বর্তমান সরকার লুটপাটের সরকারঃ ফখরুল
মোক্তার হোসেন,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ তত্ত্বাবোধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল, ইলিয়াস আলীর সন্ধান, সাগর-রুনির ঘাতক গ্রেফতারসহ খালেদা জিয়া ঘোষিত দাবি আগামী ১০ জুনের মধ্যে মেনে না নিলে গণঅভ্যুত্থান ঘটানো হবে বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
১৫ মে (মঙ্গলবার) সকাল ১১ টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে দেয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানান তিনি।
ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ইলিয়াস আলীকে সরকার তার বাহিনী দিয়ে গুম করিয়েছে। ওই ঘটনার সময় প্রত্যক্ষদর্শিরাও সে কথাই বলেছেন। সেখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজনও উপস্থিত ছিল। এ তথ্য বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এসেছে। তাই অবিলম্বে ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া সবার সন্ধান দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি। ‘গুম-হত্যার বিরুদ্ধে’ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে ফখরুল বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্টতায় রাজনৈতিক নেতাদের জরবদস্তি গুম কিংবা নিখোঁজ করে দেয়া হচ্ছে। এভাবে গত সাড়ে তিন বছরে ১২৭ জনকে গুম করা হয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের চেয়ে কম নয়।
তিনি আরও বলেন, সরকারের দুর্নীতির কারণে পদ্মা সেতুর বিনিয়োগ ফিরিয়ে নিয়েছে বিশ্ব ব্যংক। আরও বেশি দুর্নীতি করার জন্য আরও কঠিন শর্তে অন্য দেশ থেকে টাকা আনার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। জণগণ এ লুটপাট ও কঠিন শর্তে ঋণ মেনে নেবে না।
সরকার দেশ চালাতে ব্যর্থ উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, জনগণের দৃষ্টি অন্য দিকে নিতে ও আন্দোলন দমনের জন্য ‘জবরদস্তি অপহরণের’ পথ বেছে নিয়েছে তারা। তাদের এ পদক্ষেপ যুদ্ধাপরাধের চেয়েও কম নয়। ইলিয়াস আলী রাজনীতি করতেন কিন্তু তার ড্রাইভারকে কি কারণে গুম করা হলো? আক্ষেপ করে তিনি বলেন, আমরা কি এই দেশ এই সমাজের জন্য ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম।
সুশীল সমাজের উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, আপনারা এ সব অন্যায়ের প্রতিবাদ করছেন না কেন? আপনারা কি নিজেদের নিরাপদ ভাবছেন? কিন্তু আপনারা নিরাপদ নন। জার্মানিতে বুদ্ধিজীবীরাও ভেবেছিলেন তারা নিরাপদ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের প্রতিও আঘাত এসে ছিল।
ফখরুল আরও বলেন, দেশ থেকে ১০০ জন ব্যবসায়ী তাদের পুঁজি তুলে নিয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার লুটপাটের সরকার। তারা পুঁজিবাজার, ব্যাংকসহ সব সেক্টর থেকে লুটপাট করেছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আমান উল্লাহ আমান বলেন, ২৭ দিনেও ইলিয়াস আলীর সন্ধান দিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। তার সন্ধান চেয়ে আন্দোলনকারীদের জেল ও ৭০ জনের নামে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে সরকার। কারণ তারা মানুষের গ্যাস, বিদ্যুত, পানি, দ্রব্যমূল্যসহ কোনো চাহিদা পূরণ করতে পারেনি। তাই দৃষ্টি অন্যদিকে নেয়ার জন্য এ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে তারা।
আমান আরও বলেন, সাগর-রুনির হত্যকারীরা এ সরকারেরই লোক। তাদের বিরুদ্ধে প্রচারের জন্য প্রতিবেদন তৈরি করায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। না হলে এতদিনে ঘাতকদের গ্রেফতার করা সম্ভব হত। এ ব্যাপারে আন্দোলনরত সাংবাদিকদর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন তিনি।
৯০ এর ছাত্র নেতাদের ব্যানারে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন খায়রুল কবীর খোকন। বিএনপির বর্তমান যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে সাবেক ছাত্র নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, ফজলুল হক মিলন, হাবিবুর রহমান হাবিব, মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, নাজিম উদ্দিন আলম, খোন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুজ্জামান আসাদ, সাইফুদ্দিন মনি, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, শাম্মী আখতার বক্তব্য রাখেন।