পদ থাকলে তো পদত্যাগ করবঃ দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ রেলের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন সাবেক রেলমন্ত্রী ও বর্তমানে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তিনি দাবি করেন, এ ঘটনায় তাঁর ছেলে সৌমেন সেনগুপ্তও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। ১০ অক্টোবর (বুধবার) জাতীয় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ দাবি করেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তবে যাঁরা সুরঞ্জিতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করে আপত্তিকর কথা বলেছেন, নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর তাঁরা দুঃখ প্রকাশ না করায় হতাশ হয়েছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে কারও ওপরই তাঁর কোনো ক্ষোভ নেই বলে তিনি জানান। ঘটনার ছয় মাস পর তাঁর সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ওমর ফারুক তালুকদারের গাড়িচালক আজম খান একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে সাক্ষাত্কার দেয়ায় এর উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তিনি অভিযোগ করেন, সহজ-সরল ছেলেটি রাজনীতির ভাষায় কথা বলছে। তদন্ত শেষ হয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ করে গাড়িচালকের বক্তব্য দেয়ার বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের মনে প্রশ্ন জেগেছে কি না, তা উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তিনি জানতে চান।
আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, গাড়িচালকের বক্তব্যের পর অনেকেই তাঁকে পদত্যাগ করতে বলেছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘পদ থাকলে তো পদত্যাগ করব?’ তবে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী পদকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জওহরলাল নেহরু দপ্তরবিহীন মন্ত্রী ছিলেন; পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘তদন্ত নিয়ে কখনোই আমি ভীত ছিলাম না। এখনো নই। যত রকমের তদন্ত আছে, করুন।’ তিনি ওই ঘটনার জন্য জাতীয়, আন্তর্জাতিক, জাতিসংঘ, দুদক, সংসদীয় কমিটি, বিচার বিভাগীয়—যেকোনো ধরনের তদন্ত করার আহ্বান জানান। তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে তিনি এ ধরনের অভিযোগ থেকে মুক্তি চান। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে দোষ নিয়ে মরতেও রাজি বলে মন্তব্য করেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ এনে হেনস্তা করায় তাঁর নিজের ও পরিবারের সদস্যদের সম্মানহানি হয়েছে। তিনি একজন রাজনীতিবিদ, একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন আইনজীবী ও দেশের সাধারণ নাগরিক হিসেবে আইনের আশ্রয় নেয়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছেন। তিনি বলেন, ‘পৈতৃক সম্পত্তি থাকা কি অপরাধ?’ তাঁর রাজনীতির কারণে ছেলে ভুক্তভোগী হয়েছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সংবাদ ব্রিফিংয়ের শেষ পর্যায়ে বেশ জোর গলায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, রেলের দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তাঁর পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে কিছু গণমাধ্যম বাড়াবাড়ি করেছে। এদের প্রতি ঘৃণা জানানোর ভাষা তাঁর নেই বলে মন্তব্য করেন।