নেপাল থেকে প্রতারিত হয়ে ফিরেছে ওরা ৮ জন ।। প্রতারক চক্র গ্রেফতারে পুলিশের ভূমিকা রহস্যময়!
জাফরুল হাসান রুহান, বরগুনা প্রতিনিধি, এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নেপাল গিয়ে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে বরগুনার এক নারীসহ ৮ ব্যক্তি দেশে ফিরে এসেছে। ফিরে আসা ব্যক্তিরা হচ্ছেন- কেওড়াবুনিয়া গ্রামের সোহরাব হোসেন, তালতলীর জামাল হোসেন, লতাবাড়িয়া গ্রামের ইউসুব আলী, গাববাড়িয়ার সাইদুল ইসলাম, তালতলীর কাজীরখালের মামুন মিয়া, ডৌয়াতলার ফনি কর্মকার, তালতলীর মমিষেপাড়ার ছগির হোসেন মৃধা ও কেওড়াবুনিয়া গ্রামের এক অসহায় গৃহবধু। তার গত ২৩ নভেম্বর ২ জন, ২৫ নভেম্বর ৩ জন ও ২৭ নভেম্বর ৩ জন দেশে ফিরে এসেছে।
ফিরে আসা ব্যক্তিরা জানান, বুড়িরচর ইউনিয়নের কেওড়াবুনিয়া গ্রামের নান্না হাওলাদারের মেয়ে রোজী আক্তার তাদের ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার বিনিময়ে কাজ দেবার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের নেপাল নিয়েছে। কিন্তু নেপালে নিয়ে তাদের আটকিয়ে রেখে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। একজনকে লোহার রড পুড়িয়ে ছ্যাকা দেয়া হয়েছে। গৃহবধুকে করা হয়েছে পাশবিক নির্যাতন। কেওড়াবুনিয়া গ্রামের সোহরাব হোসেন জানান, রোজীর মা তাসলিমা বেগমের কাছে ১ লাখ টাকা দেবার পরে তাকে ১২ অক্টোবর নেপাল নেয়া হয়। সেখানে নিয়ে তাকে কোন কাজ দেয়া হয়নি। একটি রুমের মধ্যে আটকিয়ে নির্যাতন চালানো হয়েছে। কাজ দেবার কথা বলায় লোহার রড পুড়িয়ে তাকে ছ্যাকা দেয়া হয়েছে। আরো ৩২ হাজার টাকা দেবার পরে তাকে ২৫ নভেম্বর দেশে আনা হয়েছে। কেওড়াবুনিয়া গ্রামের এক অসহায় গৃহবধু জানান, তার স্বামী আরেকটি বিয়ে করেছে। তার খোঁজ খবর না নেয়ায় রোজীকে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে নেপালে যায়। গত ৮ নভেম্বর তাকে নেপাল নিয়েই পাশবিক নির্যাতন শুরু করা হয়। পরবর্তীতে রোজীকে আরো ২২ হাজার টাকা দিয়ে সে দেশে ফিরেছে। তালতলীর জামাল হোসেন জানান, ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে নেপাল গিয়ে আরো ২৬ হাজার টাকা দিয়ে দেশে ফিরতে হয়েছে। লতাবাড়িয়া গ্রামের ইউসুব আলী ১ লাখ, গাববাড়িয়ার সাইদুল ইসলাম ১ লাখ ১০ হাজার, কাজীরখালের মামুন ১ লাখ সাড়ে ৬ হাজার, ফনি কর্মকার ৯৯ হাজার ও সগির মৃধা ১ লাখ টাকা দিয়ে নেপাল যায়। তারা সবাই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তারা জানান, বেশীরভাগ সময় তাদের জোরপূর্বক মদ খাইয়ে অচেতন করে রাখা হতো।
বরগুনা থানার অফিসার ইন-চার্জ শীল মনি চাকমা জানান, নেপাল থেকে ফিরে আসা ব্যক্তিরা থানায় গিয়ে ছিল। তিনি তাদেরকে মামলা দায়েরের পরামর্শ দিয়েছেন। বরগুনার সহকারী পুলিশ সুপার মো. আজিমুল হক জানান, প্রতারণার প্রমান পাওয়া গেলে অবশ্যই প্রতারকদের শাস্তি পেতে হবে।