পদ্যময় অংক…
জাহিদা ঊর্মিঃ কইলেই কি আর প্রেম হয়? এতো সোজা না। প্রেমর লাইগা কত কিছু করন লাগে। আমার কি আছে যে বেডারা আমারে দেইখা গইলা পরব? আউলা ঝাউলা চিন্তা করলেই চলবো ক্যান? নিজের সাথেই কথা বলে সুইটি। ছোট্ট একটা চাকরি করে গার্মেন্টস এ। প্রতিদিন সকাল ৫ টায় উঠে রান্না করে বাপের জন্য রেখে নিজে টিফিন নিয়ে যায়। জগলু ওর সাথেই যাওয়া আসা করে। প্রেম প্রস্তাবও দিয়েছে। সুইটির জগলুকে একদম ভাল লাগে না। জগলুর কি নাই, সবি আছে । নিজের টিনের চালের ঘর, বাড়িতে দুই বোন আরও দুইটা ছোট ভাই বাপ মা সব। বাপ রিকশা চালায়,মা বাসা বারিতে কাজ করে। এক ভাই হোটেলে চাকরি করে। জগলু রানির মতো রাখবে সুইটিকে বলে প্রতিজ্ঞা করেছে।
জগলু কে বর্ণনা করা যায় এমন ভাবে লম্বা ৫।৫ গায়ের রঙ আম সত্তের এর মতো।
পান খায় বলে দাত গুলর রঙ বেশ অপক্ত খয়েরি।
সুইটি, শুধু গরিব মাতাল বাবার মেয়ে বলে ভুল করে ফেলেছে সৃষ্টিকর্তা। সুইটি আসলে বড়লোক মাতাল বাবার মেয়ে হবার যোগ্য। রোজ রাতে ঘুমাবার আগে বাপের সাথে সুইটি একি প্যাঁচাল পারে। ঘুমাবার আগে নিয়ম করে গান শুনে সুইটি। অনেক স্বপ্ন চোখে ।হয়ত কেউ আসবে একদিন। আর নিয়ে যাবে সুইটি কে তার যোগ্য জায়গায়। কিন্তু বাস্তব এর চড় প্রতিদিন সুইটি কে রক্তাক্ত করে। মাতাল বাপের মদের পয়শা ,সংসার সব তার উপর।
জগলু বলল তরে ত আইজ ফাটাফাটি লাগতাছে।তুই কিন্তু খুব সুন্দর হইতাছিস দিন দিন।
সুইটি উত্তর দিল হ্ তোর চোখে সুন্দর বুঝে এইডাই একটা ভালা জিনিস তোর জগলু।আয়নায় নিজের সুরত টা দেখ না কেন সোনা?
আমারে সুন্দর লাগলে তোর কি এমন উপকারে আমু? তুমি সময় নষ্ট কইরা কিছুই পাইবা না। এই সুইটি তোমার কোন জন্মেও হইব না।
জগলু কেঁচো হয়ে যায় সুইটি র চাঁছা ছিলা কথায়। তাও নিজেকে সামলায় নিয়ে বলে ,তোর লাইগা সময় ক্য জীবনটাও দিতে পারুম। আহারে যে না আমার জীবন হের আবার বড়াই। তোর জীবন লইয়া তুই থাক।বেশি কামড়াইলে বিয়া কর একটা। কইরা তর যত প্রেম আছে কর আর জীবন দান কর। আমার লগে প্যাচ প্যাচ কম কর। তোর প্রেম ধুইয়া আমি কি পানি খামু? নাকি তোর প্রেম চুইয়া চাঁদনি পরে আর হেই চাঁদনির জসনায় গসুল দিমু। কোনডা? চল এবার কারখানায় ঢুইকা পরি কাম শুরু করি।আইজ ওভার টাইম করুম না। তুই করলে করতে পারিস। আমার পিছে তোর আইতে হইব না। কয় দিন ধইরাই কামন শুরু করছে মালিক পক্ষরা ।মেজাজ টা এত খিচায় মনে কয় ছাইরা দিমু কাম।আবার ভাবি ,যে ভেদাইম্মা বাপ চাকরি ছাড়লে খামু কি? জগলু বলে, এর লাগাই কই। তরে চল বিয়া করি। তরে আমি কাম করতে দিমু না। রানির মতো ঘরে থাকবি আর সংসার করবি। অরে আমার পিতলা ,ঘড়ে বসাইয়া রাকবা আর কয়ডা চাকর রাখবা আমার লাইগা ? ঘরের কাম কি তোমার আম্মায় করব? ঝাঁটা দিয়া বাইর কইরা দিব। আর বিয়ার ১ মাসের মধ্যে তোমার প্রেম হইব কলার ছিলকার মতো। কলা খইয়া ফেলায় রাকবা। মাছি আইসা ভন ভন করবো। জগলু বলল তোর পিছে আজ কাল দেখি মাস্টারের পোলা খুব লাইন মারে। আর তুই অ তো খুব মজা নিস। কেমন ভদ্দ লোকের মত কইরা কথা কস। সুইটি খ্যাঁক কইরা উঠে ।কে? তুই কি দেখস না আমি কারখান্য আইলেও সবার লগে ভদ্দ ভাষায় কথা কই। তোর মতো জগলুর লগে কি ভদ্দ ভাষায় কথা কমু ? নাকি আমার মাতাল ভেদাইম্মা বাপের লগে? ফুটানি মারনের আগে নিজেরে দেইখা লইও। ৫ পাশ দিয়া কি বুজবা তুমি ভদ্দ ভাষা? ইসস! তুই যেন কত পাসস দিছিস? জগলু রেগে গিয়ে বলে। শোন জগলু আমি তোর থেইকা ২ ক্লাস বেশি পাসস দিছি।আর আমি জার লগে কথা কই হেয় ত শিক্ষিত মানুষ। অর সাথে ভদ্দ ভাবেই কথা কইতে হয়। যা তুই। তোর বুঝনের কাম নাই। টিফিন না আনলে আমার থেইকা খাইয়া জাস।
সুইটি স্বপ্ন দেখে। স্বপ্ন গুলো ঝরেও পরে। বাস্তবের কুড়াল এক কোপ মাটির মত, তার মন থেকে স্বপ্ন গুলো কে বিছেদ করে দেয়। সুইটি ঘরে ফিরার সময় একা একা ভাবতে থাকে অনেক কথা। রাতে যে স্বপ্ন চোখে নিয়ে ঘুমায় সকালে কেন সেই স্বপ্নের চিত্র আলাদা হয়ে যায়? যদি এমন হতে স্বপ্নের রাত কোন দিন শেষ না হতো।। পাশে থেকে কে যেন ডাকল। সুইটি ঘুরে দেখল সুজন।কিছুটা এগিয়ে এসে সুজন জিজ্ঞাসা করলো, ক্যামন আছো সুইটি? উত্তর না দিয়ে সোজাসজি সুজনের চোখের দিকে তাকাল সুইটি ।তার পর বলল ,আপনি শিক্ষিত মানুষ রাস্তা ঘাটে আমার মতো গার্মেন্টস এ চাকরি করা , এমন মেয়েছেলের সাথে কথা বললে আপনার সমাজ তো ভাল কিছু বলব না। সুজন হাসে ।হেসে বলে আমি সুইটি র সাথে কথা বলছি। সে কি করে তার সাথে না। আপনি কি চান আমার বদনাম হোক? আমি গরিব অশিক্ষিত ছোট ঘরের মেয়ে। আপনি আমার থেকে জা চান সেইডা ত সম্ভাব না। তাইলে বার বার কেন সামনে আসেন? দেখেন সুজন ।গরিব মানুষ কে সহজে স্বপ্ন দেখান যায় ।কিন্তু আমি সুইটি স্বপ্ন দেখি না। স্বপ্ন গুলো গরিবের জন্য গরম ধোঁয়া উঠা ভাত থাকে না। আগের রাইতের পানি ঢালা পান্তাই হয়। আমি আপনাকে ভালবাসি না। সুজন ঝট করে সুইটি র হাত টা ধরে ফেলে। বলে, দয়া করে বাকি সবার সাথে আমাকে তুলনা কর না।আমি তোমার বাবার কাচ্ছে যাব ।সুইটি বলে আমার বাবার কাছে গেলে, অভুক্ত পশুর মতো রাজি হবে আমার বাবা এই সম্পরকে। সেটা অজানা আপনারও না, আমার না। কিন্তু তুমি কি তোমার বাবা মা কে বলেছ? সুজন চোখ টা নামিয়ে ফেলে। সুইটি হাত টা ঝটকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেয়। তারপর বলে, বলছিলাম গরিব রে, সহজে স্বপ্ন দেখানো যায়। কিন্তু সুজন আমি গরিব হইতে পারি। কিন্তু গরিবানা আমার মধ্যে নাই।নিজের মনের সাথে আমি বড়লোকের মতই চলি।.যাও যাইয়া নিজের বাড়িতে আগে কথা কয়। তারপর আসবা সুজন, আমার কাছে প্রেম নিবেদন করতে।সুজন মনটা খারাপ করে চলে যায় ।হাঁটতে থাকে মাথা নিচু করে।লজ্জায় অপমানে মাথা টা যেন উঁচা হচ্ছে না কিছুতেই। সুজন জানে বাড়িতে কেউ রাজি ত দুরের কথা, তাণ্ডব কাণ্ড বাঁধাবে। অযথা বেচারা সুইটি দের বদনাম হবে। সবাই বলবে সুইটি ফাঁসানোর চেষ্টা করছে সুজন কে। এক রাশ অপারাগতা নিয়ে সুজন হাঁটছিল। প্রকৃতি যেন নিরব দর্শক। কেবলি বিজ্ঞের হাসি হেসে চলছে। সেটাও শব্দ হীন নিরব। কেবল বি এ প্রথম বর্ষে র ছাত্র। জিবনের কোন অঙ্ক মিলাতে পারছে না। সুইটি তো ভেগে বিয়ে করবে না।আর ভেগে যদি বিয়ে করেঅ। তখন কি করবে? সুজন তাও একবার বাস্তবতা কে অস্বীকার করেই অভিমানি হয়ে উঠে। সুইটি এমন ভাবে না বললেই পারত।
জীবনটা কখন কখন অনেক বেশি কঠিন হয়ে যায় মানুষের কাছে। সুইটি বাড়ি ফিরে। দেখে তার বাবা ঘর ভাসায় রাকছে বমি করে।আর সেই বমির মধ্যেই শুয়ে আছে। সুইটি রাগ হবে কি ,আজ তার বাপ কে দেখে মায়া হল। তাও একটু নকল শাসন করল ।বলল বুড়া ধেংরা হইছ। তাও তোমার আক্কল হয় না? কি মনে করছ? জোয়ান বেটি কামাই খাওইব। আর তুমি মদ গিলা পাড় হইয়া পইড়া থাকবা? বাপ টা ক্যামন নেতায় গেছে ।কিছু কইল না শুধু কইল আইজ কিছু তেমন বেশি খাই নাই রে মা। হ এমনি বমি কইরা ভাসাইছ। খাবার কিছু খাইছ? না রে মা শরিল ডা ভালা লাগতাছে না। বাপকে ধরে চকিতে শোয়াই দিল। তার পর বক বক করতে করতে বমি ছাপ করতে শুরু করল। কামাই নাই, কাজ নাই খালি কাম বাড়াইব। যেদিন জামু গিয়া সেদিন বুজবা ঠেলা টা। কতো ধানে কই ডা চাইল বের হয়। কি হইল বুড়ার আইজ কোন জবাব দেয় না কেন? সুইটি ঘর মুছে কাপড়টা বাইরে রেখে এসে বাপের সামনে দাঁড়ালো, কিছু কঠিন কথা বলবে বলে। দেখল ঘুমায় গেছে।থাইক ,আজ আর কইয়া কাম নাই । বারান্দায় বসে সুজনের কথা ভাবতে শুরু করল। পোলা ডা ভালা ।মনের ভিতর জানি কামন লাগে ওরে চিন্তা করলে ।।বেসামাল হয়ে যায় রক্তের চাপ।সামনে দেখলে মনে হয় সুজন আমার বুকের দরফরানি শুনতে পাচ্ছে। তাতে কি? আমি জানি কিসের লগে কিসের মিলাই। ধুর! যত ফাউল চিন্তা কইরা কাম নাই। সুইটি গো স্বপ্ন পান্তাভাতই থাকবো। কিছুক্ষণ পর সুইটি ঘরে ফিরে দেখল বাপ টা কামন পাথর হইয়া শুইয়া আচ্ছে। হইল কি বুড়াডার? কাছে গিয়ে একটা ধাক্কা দিল। মনে হোল জেন ধাক্কা টা নিজের গায়েই ফেরত আসল। সুইটি কিছু বোঝার চেষ্টায়, আবার বাপের নাকে গলায় হাত রাখল। একি বুড়া দেখি নিঃশ্বাস আটকায় নিশ্ছিন্তায় ঘুমাচ্ছে।বাপরে !!! একটা চিৎকার করে, দড়ায় গেল পাসের সালেহা খালার কাছে।খালা,অ খালা আমার বাপে কথা কয় না।কি ঘুম দিছে গো ।আইসা দেইখা যাও। সালেহা খালা সুইটি র সাথে ঘরে আইসা দেখল সুইটি র বাপ টা মইরা গেছে। সুইটি দরজায় বসে চিৎকার করে বিলাপ করতে থাকল। তোর এত কেন জ্বালা? তুই কি আমার কিছুই থাকতে দিবি না? মাতাল বাপ টারেও লইয়া গেলি? তুই আর কি কি নিবি এইবার আগেই কইয়া ফেলা। সালেহা পাড়া প্রতিবেশী যোগার করে দাফনের বাবস্তা করল।জগলু সব তদারকি করল। যেন সব দায়িত্ব জগলুর। সুইটি দরজায় বসেই থাকলো।কেউ তাকে নড়াতে পারল না।বাপের শেষ চেহারা টাও দেখল না।রাত বারতে থাকল। সালেহা বলল ,অনেক রাইত হইছে সুইটি ঘরে যা। কিছু খাইয়া ল। সুইটি যেন অসাড় হয়ে পরেছে। সালেহা সুইটি কে ধরে ঘরে আনল। চকিতে বসায় ভাত দিল সামনে ।সুইটি ভাতের থালা ঠেলা দিয়ে সরাও বলল, খালা জাও তুমি অনেক রাইত হইছে।আমি খামু না। পেটে খিধা নাই। সালেহা বলল আজ রাইত টা তর লগেই থাকুম তুই জোয়ান মাইয়া মরার ঘরে একলা থাকবি ক্যামনে? সুইটি বিদ্রুপের হাসি দিয়ে বলল, অ রে আমার লক্ষি খালা। তুমি না হয় আজ রাইত টা থাকবা। তারপর আমি কার লগে থাকুম? কই কি,যার কপালে যা ,তা তুমি মিটাবে ক্যামনে? আমার রে আমার উপর ছইরা দাও খালা।
পোড়া কপাল হইলেই কইতাম পোড়া কপাল। আমার ত হালার কপালি নাই কা। সালেহা তাও সেই রাত টা জোর করে থাকল সুইটি র সাথে।পরের দিন ভোর বেলা জগলু আসল ।বলল ,তর আইজ কারখানা জাওনের কাম নাই ।তুই ঘরেই থাক আমি মানেজার রে কইয়া দিমু নে। সুইটি কোন কথা বলল না ।কাথা মুরি দিয়ে শুয়ে থাকল। এর মাঝেই সালেহা একবার আসে দেখে গেছে ।সুইটি কোন কথা বলে নাই। জগলু বিকালেই চলে আসল।বলল, তোর শরিল ডা খারাপ করতাছস কেন? কিছু খাইয়া ল। আইবার সুইটি চকিতে উঠে বসলো।
তারপর জগলুর দিকে তাকায় বলল, তোর বাথা ডা কোন জায়গায় রে জগলু ? আমার শরিলের মাংশ কম হইয়া যাইব? তোমার মজা কইমা যাইব? আমার পাঁটে খিধা না লাগলে আমি কি করমু? তুই যা। ওত পিরিত দেখানো লাগব না। আমি কাইল থাইকা ফ্যাক্টরি যামু। ওই বুড়া মইরা, আমার লাইগা জিবনের প্রথম কিছু কইরা গেছে। আমি এখন যা মনে চায় তাই করুম। আমার মনের মধ্যে আর কোন বান্দ নাই রে জগলু।তুই যা।জগলু দাড়ায় থাকল। কি কিছু কইবি? হ তুই কি করবি এখন? শোন জগলু আমি তরে আখন কিছুই কইবার পারুম না। তুই আইজ যা গিয়া কাইল কথা কমুনে। সকালে সুইটি দেরি করে বের হয়। জগলু আগেই চলে যায়।
সুইটি রাস্তায় বের হবার আগে মনে মনে ভাবতে থাকে, আজ যেন সুজনের সাথে দেখা হয়। বাপ টা মইরা গেল। সুজন ত নিশ্চিত যানে। তাও একবার আসে নাই। আবার নিজেই ভাবে, সুজন আইত কি কইরা? আর না আইসা ভালাই করছে ।লোকে কত কথা কইত। সত্যি সুজনের সাথে দেখা হইয়া গেল। সুইটি বলল আপনার সাথে কিছু কথা কবার ছিল। সুজন বলল আমার মোটর সাইকেলে উঠো। সুইটি উঠে পরল।
চন্দ্রিমা উদ্যানে গিয়ে বসল দুইজন। সুজন বলল চল আমরা কাজী অফিস গিয়ে বিয়ে করে ফেলি। সুইটি বলল সেইটা করতে সময় লাগবে না।তার আগে আপনি বলেন বিয়ার পর আপনি কি করবেন? আমি কি করব? সংসার চলবো কি করে? আপনার পরিবার ত আপনার সাথে সম্পর্ক রাখবে না। সুজন বলল, আমি কোন চাকরি খুজে নিবো। তার আগে বিয়া করা ঠিক হবে না সুজন।আগে চাকরি দেখেন। তবে আমার হাতে সময় বেশি নাই।কেন তুমি কি কোথায় যাবে? সুজন জিজ্ঞাসা করল।না একলা ১৮ বছরের মাইয়া ঘরে থাকতে পারে না। ঘরের আসে পাসে পিপাসি মানুষের, আনা গোনা বারে সেটা ত বুঝেন? হা বুঝি ।বলেই ত বলছি চল আগে বিয়ে টা করে ফেলি। সুইটি জিজ্ঞাসা করে কোথায় থাকবেন বিয়ের পর? একটা বন্ধু কে বলে রেখেছি প্রথমে ওদের গ্রামের বাড়িতে তারপর চাকরি হলে শহরে।
সুইটি র প্রস্তাব টা খারাপ লাগে না ।
লোভ হয় ভালবাসার মানুষটাকে বিশাস করতে।ঘর বাধতে। সুইটি রাজী হয়ে যায় ।পরের দিন সকাল ১১ টায় বিয়ে করবে বলে ঠিক হয়। তারপর দুইজন বসে অনেক কথা বলে। সারা দিন শুধু বাদাম র চা খেয়ে দিন কাটায় দেয় দুইজন। সন্ধায় বাড়ি ফিরে সুইটি।জগুলু এর মাঝেই আসে একবার সুইটি কে পায় নাই । ফ্যাক্টরি যাই নাই ।গেল কই ছেমড়ি ডা ? সুইটি কে দেখেই গলা উঁচায় জিজ্ঞাসা করল, কই গেছিলা? তোর কি আক্কেল নাই? আমি তর চিন্তায় মাথা নষ্ট কইরা ফালাইছি।
সুইটি হেসে বলল এত চিন্তা কইর না পিরিতের নাগর আমার,আমি কচি খুকি না। আর তুই কি তরে আমার মালিক ভাবতাছস নি? জগলু আমি সত্যি রানি হইয়া জাইতাছি। কি কস তুই আই গুলা? আমার বাড়ির থন কেউ আইছিল? সুইটি অবাক হইয়া তাকায় জগলুর দিকে। তারপর জগলুর থুতনি উঁচা করে ধরে বলল, ইসস ! ফকিরের ঘর থেন আইব কেউ সুইটি রে রানি বানাইতে? তোর দেহি পুরা ডাই গেছে নষ্ট হইয়া।
হন আমি কাল সুজনের লগে কাজী অফিস গিয়া বিয়া করুম।আমার দিক থাইকা একজন লাগবো। তুই যাবি ?না সালেহা খালা কে বলুম? জগলু চকিতে বসে পড়ল। সুইটি তোর কি বিবেক বুদ্ধি সব বাপের লগে দাফন দিছিস? তুই কি জানস, তুই কি কইতাছিস? হ জানি সব জানি তুই হিংশায় জলতাছস।তুই চাস না আমি সুখী হই।জগুলু তুই যদি আমারে ভালইবাসিস তো তোর আপ্পতি থাকনের কথা না। তোর লাগব না আমি সালেহা খালারে লইয়া জামু।
জগলু উঠে দাড়ায়। তারপর বলল ,তোর সুখের লাইগা আমি সব পারি। খালি একটা কথা মনে রাখিস। তোর চোখে যদি পানি দেখি, হেই দিন সুজন রে আমি খুন কইরা ফেলামু।আমি জামু তোর লগে কাইল।মনে রাখবি সুইটি,তরে রানি বানাইবার জন্য, আমি সুজনের হাতে দিতাছি।আই কথা ডা সুজনের ঘিলুতে ঢুকাই দিবি। আর তরে কই সুইটি। তুই আমারে বুঝস নাই। ওই ডা তোর একদিন মনে পরবো।তরে আমি চোখের পাতায় কইরা রাখতাম।তুই রানির মানে কি বুজছস তুই জানশ। আমার কাছে তুই আমার রানি হেই ডা ভুলবি না।
জগুলু চলে যায় ।একটা মুহূর্তের জন্য সুইটি র জগলুর জন্য খারাপ লাগে। তার পর সুইটি তার ব্যাগে গোছায় নেয় ।যেই কয়টা কাপড়, জরুরি জিনিষ নিয়ে নেয়। সারা রাত সুজনের সাথে ফোন কথা বলে। ভর বেলায় গসুল করে শাড়ী পরে। একটাই শাড়ী সুইটি র। খুব সুন্দর লাগছে আজ সুইটি কে। জগলু সময় মতো চলে আসলো। নয়ন ভরে সুইটি কে দেকছে। সুইটি র চোখে পানি আসে গেল।
বউ সাইজা তরে ভালাই ত লাগতাছে। টিটকারি মার? জগলু নিজেকে খুব শক্ত করে রেখেছে। হ রে সুইটি ,তোর কাছে গরীবের প্রেম মশকরা লাগবো ।এই ডা নতুন কিছু না রে। তরে দোষ দিমু না। আমার আন্দার ওই শক্তি নাই কা। যেই ডা দিয়া তরে বুঝাইতাম। জাউক গরিবের লাইগা পিরিত ত কি ,আল্লাহ ই আলাগ হয়। তোর আর দোষ কি? স্বপ্নের হাজার অশ্রু বিন্দু চোখে আর মনে অসীম আশা নিয়ে সুইটি জগলুর সাথে কাজি অফিস পয়ছে গেল। সুজন তখ ন আসে নাই।
জীবন টা শুরু হতে যাচ্ছে কি দিয়ে তা অজানা সুইটি র। বাস্তবের ঘাতে পদ্যময় জিবনে অঙ্কের কঠিন হিসাব কি মিলাতে পারবে সুইটি ? যথা সময়ে বিয়ে হয়ে গেল।সুজন তার বন্ধুর গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ নিয়ে গেল সুইটি কে। যাবার সময় জগলু সুজন কে বলল,সুইটি রে দেইখা রাইখ।আর সুইটি কে বলল, লাগলে আমারে ফোন দিশ। বলে জগলু কোন দিকে না তাকায় চলে গেল।
বাসে উঠে, সুজন আর সুইটি এমন ভাবে বসল, যেন দুই টা সীট এর পয়শা টাই দিয়া বৃথা। যতটা এক সাথে চিপকে বশা যায় ।ঠিক তার চেয়ে বেশি।
এখানেই শুরু হয় পৃথিবী নামের গ্রহে । আর একটা সংসার নাটক। আই নাটকে নায়ক নায়িকা পাগলের মত ভালোবাসায় মেতে থাকে বেশ কিছু দিন। আস্তে আস্তে সুজনের টাকা সেস হয়ে যায়। সুজনের জন্য তার বাড়ি নিষিদ্ধ সীমানা। বন্ধু দের থেকে ধার কর্জ সীমানা ছারিয়ে গেল । সবাই এড়িয়ে চলতে শুরু করল।
ভালবাসায় যেই চাঁদ টাকে দুই জনে নীচে নামায় আনত প্রতি রাতে। আর এখন,সেই চাঁদটা দেখা দিলেই পরের দিনের চিন্তায় খেয়ে ফেলে দুই জন কে। চাঁদ অসহ্য লাগে, দিনের আলো খর খরে লাগে। ভালবাসা ! ওটার রঙ ক্যামন ভুলে গেল এই দুই জন। সুজনের চাকরি হয় নাই। সেটা হবার ও না। একটা বি এ পড়া ছেলে কে পিওনের চাকরিও তদবির করে নিতে হবে বাস্তবতা ত সেটাই।
সুইটি সুজন কে জিজ্ঞাসা না করেই জগলু কে ফোন দিল। আর বলল জগলু আমার চাকরি টা কি আর পামু? তুই মানেজার স্যার কে আমার লাইজ্ঞা একটু বইলা দেকবি? তোর সুজনের চাকরি কি হইল? তুই চাকরি করবি কেন? সুইটি তুই ভালা আছিস তো? সুইটি চুপ করে ছিল। বলল হ ।জগলু তরে লইয়া সমস্যা হইল তুই বেশি বুঝস। আমি খুব শুখে আছি। সারাদিন কিছু করনের নাই দিল ঘাবড়াই গেছে তাই চাকরি টা করতে চাই। তুই খবর লইয়া জানাইশ। ফোন টা রেখে দিল সুইটি।
মনের উপরে পৃথিবীর থেকেও ভারি কোন গ্রহ চাপ দিয়ে আছে। সুজন কে বলল আমি চাকরি টা শুরু করি, আর তুমি যদি চাও তো তোমার জন্য একটা বাবস্তা করি।সুজন চিৎকার করে বলে, আমি গার্মেন্টস এ কাজ করবো? সুইটি বলে তুমি ত শিক্ষিত। হয়তো ভাল জায়গায় তোমার চাকরি হইতেও পারে মানেজের রে একটু অনুরধ করে কমু। সুজন বোলে,আর অই গার্মেন্টস এ তুমি সাধারণ কর্মীর কাজ করবা?
আমার কথা ভাবছ কামন লাগবে আমার। সুইটি তর্কে জায় না,বলে হু তাইলে আমি শুরু করি কাজ। তুমি চাকরি খোঁজ। শুরু হয় জীবন নামের পাথর কাঁধে পথ চলা আবার। সুইটি সকাল কখন হয় টের পায় না। কেননা অর্ধেক রাত থাকতেই রান্না করা ,ঘর সাফ করা,সব গোছায় মিরপুর কারখানায় যেতে হয়। মাগনা আই জাইগা ছাড়া যাবে না। কারখানার কাছে ঘর নিবে ,সেই উপায় নাই। আর তাই যত কষ্টই হক এই খান থেকেই যাওয়া আসা করতে হবে। রাত দিন যেন একাকার এখন সুইটি র জিবনে।
সুজনের চেহারা টাও ভাল করে দেখার মতো ,মন আর সময় কন টাই হয় না। তারপর আজ কাল সুজন কথায় কথায় ঝগড়া করে, খুত ধরে। সুইটি তরকে জরায় না। চুপ করেই থাকে।মনে হয় এ যেন সাময়িক কোন সমস্যা। ঠিক হয়ে যাবে সুজনের চাকরি টা হলেই। সময় গরায় তার সাথে সমস্যায়ও গড়ায়ে জীবন পথ টাকে পিচ্ছিল করে দেয়।
একদিন সুজন সুইটি র দেরি করে ঘরে ফিরা নিয়ে তুমুল ঝগড়া বাঁধাল, এবং গায়ে হাত তুলল। সুইটি হতবাক ।হয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা চিন্তা করতে করতেই আর একটা দিন আসে গেল। সেদিন ঘরের কোন কিছুই করলো না।সুজন কে না বলেই চলে গেল কারখানায়। যেতে যেতেই ভাবল, আজ জগলুকে বলবে সুজনের জন্য ভাল একটা জায়গায় যেন চাকরির ব্যাবস্তা করে দেয়।ফ্লোর মানেজার কে বলে। কিন্তু সে যেন সুইটি র নাম না নেয়। ফ্লোর মানেজার কে সুইটি নিজে বললেই চাকরি হয়ে যাবে। কিন্তু হারামখোর তো আর মাংনা দিবে না ।বিনিময়ে অতিতের সব প্রতাখানের হিসাব সহ খাইতে চাইবো। তাই জগলু রে দিয়া বলামু।
জগলুর সাথে দেখাও হয়ে গেল। আইজ টিফিনে তোর লগে কিছু কথা কমু জগলু পারলে আশিস। জগলু বলল আমুনে।
টিফিনে একটা নিরিবিলি জায়গায় বসে জগলু আর সুইটি কথা বলছিল । হটাত দেখে সামনে সুজন। অহ আচ্ছা, তো পুরান প্রেম এর জন্য এতই উতালা হইছ যে, ঘরে স্বামীর খাবার আচ্ছে কিনা সেটাও খবর নাই। আর হবে না কেন ? একটা গার্মেন্টস এর মেয়েলকের থেকে আর কি আশা করা যায়? ঘরে স্বামীর খাবার নাই। আর তুমি নাঙ্গরের সাথে বসে প্রেম লিলা করছ? সুজনের মুখে আই কথা গুলো সুইটি কে বাক রুদ্ধ করে দিলো। বাতাস চলছিলো না। সুনসান চারপাশ। জগলু উঠে দাঁড়াল। বলল, আর একটা কথা কইবি তো তরে মাটিতে গাইরা ফেলামু। তুই হালা অকরমরন বেকার ।বউএর কামাই খাস। আবার বড় বড় কথা কইশ? হালা মাস্টারের পোল।এখন গার্মেন্টস এর মাইয়ালোক মনে হইতাছে? আগে কি মনে হইছিল? গার্মেন্টস এর মালিকের মাইয়া? শালা ! এবার সুইটি যেন জ্ঞান ফিরে পেল। জগলুর দিকে তাকায় বলল ।জগলু তুই কি আমার বাপারি? আমার তরফদারি করতাছিস কেন? ওয় জানে না আমি কি? যাক আই ডা আমগো নিজেদের বাপার। তুই জা জগলু। বাকিটা আমরা মিটায় নিমু।
বলে সুইটি হাটা শুরু করল । অফিস এ বলে ছুটি নিল। বাসায় চলে যাবে।সুজন সাথেই ছিল। সারা রাস্তা কোন কথা হয় নাই। বাসায় গিয়ে রান্না করে দিল খিচুড়ি। সুজন গসল সেরে খেলো ।তারপর সুইটি কে কাছে টানল আদর করবার জন্য সুইটি নিঃসাড় দেহ সমরপন করে দিল। সব সেস।একটা অধ্যায় সেস হোল। সুইটি বলল চাকরি টা কি আমি ছেড়ে দিব? সুজন বলল আরে না। আমার জন্য একটা চাকরি তোমার অখানে দেখো। আর শুনো ওই জগলু রে আমার সহ্য হয় না। অর থেকে দূরে থাকবা।
সুইটি জিজ্ঞাসা করল তুমি কি সন্দেহ করো? সুজন জবাব দিল না। ঘুমায় পরল। সুইটি সারারাত ঘুমাতে পারল না। জীবন সাহিত্য যে, কারো সাজান গল্প নয় বুঝে গেল। স্বপ্ন গুলো পিষে গেল একটাই দীর্ঘশ্বাসের নিচে। সুইটি একটা সেভেন পরা মেয়ে হয়েও নিজের সম্ভ্রম কে বাঁচিয়ে স্বচ্ছ স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে চেয়েছিল। গরীব মাতাল বাপের ঘরে জন্ম হোয়েও কোথায় যেন শাহী ব্যাপার টা সুইটি র মধ্যে আচ্ছে। সুইটি তো তর তর করে উঠে যেতে পারতো ।সব ম্যানেজার কে খুশি করে। কিন্তু সেই স্বল্প বেতনেই অনেক স্বচ্ছ স্বপ্ন রচনা করেছিলো। কিন্তু বাস্তব এখানে কিছুটা জাত্রা পার্টির রঙ বদলের মতো।
রান্না বান্না সব ঠিক করে সুজন কে বলে সুইটি কারখানায় চলে গেল ।আজ্জ ভাল সাজ দিয়েছে সুইটি। টিফিন ব্রেক এ ফ্লোর মানেজারের অফিস ঘরে গেল। আলাপ আলোচনা সব হল।সাথে সুজনের চাকরি টাও। স্টোর কিপার হিসাবে ভালো বেতনও ঠিক হোল। সুইটি মানেজারের ঘর থেকে বের হোল। জগলু সুইটি র চলা ফেরা সব ছায়া র মতো অনুসরন করছিলো ।কারখানা থেকে বাড়ী ফেরার সময় সুইটি জগলু কে বলল চল তরে আইস ক্রিম খয়ামু আইজ। জগলু বলল সুইটি তুই আইজ রানি হইছিস? জা বাড়ী জা। তর আইস ক্রিম আমি খাই না।
সুইটি বাড়ী ফিরে সুজন কে চাকরির খবর দিল বেতন কত তাও বলল। সুজন একবার জিজ্ঞাসা করল না সুইটি র মত ৪০০০ টাকা বেতনের কর্মী একদিনেই কি ভাবে চাকরি যোগার করল? সুইটি সুজনের খুশি দেখ ল এক মনে। তারপর বলল আইজ ত খুশির দিন যাও বাজারে আইজ ভাল মন্দ রান্না করব দুই জনে একসাথে খাব।
রাত অনেক কি আর বাজার পাবে। গ্রামের মধ্যে কোন রকমে একজনের কাছ থেকে একটা মুরগি পেল। সেটা নিয়েই আসল সুজন। সুইটি খরির চুলায় আগুন জ্বালাল মুরগি কেটে ধুয়ে রান্না চাপাল।এর মাঝেই সুজন আসে আদর করে আবার চলে যায়। সুইটি সুজন কে বলল,বুজতাছি না এত পীরিত আবার কই থেইক্কা আইল? সুজন বলল কি বাপার তুমি আই ভাবে কথা বলছ কেন? সুইটি বলল আমি গার্মেন্টস কর্মী শিক্ষা দীক্ষা তেমন নাই। বংশের বালাই নাই।আমি সুইটি রানি । কেন তোমার কি সমস্যা? যাও ঘরে জাও ।আমি আসছি।তরকারি হয়ে গেছে।চুলা নিবায় আসতেছি। সুজন ঘরে চলে যায়। সুইটি অপলক তাকিয়ে থাকে জ্বল জ্বল করছে যে কাঠের চলা টা তার দিকে । অনেক অভিমান, অনেক অনুরাগ। আজ সব মিটিয়ে দিবো মিষ্টি একটাই কষ্ট দিব নিজেকে।
তারপর সুইটি আর কোন অভিমান,অনুরাগের স্বীকার হবে না। সুইটি ওড়না গুটলি পাকিয়ে মুখে ঢুকালো তারপর জ্বলন্ত কাঠের চলা টা নিয়ে গালের সাথে আমন ভাবে চেপে ধরল …………………………আহা কি সোহাগ? আগুনের সাথে খেলা বুঝি একেই বলে ! চোখ দিয়ে অঝরে পানি পরছে অথচ আত্মা যেন প্রথম যৌবন প্রাপ্ত কিশোরীর মত খিল খিল করে হাসছে। ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে ঘরে গিয়ে সুজন কে বলল আমার মাথা খুব বাথা তুমি বাইরা খাও। আমি ঘুমাতে গেলাম। সুজন খেল দেল ঘুমাল সব টের পেল সুইটি। রাতে সুইটি র জ্বরে গাঁ দিয়েই আগুন বের হচ্ছিলো।সকালে উঠে জগলু রে ফোন দিল। জগলু তর লগে খুব জরুলি কথা কইতে হইব তুই কারখানার গেটে আমার জন্য অপেখা করবি।জগলু কিছু বলার আগেই ফোন তা টা রেখে দিল।
তারপর ঘুমন্তও সুজনের কপালে হাত বুলাল,চুমা খেলো। আধ ঘুম সুজন জিজ্ঞাসা করল, রাতের মুরগি টা আচ্ছে তো? একে বারে আমার মা এর হাতের রান্নার মতো। ওইটাই খাব সকালে।যাও তুমি। অন্য দিকে ঘুরে গেল। সুইটি মিনিট খানিক দাড়ায় থাকল।তারপর বের হয়ে গেল। আজকের পথ চলা টা এত মসৃণ যে সুইটি বার বার হত বাক হচ্ছে। একটা জিবনে এতো মসৃণতা থাকতে পারে? জগলুর সাথে গেটেই দেখা।
একটু সাইড এ গেল দুইজন । জগলু বলল মুখ ঢাকছস কেন? নতুন কোন ফেরং ধরলি? সুইটি খিল খিল করে হেসে দিল। জগলু র গায়ের সাথে ঢলে পরল। একি রে তর ত বুখার আইছে সুইটি র মুখের কাপড় সরে গেল……। জগলু গোঙ্গানির মত করে বলল অরে আমি খুন করব। সুইটি জগলুর গালে হাত বুলায়ে বলল ওয়ে ত জানেই না জগলু।তাইলে? তাইলে কেডা? সুইটি রানি……কি কস তুই? জগলু অস্থির হয়ে উঠলো । সুইটি সব খুলে বলল জগলু কে। তারপর বলল, আমি ফেরত জামু না জগলু। রানি হয়নের কাম নাই। জানিস জোগোলূ রানী হয়নের সখ যখন থেইখা মিটছে কি যে মসৃণ হইছে আমার পথ টা ।তরে বুঝাইতে পারুম না। জগলু সুইটি র পুড়া গালের উপরে ফু দিতে থাকল……।
জাহিদা ঊর্মিঃ কবি,সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক।।