ঘটনাবহুল ৭ নভেম্বর আজ
জাহিদ হোসেন,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ঘটনাবহুল ৭ নভেম্বর। এদিনটিকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে বিএনপি। আওয়ামী লীগ পালন করে ‘সৈনিক হত্যা দিবস’ এবং জাসদ ‘সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে। এছাড়া একাধিক সংগঠন এদিনটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে।
বিএনপির মতে, ‘৭৫ সালের এদিনে আধিপত্যবাদী শক্তির নীলনকশা প্রতিহত করে সিপাহি-জনতা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করেছিল। বন্দিদশা থেকে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করেছিল। জাসদসহ সমমনা সংগঠনগুলোর ব্যাখ্যা হলো- ‘৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর থেকে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে ক্ষমতালিপ্সু অফিসারদের ক্ষমতা দখল-পুনর্দখলের জন্য পরস্পরবিরোধী অবস্থানের প্রেক্ষাপটে ইতিহাসের এ দিনে ‘সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান’ ঘটেছিল।
দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বাণী দিয়েছেন। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা ওই বাণীতে খালেদা জিয়া বলেন, আধিপত্যবাদী শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় শিখ-ী বসিয়ে দিয়ে একের পর এক গোপন চুক্তি সম্পাদন করে গোটা দেশকে গ্রাস করতে চাচ্ছে। এভাবে তারা আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রভুত্ব কায়েম রাখতে চায়। তাই আমি মনে করি, ৭ নভেম্বরের চেতনায় সব জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের অন্যতম শর্ত মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা এবং আধিপত্যবাদী আগ্রাসন প্রতিরোধ করে জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এ মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি।
ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরকে নিয়ে রয়েছে নানা ঘটনা। ঘটনাবহুল এই দিনের ইতিহাসে জড়িয়ে আছে নানা রক্তপাত। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিমর্মভাবে হত্যার মাত্র ৭৮ দিন পর সেই অশুভ শক্তিই ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী চার নেতাকে। এ প্রেক্ষাপটে ৩ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর সামরিক বাহিনীর মধ্যে একাধিকবার অভ্যুত্থান ও পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটে। একপর্যায়ে জিয়াউর রহমান গৃহবন্দি হন। ওইসব ঘটনায় বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা ও জওয়ানের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। গত ৩৬ বছরের অধিকাংশ সময় দিবসটি সরকারিভাবে পালিত হয়েছে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। ৭৬-৯৫ সাল পর্যন্ত এদিনটিতে সরকারি ছুটি ছিল। ‘৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তা বাতিল করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে ছুটি বহাল করে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে ছুটি আবার বাতিল করে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সেই সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। প্রতি বছরের মতো এবারো ৭ নভেম্বর উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।