জঙ্গির সংজ্ঞা কি চেঞ্জ হলো?
সৈয়দ সাইফুল আলম শোভনঃ ক’দিন আগে দেখলাম একদল যুবক প্রেসক্লাব এলাকায় মিছিল করছে। আকাশ কাপানো মিছিল, পুরো এলাকায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ক্ষনিকের জন্য। প্রেসক্লাবের গেইটে পুলিশ দাড়িয়ে আছে, শুধুমাত্র কয়েকজন সাংবাদিকের ক্যামেরা সচল হলো।
অনেক দেরিতে পুলিশ সচল হল, ততক্ষনে মিছিল এগিয়ে গেছে সচিবালয়ের গেইট পর্যন্ত। আমরা কয়েকজন আড্ডা দিচ্ছিলাম প্রেসক্লাব চত্বরে| গুটিকয়েক মানুষের শ্লোগানে শ্লোগানে পুরো এলাকা অন্য রকম পরিবেশ তৈরি হয়ে গেল “মুক্তির এক নাম খিলাফত-খিলাফত”। পুলিশ স্বাস্থ্যবান এক যুবকে ধরে আনলো।
একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম ওদের ধরল কেন? এরা কারা? উত্তর ওরা জঙ্গি।
আমরা কয়েকজন আলোচনা করছি ব্যানার,টুপি,দাড়ি ছাড়া জঙ্গিদের মিছিল? জঙ্গির সংজ্ঞা কি চেঞ্জ হলো? পুলিশ, বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আড়াল করে, জঙ্গি মিছিলটা এতদূরে-ই বা আসলো কিভাবে? একজন বলে উঠল কেন “ঈমানী জোরে?”
আসার সময় শুনছি বাস কাউন্টারের ছেলেটা বলছে “মুক্তির এক নাম খিলাফত-খিলাফত” আমি ভাবছি এই ছেলেটা বলছে কিসের জোরে?
শুধুমাত্র ঈমানী জোর,ঈমানী জোরে ওরা যা করতে পেরেছে, তার হিসাব নিকাশের গোয়ন্দা রিপোর্ট হয়তো দেখা যাবে পত্রিকার পাতায়। আমি শুধু ভাবছিলাম আমাদের যা শেখানো হল এতদিন কিংবা আমার মত যারা এতদিন ভাবতাম জঙ্গি মানে দাড়ি,টুপি, পাঞ্জাবিওয়ালা আর ক্লিন সেভ,জিন্সের প্যান্ট পড়ে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াতাম । তাদের জন্য নিশ্চয় ভাল খবর এটা নয়। জঙ্গি সংজ্ঞার ব্যাপক পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে । দাড়ি,টুপি ছাড়া প্যান্ট-শার্ট পড়া মানুষও এখন ধীরে ধীরে জঙ্গীর তালিকা ভুক্ত হয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ জানেন আর কোথায় গিয়া জঙ্গীর সংজ্ঞা দাড়াবে!
তবে আমার ঈমানী জোর কম কিংবা ঈমানের জোর না থাকায়, শুধুমাত্র নিজের নিরাপদ থাকার স্বার্থে আমি তো আগেই দাড়ি,টুপি ওয়ালাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করছি। এখন যদি প্যান্ট,শার্ট পড়া মানুষগুলা জঙ্গি হইয়া যায় তাহলে কি করবো?
সামনে রাস্তা একটাই ধারাবাহিক ভাবে বর্জন করা দাড়ি,টুপির পর এইবার প্যান্ট,শার্ট পরাদের বর্জন করতে হবে। কারণ আমি নিরাপত্তা নিয়া ব্যাপক সচেতন। ঈমানের জোর না থাকলেও আমার সচেতনতার জোর অনেক। এই সচেতনতার জোরে যাকে-ই জঙ্গি বলে সন্দেহ হবে কিংবা জঙ্গির সংজ্ঞায় পড়বে তাকেই ত্যাগ করতে হবে। হোক সে আমার দাড়িওয়ালা বাপ, দাদা,চাচা কিংবা মক্তবের ৮০ বছরের আজাহার হুজুর…
সৈয়দ সাইফুল আলম শোভনঃ মানবাধিকারকর্মী।