বিবিএস এর তথ্যঃ দেশের ৫৬ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ ব্যবহার সুবিধা পাচ্ছে
সৌরভ চৌধুরী,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ দেশের ৫৬ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ ব্যবহার সুবিধা পাচ্ছে। ৬১ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করছে। এবং ৮৯ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ খাবার পানি হিসেবে টিউবওয়েল ও ডিপ টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রথম বারের মতো প্রকাশিত আদশুমারির আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেশের মানুষের মধ্যে মৃত্যু হার কমেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ৩০ ডিসেম্বর (রোববার) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের জনগণের মধ্যে সংবাদপত্র পড়ার হার আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। জাতীয় পর্যায়ে এ হার দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশে। এক্ষেত্রে গ্রাম এলাকায় ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং শহর এলাকায় ২৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। এতে আরো বলা হয় শহর পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার বেড়েছে। এ হার দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং গ্রাম এলাকায় শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে এর হার ১ দশমিক ১১ শতাংশ হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যাণ ব্যুরো (বিবিএস) সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন দেশের আদমশুমারি হতে প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে সে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার বিভিন্ন দিক বিবেচনা করা হয়। শুমারি অনুষ্ঠান জাতিসংঘ কর্তৃক একটি সর্বজন স্বীকৃত ব্যবস্থা। বাংলাদেশেও এই রীতি অনুসরণে সুপারিশকৃত এবং প্রনীত সংজ্ঞা অনুযায়ী কতিপয় তথ্য সংগ্রহ করে জাতিসংঘের সুপারিশ অনুযায়ী তিন পর্যায়ে শুমারি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এগুলো হচ্ছে, সংক্ষিপ্ত প্রশ্নপত্র ব্যবহার করে দেশের সকল জনগণ ও পরিবারের মৌলিক তথ্য সংগ্রহ ও রিপোর্ট প্রকাশণা। এটি ইতোমধ্যেই হয়ে গেছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে নমুনা জরিপের মাধ্যমে মূল শুমারি কভারেজ ও গুণগতমান নির্ণয় ও রিপোর্ট প্রকাশ করা। এটি করেছে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)। সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে বড় আকারের নমুনা জরিপের মাধ্যমে বিস্তারিত আর্থ-সামাজিক তথ্যসংগ্রহ এবং শুমারির সম্পুরক তথ্য হিসেবে প্রকাশ করা। এই তৃতীয় ধাপের অংশ হিসেবে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বিবিএস। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ খাবার পানি হিসেবে টিউবওয়েল ও ডিপ টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার করছে। এ হার ৮৯ দশমিক ১ শতাংশ। যা গত ২০০৪ সালের শুমারি জরিপ অনুযায়ী ছিল ৫০ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এছাড়া দেশের ৬১ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ স্বাস্ত্য সম্মত পায়খানা ব্যবহার করে। ৫৬ দশমিক ৬ শতাংশ লোক বিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকে, যা গত শুমারি অনুযায়ী ছিল ৩৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে বর্তমানে নারীর তুলনায় পুরুষের সংখ্যা কমছে। প্রতি ১শ জন নারীর বিপরীতে ৯৯ দশমিক ৬৮ জন হচ্ছে পুরুষ। জাতীয় পর্যায়ে নারী পুরষের হার ৯৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এক্ষেত্রে গ্রাম এলাকায় ৯৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং শহর এলাকায় ৯৮ দশমিক ৪৭ জন।
সাত বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সের জনগণের শিক্ষার হার জাতীয় পর্যায়ে ৫৬ দশমিক ৯ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৫৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং মহিলা ৫৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এছাড়া গ্রাম এলাকায় ৫২ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং শহর এলাকায় ৬৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে এ হার অনেক বেশি।
দেশে জন্ম হার কমেছে। সরকারের জন্ম নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সফল প্রয়োগের জন্য এটি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। জাতীয় পর্যায়ে এ হার দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রাম এলাকায় ১৭ দশমিক ৯১ এবং শহর এলাকায় ১৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। দেশের মানুষের মধ্যে মৃত্যু হার কমেছে। জাতীয় পর্যায়ে এ হার দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রাম এলাকায় ৪ দশমিক ৭ এবং শহর এলাকায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ। মাতৃ মৃত্যুর হার অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় কমেছে। জাতীয় পর্যায়ে এ হার দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ১৮ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রামে ২ দশমিক ৪৪ এবং শহরে ১ দশমিক ৫ শতাংশ।