ডিসি ও ডাক্তাররা ভেতরে মিটিংয়ে ব্যস্তঃ সাতক্ষীরায় চিকিৎসা নিতে আসা বহু রোগী হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতর!
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ নানান রোগ যন্ত্রনায় দুগ্ধপোষা শিশু গুলো ছটফট করছিল। রমজানের দিনে ভরদুপুরে তাদের অভিভাবকদেরও কষ্টের সীমা ছিল না । বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা ২৫ থেকে ৩০ জন শিশুর টানা দুই ঘন্টার এই যন্ত্রনা ছিল হৃদয়বিদারক ।
অভিভাবকরা অভিযোগ করে বললেন তাদেরকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ড. মুহা. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার তার পরিষদের সদস্যদের নিয়ে মিটিং করছেন । এখন টু শব্দও করা যাবেনা। কমিটির সেক্রেটারি কবীর আহমেদের কক্ষে অনুষ্ঠিত মিটিং চলাকালে দরজাও বন্ধ ছিল ।
কালিগঞ্জের মৌতলার অভিভাবক হযরত আলি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন তিনদিন চিকিৎসা দিয়েও তার দুইমাস বয়সী শিশু আবদুর রহমানের কোন উন্নতি না হওয়ায় শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারদের রেফারেন্সে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত সন্তানকে শিশু হাসপাতালে এনেছেন । তাকে ভর্তি করাতে পারলেও ডাক্তার পাচ্ছেন না তিনি । ডাক্তাররা সবাই জেলা প্রশাসকের মিটিংয়ে যোগ দিয়েছেন । একই অভিযোগ করেন কালিগঞ্জের বিষ্ণুপুরের ইসহাক আলি । তার দেড়মাস বয়সী শিশু জেসমিনকে নিয়ে একই বিপদে পড়ে থাকেন তিনি । সদর উপজেলার বৈকারী গ্রামের চারমাসবয়সী শিশু রোগী শেফালিকে নিয়ে তার অভিভাবকরা ডাক্তার না পেয়ে কাঁদতে থাকেন । ডায়রিয়া , নিউমোনিয়া , প্রসবকালে ব্রেনে আঘাতজনিত নানা রোগ যন্ত্রনা নিয়ে সবগুলি শিশুই কাতরাচ্ছিল ।
এ প্রসঙ্গে শিশু হাসপাতালের এক কর্মচারি বলেন আমরা খুব খুশী । আজ ডিসি স্যার ‘আমাদের বেতন বৃদ্ধি করেছেন ’। এসব নিয়েই ছিল মিটিং । অভিভাবকরা বলেন টানা দুই ঘন্টা পর মিটিং থেকে হাসিমুখে ডাক্তাররা বেরিয়ে এলেও তাদের সেবা পাওয়া যাচ্ছিল না । ডাক্তার মিললেও পাওয়া যচ্ছিল না কর্মচারিদের । কর্মচারি পেলেও ডাক্তার খুজে পাওয় যাচ্ছিল না । এ অবস্থায় নানান যন্ত্রনায় কাটে দুরাগত রোগগ্রস্থ শিশু ও তাদের অভিভাবকদের । ৯০ এর দশকে সাতক্ষীরার কীর্তিমান ব্যক্তি দেশ জোড়া খ্যাতিসম্পন্ন জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম্ আর খান নিজ উদ্যোগে ও অর্থায়নে প্রতিষ্ঠা করেন শিশু হাসপাতালটি ।
সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ডা. শামসুর রহমান বলেন জেলা প্রশাসক মিটিং করেছেন দেড়ঘন্টারও কিছু বেশি সময় ধরে । তিনি জানান সাধারনতঃ ওই মিটিং হয় সন্ধ্যায় । কিন্তু রোজার কারনে তা বেলা ১১ অনুষ্ঠিত হয় । রোগীদের ভোগান্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন মিটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে ডাক্তাররা এসে চিকিৎসা দেন।