কানিজ ফাতেমা রুমা’র কবিতা (আনু ও পারুল)

কানিজ ফাতেমা রুমা’র কবিতা (আনু ও পারুল)

***আনু ও পারুল‍‍***

>>>কানিজ ফাতেমা রুমা>>>

ছোট্ট গায়ের পারুল ছিল
শ্যামল বরন গা ,
মনটি ছিল পাখির মতো
চঞ্চলতায় ভরা ।

একি গায়ের আনু ছিল

সহজ সরল ছেলে,
লোকে দিতো হাজার দুর্নাম
কোন ছুতো পেলে ।

বলতে পারো, আনু পারুল
এদের কথা কেনো ?
এরাই গায়ের বিরল প্রেমের
ইতিহাস জেনো !

পারুল আনুর প্রথম দেখায়
অন্তরের ডাক সোনা ,
পরের দিনে দুজনাতেই
চিঠির লেনা দেনা ।

আনুর ছিল একটি চাওয়া
মরণে থেকো পাশে
পারুল বলল চাইলে মরন
মরব হেসে হেসে।

সেদিন থেকে আনু পারুল
এক বাধনে বাধা
দুজন যেন ছোট্ট গায়ের
কৃষ্ণ আর রাধা ।

সপ্তাহ জুড়ে সেই অপেক্ষার
ছয়টি দিনের শেষে ,
সপ্তম দিনের সাত সকালে
দুজন উঠতো হেসে ।

পারুল নিতো একটি বেলি
চুলের খোপায় গুজে
আনু যাতে এসেই প্রথম
উপস্থিতি বুঝে ।

রাত পোহাতেই আনু যেতো
সেই পুকুরের ধারে ,
ভালোবাসার হাজার কথা
বলবে প্রেয়সীরে ।

কতো রাত যে কাটায় আনু
শুধুই চোখের জলে !
একটু কাছে থেকে পাওয়ার
স্বপ্ন গড়ে তোলে ।

পারুল শুধু কাঁদতো তখন
আজ ও হবেনা দেখা ,
লোকলজ্জা কলঙ্কের
ভয়ে ভয়ে থাকা ।

ভেবে ভেবে দুজন আবার
বিমুখ পথে যায় ,
যাওয়ার আগে শিমুল তলায়
চিঠি রেখে যায় ।

দুই চিঠিতে একি আবেগ
বড্ড ভালোবাসি ,
তোমায় যদি না পাই আমি
গলায় দিবো ফাঁসি ।

এমনি করে হাজার সময়
গেছে চোখের জলে ,
পারুল আনুর হয়নি দেখা
মিলন হল মরন কালে ।

বধু বেশে পারুল ছিল
আনুর বুকের পরে
পারবোনা না গোঁ কারো হতে
তোমার মনটি ছেঁড়ে ।

যাচ্ছি আমি পরলোকে
তোমার অপেক্ষায় ,
সেইখানেতেই মিলন মোদের
অনিবার্য তাই ।

বলেই পারুল দম হারালো
আনুর বুকের পড়ে ,
বিষের শিশি পড়ল শেষে
আনুর চোখের পরে ।

আনু তখন পাগল হয়ে
বুক ফাটিয়ে কাঁদে ,
করলি কি তুই পারুল আমার
আমিও যাব সাথে ।

সকাল হতেই হাযার মানুষ
জোড়া লাশের ধারে ,
আক্ষেপে আর কান্নাতে
আকাশ ভারি করে ।

এখনো গায়ের অনেক মানুষ
তাঁদের কথা কয়,
সত্য প্রেমের অমর কথা
আনু পারুলি হয়।

এখনো সেই জোড়া কবর
দাড়িয়ে আছে ঠায়,
মরলো দুজন প্রেমের কারণ
ইতিহাস জানায় !
………………

 

অতিথি লেখক