। একইভাবেসদরেরভোমরা,আলীপুর,বকচরা,ফিংড়ি,ব্যাংদাহধুলিহর,কদমতলা,,বৈকারি,সাতক্ষীরা-খুলনা সড়ক,আশাশুনি সড়ক,ভোমরা সড়ক,আবাদেরহাট,মাধপকাঠি,ঝাউডাঙ্গা, রেউইসহ প্রায় ৩০টি সড়কে প্রায় ২১/২২’শ নছিমন চলাচল করে থাকে।
খোঁজনিয়ে জানা যায়, কলারোয়া নছিমন থেকে পুলিশ ও শ্রমীক ইউনিয়ানের নামে প্রকাশ্য চাঁদা আদায় করা হচেছ। চাঁদা না দিলে শুরু হয় নছিমন চালকদের উপর নির্যাতন। বন্ধ করে দেওয়া হয় নছিমন চলাচল।
নছিমন চালকরা জানান, কলরোয়া উপজেলায় নছিমন চলাচলের জন্য ২৫টি সড়ক থানা থেকে ডাক দেওয়া হয়েছে। সবর্চ্চ দরদাতা হিসেবে নছিমন থেকে চাঁদা আদায় করার জন্য নিলাম পেয়েছে হাছান নামের নামে এক চোরাকারাবারি। তাকে মাসে কলারোয়া থানা পুলিশকে দিতে হবে ৬০ হাজার টাকা। এ নিলাম পাওয়ার পর হাছান উপজেলার সকল রাস্তায় চলাচলকৃত নছিমন থেকে চাঁদা আদায় করেছে। চাঁদা আদায় করার জন্য হাছান নিয়োগ দিয়েছে আরো ২/৩জনকে। তাঁরা প্রকাশ্য উপজেলা সদরে পুলিশের নামে চাঁাদা আদায় করছে। মাসের প্রথম সপ্তাহে তাদের কাছ থেকে স্লীব নিতে হয। এ জন্য তাদেরকে দিতে হয় ২০০টাকা। সাতক্ষীরা-যশোর সড়কে চাঁদা আদায় করে থাকে রেজাউল। থানার স্লীব চেক করে সে। স্লীব না থাকলে আটক করা হয় নছিমন।এরপর থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। অনেক নছিমন চালককে মারধোর করা হয় এমন অনেক অভিযোগ রয়েছে। সদর উপজেলার আখড়াখোলা গ্রামের নছিমন চালক আবুল খায়ের, গোবিন্দকাঠি গ্রামের মফিজুল ইসলাম তালতলা গ্রামের আব্দুল আজিজ জানান, পেটের দায়ে নছিমন চালিয়ে থাকি। রাস্তায় চলাচল নিষেধ রয়েছে। চুরি ,ডাকাতি, মাদক ব্যবসা না করে তারা কিছুটা হলেও সৎ পথে উপার্জন করছেন। তারা পেটের দায়ে মারধোর খেয়ে তারা নছিমন চালায়। এ থেকে মাসে পুলিশ বাবাদ ২০০টাকা দিতে তাদের বড় কষ্ট হয়। এ টাকাটা বাঁচলে তাদের মাসে ১০কেজি চাল হয়। তারা ভাড়া নিয়ে অনেক জেলায় গিয়ে তাকে। কোন জেলায় শ্রমীক কিম্বা পুলিশের নামে চাঁদা আদায় করা হয়না। শুধুমাত্র কলারোয়া ও সাতক্ষীরা শহরে পুলিশ চাঁদা আদায় করে থাকে। কলারোয়ায় পুলিশ ছাড়াও শ্রমীক ইউনিয়ানের নামে ১০টাকা করে আদায় করা হয়। উপজেলায় প্রায় ১৬/১৭’শ নছিমন থেকে কলারোয়া থানা ও শ্রমীক ইউনিয়ানের নামে ১ লাথ ৩০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হচেছ।
অপরদিকে সাতক্ষীরা শহরে চারটি স্থানে নছিমন থেকে চাঁদা আদায় করা হয়। শহরের ঢুকতেই বাস টার্রমিনালে লাঠির মাথায় লাল পতাকা দাড়িয়ে থাকে এক ব্যাক্তি । লাল পতাকা দেখিয়ে নছিমন দাঁড় করানো হয়। এরপর এক প্রকার জোর করে নছিমন চালকদের কাছ থেকে ১০/১৫ টাকা আদায় করা হয়। এর কিছুদূর গেলেই খুলনা রোড মোড়। দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের কনেষ্টবল বাঁশি দিয়ে নছিমন থামায়। চলন্ত নছিমনে হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়। হাতে গুজে দেওয়া হয় ১০/১৫টাকা। এ মোড়ে ট্রলি থেকে ২০/৩০ টাকা,বাইরের ট্রাক থেকে ১০০/২০০ টাকা, গরুরর ট্রাক থেকে ১০০/২০০টাকা ও মটরসাইকেল থেকে আদায় করা হয় চাঁদা। এ মোড়ে কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকলে এ দুশ্য অনেকের চোখে পড়বে। এরপর ইটাগাছা শ্রমকি ইউনিয়ানের সামনে গেলেই তাদেরকে দাঁড় করানো হয় । এখানে তাদেরকে দিতে হয় ১০ টাকা। আবার খুলনা রোড ধরে কছিু দূরে আমতলা মোড়ে গেলে নারকেলতলা শ্রমীক ইউনিয়ানের নামে আদায় করা হয় ১০ টাকা। শহরে চারটি পয়েন্ট থেকে ২১/২২’শ নছিমন থেকে মাসে ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা চাঁাদা আদায় করা হচেছ।
অভিযোগ রয়েছে কলারোয়ায় হাছান ও রেজাউলের চাঁদা আদায়ের বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। আদায়কৃত চাঁদার ভাগ যায় উপরের মহলে। শহরে চাঁদায় হয় প্রকাশ্য। কিন্ত বিষয়টি দেখার কেউ নেই। তারা প্য্রকাশ্য বলে ওসির কাছ থেকে মাসে ডাক নিয়েছি। টাকা না দিলে তারা কি পকেট থেকে দেবে।
কলরোয়া থানার ওসি মোল্য মনিরুজ্জামান জানান, তার নামে কোন চাঁদা আদায় কি না তার জানানেই। তবে এ বিষয়টি তিনি দেখবেন।
ট্রাফিক ইন্সেপেক্টর শামসুল আলম জানান, খুলনা রোড মোড়ে চাঁাদা আদায় হয় এমন তথ্য তার জানা নেই। তিনি জানান, আপনারা সব বিষয় নেগেটিভ ভাবে নিয়ে থাকেন। একটু পজেটিভ ভাবে দেখেন। তার অনেক সাংবাদিকের সাথে ভাল সম্পর্ক রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।