রসিক মেয়র ঝন্টুঃ অস্তিত্ব সংকটে জাপা
রংপুর প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ রংপুর সিটি করপোরেশনে প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক এমপি শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। শরফুদ্দিন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে ২৮ হাজার ৪৫০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। শরফুদ্দিন ঝন্টু পেয়েছেন ১ লাখ ৬ হাজার ২৫৫ ভোট। মোস্তফার প্রাপ্ত ভোট ৭৭ হাজার ৮০৫। বৃহসপতিবার বিকাল ৪টায় শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ শেষে রংপুর পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজে স্থাপিত ফলাফল কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করা হয়। বেসরকারি ফল ঘোষণার পর রাত ২টা ৪৫ মিনিটে বিজয়ী প্রার্থী শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু রংপুর নগরবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, আমি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। সুন্দর নগরী গড়তে চাই। তিনি আরো বলেন, আমি নগরবাসীর কাছে আমার পরীক্ষার খাতা জমা দিয়েছিলাম; তারা আমাকে পাস নাম্বার দিয়েছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। নির্বাচনে ১৭৮টি কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। অন্য মেয়র প্রার্থীদের জামানত ফেরত না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। জাতীয় পার্টির অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতা সদ্যবিদায়ী পৌর মেয়র এ কে এম আব্দুর রউফ মানিক (চশমা) পেয়েছেন ৩৭ হাজার ২০৮ ভোট, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিয়ার রহমান সফি (দোয়াত কলম) পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৫৪, নাগরিক ঐক্যের ইঞ্জিনিয়ার ফারুখ আজিজ শাহিন (ঘোড়া) পেয়েছেন ২ হাজার ৩১৬, বাসদের আব্দুল কুদ্দুস (তালা) পেয়েছেন ৯৭৯, বিএনপি নেতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গণমঞ্চ প্রার্থী আলহাজ কাওছার জামান বাবলা (আনারস) পেয়েছেন ২১ হাজার ২৩৫, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের গোলাম মোস্তফা (পানি জাহাজ) পেয়েছেন ১৫ হাজার ৬৮১, নাগরিক মঞ্চের কাজী মাজিরুল ইসলাম লিটন (টেলিভিশন) পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৬৪, স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী হায়দার সরকার দুলু (টেবিল) পেয়েছেন ৫০৬, মেহেদী হাসান বনি (প্রজাপতি) পেয়েছেন ৯৫৯, এ্যাডভোকেট ফিরোজ কবির চৌধুরী গুঞ্জন (কাপ পিরিচ) পেয়েছেন ১ হাজার ৮৬৮ ভোট। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়। ভোটাররা খুশি এই নির্বাচনে। প্রচ- শীত উপেক্ষা করে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। নির্বাচনে ১ জন মেয়র, ৩৩ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ১১ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোটের দিন ও গতকাল এখানে আইন শৃঙ্খলা ছিলো শান্ত। নির্বাচনে মেয়র পদে শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের একজন সৈনিক হিসেবে তার বিজয়কে রংপুরবাসী আনন্দের সাথে গ্রহণ করেছেন। নবগঠিত এই সিটি কর্পোরেশনে প্রথম মেয়র হিসেবে বিজয়ী হয়ে শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু এখানে গ্যাস সরবরাহসহ সকল উন্নয়ন কাজের অঙ্গীকার করেন। তার মেয়র নির্বাচনকে রংপুরবাসী স্বাগত জানিয়েছেন। রসিক-এর প্রথম মেয়র মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে সাথে নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু মেয়র হওয়ার মধ্য দিয়ে রংপুরে জাতীয় পার্টি অস্তিত্ব সংকটে পড়লো। এর মাধ্যমে এরশাদের রংপুরে দীর্ঘ দুই যুগের একচ্ছত্র আধিপত্য ভেঙে খান খান হয়ে গেলো। গত সাধারণ নির্বাচনে খোদ রংপুরের ৬টি আসনের ৩টি আসন জাতীয় পার্টির হাতছাড়া হওয়ার পর রংপুর সিটি করপোরেশন হাতছাড়া হওয়ার মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে জাতীয় পার্টি অস্তিত্ব সংকটে পড়লো। এখন রংপুর সিটি করপোরেশন আগামী দিনে এই অঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ট্রামকার্ড হিসাবে ব্যবহারের সুযোগ হলো বলে জানিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
প্রথম নগর পিতা হিসেবে নগর ভবনে বসার অপেক্ষায় থাকা শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু বলেন, আমি জনগণের দলের হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। আমার পরীক্ষার খাতা জনগণ মূল্যায়ন করে আমাকে মার্ক দিয়েছেন। আমি রংপুর নগরবাসীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। এখন আমার কাজ প্রত্যেক নাগরিকের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।