আট বছরেও উন্মোচিত হয়নি সাংবাদিক হুমায়ুন কবির বালু’র হত্যা রহস্য…!
শুভাশিস ব্যানার্জি শুভঃ একুশে পদকে ভূষিত খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির বালুর হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত বিচার না হওয়ায় নিহতের পরিবার ও সাংবাদিক সমাজে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হলেও পুলিশ আজ পর্যন্ত হত্যাকারী এবং নেপথ্যের গডফাদারদের চিহ্নিত করতে পারেনি। এরই মধ্যে হত্যা মামলার সব আসামি বিচারে খালাস পেয়েছে। হত্যাকাণ্ডের বিস্ফোরক মামলার অধিকতর তদন্তের কাজ চলছে। শহীদ হুমায়ুন কবির বালু হত্যা মামলা নিয়ে পুলিশের ভূমিকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নিহতের পরিবার। তারা বলছেন, তদন্ত কাজ সঠিক পথে না এগোনোর কারণে হত্যাকারী এবং নেপথ্যের শক্তিরা পার পেয়ে গেছে। ২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিস্ফোরক মামলাটি অধিকতর তদন্তে আসে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবেদনে উল্লেখ করেন, হত্যা মামলার সব আসামি খালাস পেয়েছে। ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিস্ফোরক মামলাটি অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন। অধিকতর তদন্তে আসা বিস্ফোরক মামলাটি তদন্ত করছেন বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার। তিনি এ মামলায় পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির এমএল-জনযুদ্ধের শীর্ষনেতা ইকবাল হোসেন স্বাধীনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ডে নেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, বালু হত্যার ব্যাপারে রিমান্ডে আনা আসামি স্বাধীন হত্যাকারীদের কাছ থেকে এ সম্পর্কে জেনেছে বলে প্রথম দফায় স্বীকার করেছে। তিনি আরও বলেন, আসামি স্বাধীন দুটি মামলায় পৃথকভাবে যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত। যার একটি সাংবাদিক শেখ বেলাল উদ্দিন হত্যা মামলা। উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২৭ জুন আততায়ীদের বোমা হামলায় হুমায়ুন কবির বালু নিহত হন। ২০০৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হয়। রায়ে ৭ আসামি বেকসুর খালাস পায়।
ফ্ল্যাশ ব্যাকঃ ২০০৪ সালের ২৭ জুন। দিনটি ছিল সাংবাদিক বালু পরিবারের জন্য আনন্দের। সাধারণ আর ১০টি দিনের চেয়ে ভিন্নতর। বালুর দ্বিতীয় সন্তান হুসনা মেহরুবা টুম্পা উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে। মাতৃহীন সন্তানরা বালুর খুবই প্রিয়। তাই উচ্ছ্বাসটা তাঁর একটু বেশি। নিজ সন্তানের এই সাফল্যগাথার অংশীদার তিনি তাঁর (বালু) মাকে করাতে চান। তাই মাকে মিষ্টি খাওয়ানোর জন্য ইকবালনগরে যান। বালু তাঁর সন্তানদের নিয়ে থাকতেন খুলনা মহানগরীর শান্তিধাম মোড়ের (সাবেক ইসলামপুর রোড) বাড়িতে। ওই বাড়ির নিচতলা ও দোতলায় দৈনিক ‘জন্মভূমি’ এবং সান্ধ্য দৈনিক ‘রাজপথের দাবি’র কার্যালয়। তৃতীয় তলায় তিনি থাকেন। আর মা থাকতেন তাঁদের পুরনো বাড়ি ইকবালনগরে। বালুর অন্য ভাইরাও ওই বাড়িতে থাকেন। তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে বালু মাকে মিষ্টি খাইয়ে ফেরেন। তখন দুপুর ১২টার কিছু বেশি হবে। অফিস তথা বাড়ির তৃতীয় তলা ভবনের নিচে এসে তাঁর প্রাইভেট কারটি থামে। নেমে যায় মেয়ে টুম্পা ও ছোট ছেলে আশিক। বড় ছেলে আসিফ ও বালু নামেন পরে। বালু সবার পেছনে। তাঁরা গেট দিয়ে বাড়ির ভেতর যাচ্ছেন। গেটের মুখেই বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরণ। বোমাটি সরাসরি বালুর কোমরে আঘাত হানে। বোমার স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন একটু সামনে এগিয়ে থাকা তাঁর বড় ছেলে আসিফ কবির। আসিফ কবির ওই দিনের ওই সময়কার বর্ণনা দিয়ে এক জায়গায় লিখেছেন, ‘কোনো আশঙ্কা বা সন্দেহ ছাড়াই অবসন্ন স্টেশন ওয়াগনটায় চড়ে আমরা বাড়ির সামনে এসে থেমেছিলাম। তখন তাতানো দুপুর। রাস্তায় লোক-গাড়ি-রিকশা ছিল না তেমন। এ সময় হঠাৎ বোমা নিক্ষেপ করা হয় আমাদের বাবা হুমায়ুন কবির বালুর ওপর। আমি তাঁর কিছুটা দূরে ছিলাম। আমি অনুভব করলাম, একটা ঢিলের মতো কিছু এসে আমার পেছনে পায়ের ওপরের অংশে লাগল। পরে বুঝেছিলাম, ওটা ছিল বোমার অংশ।’ বোমার আঘাতে ছয় ফুটেরও বেশি দীর্ঘ বালুর কোমরে ক্ষত তৈরি হয়। মাত্র পাঁচ মাস ১২ দিনের মাথায় খুলনা শহরে আরো একজন পরিচিত সাংবাদিক খুনের শিকার হন। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেসক্লাবের অদূরে দৈনিক সংবাদ ও নিউ এজের সিনিয়র রিপোর্টার এবং বিবিসি বাংলার প্রতিনিধি মানিক সাহা বোমা হামলায় খুন হন। মধুমতির তীরে ইতিহাস-প্রসিদ্ধ সমৃদ্ধ নড়াইলের ইতনা গ্রামে ১৯৪৭ সালের ৪ অক্টোবর মাতুলালয়ে জন্মেছিলেন সাংবাদিক হুমায়ুন কবির বালু। তাঁর বাবার বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার বরফা গ্রামে। বাবা ইমান উদ্দিন সরদার এবং মা রাবেয়া বেগম। বালুরা ছয় ভাই এবং তিন বোন। তিনি ভাইদের মধ্যে দ্বিতীয়। তাঁর বাবা পেশাগত কাজ এবং ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর জন্য চলে আসেন খুলনা শহরে। হুমায়ুন কবির বালু খুলনা শহরের বি কে ইনস্টিটিউশন থেকে মাধ্যমিক, সরকারি আযম খান কমার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি ‘জয় বাংলা’ পত্রিকার সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে ‘সাপ্তাহিক জন্মভূমি’র প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৭৬ সালে খুলনা নগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৩ সালে সাপ্তাহিক জন্মভূমি দৈনিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তিনি এর সম্পাদক ছিলেন। তিনি খুলনা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও তিনবার নির্বাচিত সভাপতি, খুলনা আঞ্চলিক সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, মিড-টাউন রোটারি ক্লাবের সভাপতি, বাংলাদেশ কাউন্সিলর অব এডিটরসের সদস্য, জনসংখ্যা পরিষদের সদস্য, খুলনা আঞ্চলিক সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি, পরিবার পরিকল্পনা সংস্থার সহসভাপতি এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পরিচালক ছিলেন। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য হুমায়ুন কবির বালু ১৯৯২ সালে খুলনা প্রেসক্লাব প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি পদক, ১৯৯৩ সালে সুজলা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী পদক, ১৯৯৪ সালে ডক্টর আশরাফ সিদ্দিকী পদক এবং ১৯৯৭ সালে সুর-ঝঙ্কার সম্মাননা লাভ করেন। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে একুশে পদক-২০০৯ (মরণোত্তর) দেয়া হয়।
অনুসন্ধানঃ আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুস সালাম শিকদার সাংবাদিক বালু হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তিনি সকল আসামীকে বেকসুর খালাস দেন। এছাড়া বিচারক পুলিশের দুর্বল প্রতিবেদন দাখিলের কথাও উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে ২০০৯ সালের ১৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপরে আইনজীবী এনামূল হক বিস্ফোরক মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা দু’টির মধ্যে ব্যাপক গরমিল থাকায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে মামলাটি অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন বলে তিনি আবেদনে উল্লেখ করেন। ২০ এপ্রিল বিচারক মোহাম্মদ সেকান্দার আলী মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। ১০ মে মূখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে শুনানি শেষে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা ৭ জুন মামলার নথি গ্রহণ করেন। অধিকতর তদন্তে আসা সাংবাদিক শহীদ হুমায়ুন কবির বালু হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত বিস্ফোরক অংশের মামলাটি দুই বছর অতিবাহিত হয়েছে। আজও শেষ হয়নি এ মামরার তদন্ত। ইতিপূর্বে খালাস পেয়েছে হত্যা মামলার সকল আসামী। ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে অর্থের যোগানদাতা ও পরিকল্পনাকারীরা। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তা দাবী করছেন যে এবার হত্যা পরিকল্পনাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানো হবে। জানা যায়, হত্যা মামলার খালাস পাওয়া আসামী পূর্ব বাংলা কমিউনিস্টি পার্টির শীর্ষ নেতা ইকবাল হোসেন স্বাধীনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করেছে। সে দুটি মামলায় যাবজ্জীন দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত। এ পর্যন্ত পরিবর্তন হয়েছে ৫ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা। বর্তমানে এ মামলাটি তদন্ত করছেন পুলিশের অপরাধ চিহ্নিত করেন বিভাগ (এম আইজির সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল কাইয়ুম। প্রথম তদন্তের দায়িত্ব পান ইন্সপেক্ট সুভাস বিশ্বাস। পরবর্তীতে দায়িত্ব দেয়া হয় ইন্সপেক্টর মিরাজুল ইসলামকে। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান সিনিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার (সিআইডি) সোমাদ্দার। এ মামলার অপর আসামীরা হল নজরুল ইসলাম ওরফে খোড়া নজরুল জাহিদ হোসেন ওরফে সবুজ, ও মাসুম হোসেন জাহাঙ্গীর। ২০০৮ সালের ১৩ ফেব্র“য়ারী হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুস সালাম শিকদার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তিনি উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপক্ষ, মামলা প্রমান করতে ব্যর্থ হওয়ায় সকল আসামীকে বেকসুর খালাস দেয়া হলো। এছাড়া বিচারক পুলিশের দুর্বল প্রতিবেদনের দাখিলের কথা ও বলেন। এ মামলার খালাস পাওয়া আসামীরা হল, পূর্ব বাংলা কমিউনিষ্ট পার্টি (এম, এল) জনযুদ্ধের প্রধান আব্দুল রশিদ মালিথা ওরফে দাদা তপন। ইকবাল হোসেন ওরফে স্বাধীন। জাহিদুর রহমান ওরপে সবুজ, রিমন, নজরুর ইসলাম ওরফে খোড়া নজু, নাজিম উদ্দিন, মাসুম। ২০০৯ সালের ১৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এনামূল হক বিস্ফোরক মামলটি অধিকতর তদন্তের আবেদন করেন। তিনি আবেদনের উল্লেখ্য করেন, এই মামলাটি দেশব্যাপী আলোচিত একটি মামলা। তাছাড়া হত্যা মামলার সকল আসামী খালাস পেয়েছে। হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামীদের সাথে আসামীদের মধ্যে রয়েছে বেশ গরমিল। আর সে কারণে ন্যায় বিচারের স্বার্থে মামলাটি অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন। আদালতে শুনানী শেষে ২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেয়া হয়। মোহাম্মদ সেকান্দার আলী এ আদেশ দেন। পাশাপাশি মামলার নথি মূখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। মূখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে ২০০৯ সালের ১০ মে শুনানী শেষে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ চিহ্নিত শাখায় (সিআইডিতে) পাঠানো হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০০৯ সালের ৭ জুন মামলার নথি গ্রহণ করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ইতিমধ্যে এ মামলায় অনেকেই চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অনেকের বাড়ীতে হানা দিয়ে পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য ২০০৪ সালের ২৭ জুন দুপুরে নিজ পত্রিকা অফিসের সামনে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম সংগঠক ও সম্পাদক হুমায়ুন কবির বালু নিহত হন। এ ঘটনায় খুলনা থানার (উপপরিদর্শক এস, আই মারুফ আহমেদ বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেন।
বিশেষজ্ঞদের অভিমতঃ গত দুই দশকে প্রায় ৩৮ জন সাংবাদিক নিহত হলেও এর সুষ্ঠু কোনো বিচার না হওয়ায় সাংবাদিকরা নিজেদের নিরাপদ মনে করতে পারছেন না। একটি বেসরকারি সূত্রমতে, স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত শুধু দক্ষিণাঞ্চলেই নিহত হয়েছেন ১২ জন সাংবাদিক। মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর মতে, বাংলাদেশে ২০০২ সালে ২ জন, ২০০৩ সালে ১ জন, ২০০৪-০৫ সালে ৬ জন, ২০০৬ সালে ১৪ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। ‘অধিকার’-এর বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্ট ২০০৯ অনুযায়ী ওই বছর দেশে সাংবাদিক খুন, হামলা, মামলা, নির্যাতনসহ ২৬৬টি ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে খুন হয়েছেন ৩ জন, আহত হয়েছেন ৮৪ জন, গ্রেফতার হয়েছেন একজন। ২০১০ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী সাংবাদিক খুন হয়েছেন ৪ জন, আহত হয়েছেন ১১৮ জন। সব মিলিয়ে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২৩১টি। বিশিষ্ট সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘একের পর এক সাংবাদিক খুন হচ্ছেন। কিন্তু বিচার পাওয়া যাচ্ছে না। যে কয়েকটি মামলার বিচার হয়েছে তা প্রহসনের বিচার।’ তিনি বলেন, দেশে হত্যার বিচার হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। একজন সাংবাদিক হত্যার বিচার বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। সুতরাং সাধারণ মানুষের বিচার পাওয়া সম্ভব কিনা তা প্রশ্নবিদ্ধ। সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদ বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালন কালে বহু সাংবাদিক এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন। কিন্তু একটারও বিচার না হওয়াটাকে আমি সরকারের চরম ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই বলতে পারব না। তথ্য অধিকার আইন পাস হওয়ায় আমি সরকারকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু সেই তথ্য জানানোর দায়িত্বে নিয়োজিত সাংবাদিকদের নিরাপত্তা কোথায়? এ পর্যন্ত সব সাংবাদিক হত্যার ঘটনা একটি প্যাকেজের আওতায় এনে নতুন করে তদন্ত ও বিচারের জন্য আমি সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
শুভাশিস ব্যানার্জি শুভঃ সম্পাদক,এসবিডি নিউজ24 ডট কম।