কেশবপুরে কপোতাক্ষ সংস্কারের লক্ষ লক্ষ টাকা লুটপাটের চেষ্টা
মিজানুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি, এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ কেশবপুর পাউবো কর্মকর্তাগনসহ পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির নের্তৃবৃন্দ খালের দু’পাশ ছেটে ও তলদেশ সামান্য কেটে কপোতাক্ষ সংস্কার প্রকল্পের লক্ষ লক্ষ টাকা লুটপাটের চেষ্টা করায় এলাকাবাসি যশোর জেলা দূর্নীতি দমন কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন। পাউবোর কর্মকর্তাদের লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে অনুমোদন করানো লুটপাটের বির্তকিত প্রকল্প বাস্তবায়ন করে কপোতাক্ষ সমস্যা সমাধান হবে না ভুক্তোভোগি মহল জানান । ১শ’৫০ মিটার চওড়া আর ২০ মিটার গভীর করে ১২৩ কিঃ মিঃ কপোতাক্ষ নদ এক মৌসুমে খনন করলে কপোতাক্ষের সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধান করা সম্ভব। তাছাড়া ভুক্তোভোগি সুশীল সমাজ, পাউবোর কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে গঠিত প্রকল্প বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে কপোতাক্ষের সমস্যা স্থায়ী সমাধান সম্ভব বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।
জানা গেছে, যশোর, সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কপোতাক্ষ নদটি সংস্কারের নামে লুটপাট আর ভূমিদস্যুদের দখল দারিত্বে বর্তমানে সরম্ন খালে পরিনত হয়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতে কপোতাক্ষ নদের উপছে পড়া পানিতে দু’তীরে বিস্তীর্ণ অঞ্চাল দীর্ঘ স্থায়ী জলাবদ্ধতার পরিনত হয়। এ জলাব্ধতার কারণে কৃষক সমাজ বছরের পর বছর ফসল আবাদ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় কপোতাক্ষ নদ সংলগ্ন ঝিকরগাছা, চৌগাছা, মনিরামপুর, কেশবপুর, কলারোয়া, তালা, পাইকগাছা উপজেলার ২৫/৩০ লাখ মানুষ গত এক যুগ ধরে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ফলে বর্তমান সরকার ২শত ৬২ কোটি ব্যয়ে ২০১১-২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৪ বছর মেয়াদি ‘কপোতাক্ষ সংস্কার প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহন করেছে। এ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে কপোতাক্ষ খনন, টি আর এম, কপোতাক্ষের সাথে সংযোগ থাকা খাল খনন, ভেঁড়ী বাঁধ নির্মান। কপোতাক্ষ সংস্কার প্রকল্পের আওয়াতায় যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলায় প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মেহেরপুর খালের আড়াই কিঃমিঃ ও মির্জাপুর খালের আড়াই কিঃমিঃ খনন করা হয়েছে। এ মেহেরপুর ও মির্জাপুর খাল খননে মহা অনিয়ম দূনীতির অভিযোগ উঠেছে। বর্ষা মৌসুমের শুরুতে খালের দু’পাশ ছেটে ও তলানি অপসারন করে মির্জাপুর খাল সংস্কার সম্পন্ন করেছে পানি ব্যবস্থাপনা সমিতি। পানি উন্নয়ন বোর্ড কপোতাক্ষ সংস্কার প্রকল্পের প্রায় ২৯ লক্ষ টাকা আড়াই কিঃমিঃ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ঠ মেহেরপুর খাল খননে বরাদ্ধ করেছে। পানি ব্যবস্থাপনা সমিতি চলতি বছরের ২২ মে থেকে শুরু করে মাত্র ১৪/১৫ দিনের মধ্যে মেহেরপুর খালের দু’পাশ ছেটে ও তলদেশের কিছু জায়গায় কুদাল দিয়ে ২/১ কোপ কেটে মাত্র ৫/৬ লক্ষ টাকার মধ্যে খনন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে। তাছাড়া এক প্রভাবশালী ব্যক্তি মেহেরপুর খাল দখল করে গত ৩ বছর ধরে মাছ চাষ করে আসছে । প্রভাবশালি এ ঘের ব্যবসায়ীর মৎস্য চাষের সুবিধার্থে মেহেরপুর খাল খনন প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে বলে এলাকাবাসির অভিযোগ। ফলে সংশিষ্ট এলাকাবাসি মেহেরপুর খাল খনন প্রকল্পকে সম্পুর্ন অপ্রোয়োজনীয় ও লুটপাটের প্রকল্প আখ্যা দিয়ে ২১ জুন যশোর জেলা দূর্নীতি দমন কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করেছেন। বাঁশবাড়িয়া গ্রামের জালাল গাজী বলেন, মেহেরপুর খাল গভীর থাকায় তা খনন করা সম্পুর্ন অপ্রোয়োজনীয় উলেস্নখ করে বলেন, পাউবো কর্মকর্তারা টাকা লুটপাটের উদ্দেশ্যে মেহেরপুর খাল খননের প্রকল্প গ্রহন করেছে। তিনি আরো বলেন, খনন কাজের দায়িত্ব প্রাপ্ত পানি ব্যবস্থাপনা সমিতি খালের দু’পাশ ছেটে ও তলদেশে কুদাল দিয়ে সামান্য কেটে খনন সম্পন্ন করেছে। বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মিজানুর গাজী বলেন, মেহেরপুর খাল কপোতাক্ষ নদের চেয়ে গভীর হওয়ায় পানি নিষ্কাশনে কোন সমস্যা না থাকার পরও পাউবো কর্মকর্তারা লক্ষ লক্ষ টাকা লুটপাট করার জন্য এ খাল খনন প্রকল্প গ্রহন করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বির্তকিত প্রকল্প বার বার অনুমোদন পাওয়ায় পাউবোর কর্তৃপক্ষ তাদের প্রকল্প লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তা অনুমোদন করান বলে জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক গৃহীত বির্তকিত প্রকল্প কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করার পরও কপোতাক্ষ সমস্যা দিন দিন আরো প্রকট আকার ধারন করেছে। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃক গৃহীত এ লুটপাটের প্রকল্প বাস্তবায়ন করে কপোতাক্ষ সমস্যা সমাধান হবে না বলে কপোতাক্ষ পাড়ের ভুক্তোভোগি জনগন জানান। ভুক্তোভোগি সুশীল সমাজ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে গঠিত প্রকল্প বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে কপোতাক্ষের সমস্যা স্থায়ী সমাধান সম্ভব বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন । ভুক্তোভোগি সুশীল সমাজ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে ১শ’৫০ মিটার চওড়া আর ২০ মিটার গভীর করে ১২৩ কিঃ মিঃ কপোতাক্ষ নদ এক মৌসুমে খনন করার মাধ্যমে কপোতাক্ষের সমস্যা সমাধান করার জন্য কপোতাক্ষ পাড়ের ভুক্তভোগি জনগন প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেশবপুরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল মোতালেব বলেন, কপোতাক্ষ সংস্কার প্রকল্পের আওয়াতায় কেশবপুর উপজেলায় আড়াই কিঃমি করে মেহেরপুর ও মির্জাপুর খাল খনন প্রকল্প পানি ব্যবস্থাপনা সমিতি বাস্তবায়ন করছে। অনিয়ম দুনীতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রকৌশলী আব্দুল মোতালেব বলেন, খনন কাজ পর্যালোচনা করে অর্থ ছাড় দেওয়া হবে।