একটি গল্প এবং পাকিস্তানের বিবেক!
জাফরুল হাসান রুহানঃ ছোটবেলায় গল্পে পড়েছিলাম বাঘ ও পথচারীর ঘটনা। বেচারা বাঘ যখন খাঁচায় কাঁদছিল তখন পথচারীর দয়া করে তাকে মুক্ত করার মত ভুল করেছিল। তার পরপরই মুক্তিদাতাকে গ্রাস করার মত বেঈমানি করার দুঃসাহস করেছিল। অবশেষ শেয়াল পণ্ডিতের চালাকিতে মুক্তি। আসলে রক্তে মাংসে যারা পশু, মানবরুপী পশুরা তাদের চেয়েও ভয়ানক হিংস্র। একাত্তরে ৯৬ হাজার সৈন্য আর তাদের দোসরদের নিয়ে বাংলার মানুষের রক্ত ও ইজ্জতের কাছে নতজানু পাকিস্তান আর আমাদের এই রক্তস্নাত এক টুকরো পবিত্র ভুমি বাংলাদেশ তাদের খাঁচায় আটক বাঘের গল্পের মত। সাইলেন্ট পানিশমেন্ট অথবা ন্যাচারাল পানিশমেন্ট যাই বলিনা কেন পাকিস্থান আজ সেই দুঃসময়ের মুখোমুখি। এক সাগর লোহিত আর লাখো মা-বোনের চিৎকার ও ঘ্রিনার অদৃশ্য থু থুর বিষ বাস্পে দিশেহারা পাকিস্তান আজ অস্তিত্তের সংকটে। ক্ষমা, ক্ষমা তো স্রস্টার গুন। ক্ষমা করতে পাড়ার মত গুন সকলের সম্ভব হয়না। সবাই ক্ষমা পায়না। চায়না। ইসলামের অনুসারিরা জানেন, আদম ক্ষমা চেয়েছেন, অনুশোচিত হয়েছেন। ফলে আদম ও তাঁর অনুশারীদের পথ শান্তির। আর শয়তান!! দম্ভ দেখিয়ে অভিশপ্ত হয়েছে।
হিনা,
আপনাদের ক্ষমা চাওয়ার মত জোর নেই। নেই অনুশোচনা করার মত বিবেকটুকুও। আপনাদের পথ আদমের দলে নয়। ঘ্রিন্ন শয়তানের দলে। ধর্ষিতার নিরব কান্না আপনি বুঝবেনা। সন্তান হারা মা আর স্বামী হারা নববধুর নিরবতা আপনাদের বিবেক তারিত করেনা। আপনারা কী করে বুঝবেন বাংলাদেশের একাত্তরের অতীত!!! যে মানুষ সে অতীত ভুলতে পারেনা, ভোলেনা। আপনি এটা অনুভব করেছেন কিনা জানিনা। তবে একাত্তরে আপনাদের নর পিশাচিক ভুমিকার কথা এ জাতি ভোলেনি, ভুলবেনা। ক্ষমা তো দূরে থাক।
পরিশেষে বলতে চাই, পাক সেনাবাহিনী অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে সমগ্র পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলটির (আওয়ামী লীগ) সক্রিয় কর্মী, বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ সমর্থকদের হত্যা করেছিল। এর ফলেই মুক্তিযুদ্ধে ভারত জড়িত হয় ও জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ। পাকিস্তানের প্রসঙ্গে বলতে হয়, তাদের অবশ্যই বোঝা উচিত তাদের নেতারা সে সময় কি ভুল করেছিলেন। আর নিছক দুঃখপ্রকাশ নয়, এজন্য তাদের উচিত পরিপূর্ণ ক্ষমা প্রার্থনা, যা ঢাকার জন্য গ্রহণযোগ্য হবে। এর ফলে পাকিস্তানও সেসব দেশের উচ্চতায় পৌঁছে যাবে, যারা নিজেদের ঐতিহাসিক ভুল স্বীকার করার মতো সাহস দেখাতে পেরেছে।
জাফরুল হাসান রুহানঃ সাংবাদিক।।