শচীন টেন্ডুলকার পেলেন ‘অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া’ সম্মাননা
ক্রীড়া প্রতিবেদক,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ শচীন টেন্ডুলকারকে ‘অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া’ সম্মাননা দেয়া উচিত কি না, এ নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক হয়েছে। তবে সব বিতর্ক পেছনে ফেলে ৬ নভেম্বর (মঙ্গলবার) সম্মাননাটি গ্রহণ করেছেন লিটল মাস্টার। মুম্বাইয়ে শচীনকে ‘অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া’ সম্মাননায় ভূষিত করেন অস্ট্রেলিয়ার শিল্পকলাবিষয়ক মন্ত্রী সাইমন ক্রিন। সম্মাননার স্মারক হিসেবে ৩৯ বছর বয়সী শচীনের হাতে একটি পদক ও ক্রিকেট স্ট্যাম্প তুলে দেন তিনি। ভারতীয়দের মধ্যে শচীনই প্রথম এই সম্মাননা পেলেন, এমন নয়। এর আগে এই সম্মাননা পেয়েছেন ভারতের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল সোলি সোরাবজি। ভারত সফরে এসে গত ১৬ অক্টোবর শচীনকে ‘অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া’র সদস্যপদ দেয়ার ঘোষণা দেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড। ‘বিশেষ ক্রিকেটার’ হিসেবে ‘বিশেষ এই সম্মাননা’ শচীনের পাওনা জানিয়ে জুলিয়া গিলার্ড বলেছিলেন, ‘ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যে দারুণ এক মেলবন্ধন। দুটি দেশই ক্রিকেটপাগল জাতি। আমি আনন্দিত যে আমরা শচীন টেন্ডুলকারকে অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়ার সদস্যপদ দিতে যাচ্ছি।’
এই সম্মাননার বিশেষত্ব বোঝাতে গিয়ে গিলার্ড জানান, এটি বিশেষ এক সম্মাননা। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক কিংবা জাতিগতভাবে অস্ট্রেলীয়দের বাইরে খুব কম লোককেই এটি দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার এক দিন পরই অস্ট্রেলিয়ার সংসদ সদস্য রব ওয়াকশট শচীনকে সম্মাননা দেয়ার বিরোধিতা করে বলেন, ‘আমি শচীন টেন্ডুলকারকে ভালোবাসি। আমি ক্রিকেট ভালোবাসি। কিন্তু কূটনৈতিক কারণে কাউকে এ ধরনের পুরস্কার দেয়ার ক্ষেত্রে আমার আপত্তি আছে। এর সঙ্গে অস্ট্রেলীয়দের মানসম্মান জড়িত।’ ওয়াকশট জানান, দেশের জন্য উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন, অস্ট্রেলিয়ার এমন কাউকে বিশেষ এই সম্মাননা দেয়া উচিত। শচীনকে ‘অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া’ খেতাব নয়, বরং ‘অস্ট্রেলিয়া-ভারত পুরস্কার’ দেয়া যেতে পারে। রাজনীতির অঙ্গনের পর এবার বিরোধিতা আসে ক্রিকেটাঙ্গন থেকে। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক তারকা ব্যাটসম্যান ম্যাথু হেইডেন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, শচীনকে এমন সম্মাননা দেয়া ঠিক হচ্ছে না। তিনি দাবি করেছিলেন, এই সম্মাননা বিদেশি কেউ নয়, শুধু অস্ট্রেলীয়দেরই প্রাপ্য। একটি রেডিওকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় হেইডেন বলেন, ‘শচীন যদি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করত, প্রধানমন্ত্রী তাঁকে এই সম্মাননা দিতে পারতেন। বাস্তবতা হলো, ও ভারতে থাকে। আমি মনে করি, এই সম্মাননা শুধু অস্ট্রেলীয়দেরই প্রাপ্য।’
ক্রিকেটারদের মধ্যে শচীনের আগে সর্বশেষ এই সম্মাননা পেয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ব্রায়ান লারা। অস্ট্রেলিয়া ও ক্যারিবিয়ার মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন, সুনাম, বন্ধুত্ব সর্বোপরি ক্রীড়াসুলভ মানসিকতার জন্য কাজ করায় ২০০৯ সালে লারাকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়। ২০০৩ সালে একই সম্মাননা পান আরেক ক্যারিবীয় কিংবদন্তি স্যার গারফিল্ড সোবার্স। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সাবেক অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েডকে ১৯৮৫ সালে অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়ার সদস্যপদের চেয়েও বড় সম্মান ‘অফিসার অব দ্য অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া’ দেয়া হয়।
সূত্র: পিটিআই।