নতুন অর্থবছরে চালু হচ্ছে মূল্য সংযোজন কর
সৌরভ চৌধুরী,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে বেশ কিছু পণ্যের ওপর কর বাড়বে। এর মধ্যে টিভি, ফ্রিজ, মোটরসাইকেল, বিড়ি, সিগারেটসহ তামাকজাত পণ্য এবং বিলাসী দ্রব্য রয়েছে। নতুন অর্থবছরে চালু হচ্ছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট আইন। সংশোধিত আকারে বাজেট অধিবেশনে এটা পাস হবে। নতুন আইনের ফলে ভ্যাটে কিছু রদবদল আসতে পারে, যা বাজেটের পর এসআরও (স্ট্যাটিউটোরি রেগুলেটরি অর্ডিন্যান্স) জারি করে প্রয়োগ করা হবে। এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
যেসব পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করা হয় সেইসব পণ্যের মধ্যে মোটরসাইকেল এবং ফ্রিজের ওপর কর বাড়বে। দেশে উৎপাদিত হয় এমন পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে কর বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ধার্যকৃত কর হার মোটরসাইকেল, টিভি এবং রেফ্রিজারেটর সব মিলিয়ে ১৩৬ শতাংশ। নতুন বছরে এটা ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। বিদেশি ফার্নিচার, প্রসাধনী, উপহার সামগ্রীর ওপর গড়ে ১০ শতাংশ কর বাড়ানো হবে। পণ্যভেদে এই কর যুক্ত হবে। এগুলো বিলাসী পণ্য হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। আমদানি করা শুকনা খাবার এবং ফলমূলের ওপর কর বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত বাড়বে না বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। চলতি অর্থবছরে বিড়ি-সিগারেটের ওপর কর ধার্য আছে ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ, এটা ১৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। আয়করের ক্ষেত্রে এবার একটু পরিবর্তন আসবে। কর হারে তেমন পরিবর্তন না এলেও আয়ের সীমা বাড়ানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। চলতি অর্থবছরে আয়ের সীমা রয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এই সীমা ২ লাখে উন্নীত করা হতে পারে।
নতুন অর্থবছরে কর অবকাশ সুবিধা কমিয়ে আনা হচ্ছে প্রায় ১০ বছর। ব্যবসায়ীরা দাবি তুলেছিল নতুন নতুন শিল্প স্থাপনে কর অবকাশ সুবিধা ২০২৫ সাল পর্যন্ত রাখা উচিত। সেই দাবি সরাসরি নাকচ করে দেয়া হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে। সর্বশেষ ২০০৯-১০ অর্থবছরের কর অবকাশবিষয়ক রাজস্ব বোর্ডের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, দুটি পৃথক আইন ও একটি পরিপত্রের আওতায় দেশে কর অবকাশ সুবিধাপ্রাপ্ত মোট ব্যক্তির সংখ্যা ৩ হাজার ৮০৪ জন। এর মধ্যে আয়কর আইনের ৪৫, ৪৬ ও ৪৬-এ ধারার আওতায় ১ হাজার ২৫৪ জনকে কর অবকাশ সুবিধা দেয়ায় রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে ২৮৯ কোটি টাকা। আর পরিপত্রের আওতায় ২ হাজার ৫৫০ ব্যক্তিকে কর অবকাশ দিতে গিয়ে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে ২৫৫ কোটি টাকা। সরকার আর রাজস্ব ক্ষতিতে পড়তে রাজি নয়। এজন্য কর অবকাশ সুবিধা আগামী দুই বছরের মধ্যে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা নিয়েছে। এক বছরেই কর অবকাশ সুবিধা উঠিয়ে না দিয়ে তিন বছরের মধ্যে ধাপে ধাপে এই সুবিধা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। সেই প্রক্রিয়া আসছে নতুন অর্থবছর থেকে শুরু হবে। এছাড়া অনলাইনে আয়কর প্রদান, বড় বড় দোকান, শপিংমল এবং অভিজাত মার্কেটগুলোতে ক্যাশ রেজিস্টার চালুর উদ্যোগ থাকবে নতুন বাজেটে।