রাজাকার কাদের মোল্লা’র রায় ঘোষণাঃ যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছে
মোক্তার হোসেন,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ একাত্তরের রাজাকার কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৫ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এই রায় দেন। কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে গণহত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা, ছাত্র ও আইনজীবীসহ আরো অনেককে হত্যার মোট ৬টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের মধ্যে ৫টি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এসব অপরাধের দুইটিতে তাকে যাবজ্জীবন কারদন্ড ও তিনটি অপরাধে ১৫ বছরের সাজা দেয়া হলো বলে মামলার রায়ে উল্লেখ করা হয়। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে এর আগে ২১ জানুয়ারি অপর যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় দেয় একই ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার সকালে ট্রাইব্যুনাল-২ এর আদালত বসে ট্রাইব্যুনাল-১ এ। জনাকীর্ণ এই আদালতে কাদের মোল্লার মামলার রায় তিনটি অংশে ভাগ করে পড়ে শোনান ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি মজিবুর রহমান মিঞা ও বিচারক শাহীনুর ইসলাম। কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ কালে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৬টি অভিযোগের মধ্যে ৫টিই প্রমাণিত হয়েছে। একথা তার বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ে বলা হয়েছে। বেলা সাড়ে ১০টায় এজলাসে হাজির করা হয় কাদের মোল্লাকে। এরপরপরই শুরু হয় রায়ের কার্যক্রম। শুরুতেই কাদের মোল্লা উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, আমি কিছু বলতে চাই। বিচারপতি বলেন, আপনার কিছু বলার নেই, পরে বলবেন। কাদের মোল্লা জানতে চান কখন, রায় ঘোষণার পর। আদালত বলেন প্লিজ বসুনতো। এরপর কাদের মোল্লা বসে পড়লে ১৩২ পৃষ্ঠায় ৪২৯টি অনুচ্ছেদের রায়টি তিন ভাগে ভাগ করে পাঠ শুরু হয়। প্রথমাংশ পাঠ করেন শাহীনুর ইসলাম। শাহীনুর ইসলাম রায়ের প্রথমাংশ পাঠ করেন বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত। এ অংশে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট ও সেসময় কাদের মোল্লার ভূমিকা বিশেষ করে ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা হিসেবে তার মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সহিংস ও সশস্ত্র অবস্থান তুলে ধরা হয় এ অংশে। তার পাঠ শেষ হলে সোয়া ১১টায় দ্বিতীয় অংশের রায় পড়া শুরু করেন বিচারপতি মজিবুর রহমান মিঞা। দ্বিতীয় অংশও পাঠ সম্পন্ন হয়ে পৌনে ১২টায়। এরপরপরই তৃতীয় ও চুড়ান্ত পর্ব পাঠ শুরু করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনা ৬টি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, কবি মেহেরুন্নেছাসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা, পল্লবীর আলোকদি গ্রামে ৩৪৪ জনকে হত্যা, আইনজীবী-সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে হত্যা, বাংলা কলেজের ছাত্র পল্লবসহ সাত জনকে হত্যা, কেরাণীগঞ্জের শহীদনগর গ্রামের ভাওয়াল খান বাড়ি ও ঘাটারচরসহ পাশের আরো দু’টি গ্রামের অসংখ্য লোককে হত্যার ঘটনা।
এর মধ্যে ঘাটের চরের ঘটনা ছাড়া বাকি সবকটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলেই রায়ে বলা হয়েছে।