কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে সর্বস্তরের মানুষ
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে ছাত্র-জনতা, পেশাজীবী, রাজনীতিবিদ ও ব্লগার-অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা বিকেল থেকেই আবরোধ শুরু করেছেন। ৫ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া এ অবরোধ কর্মসূচি রাত সাড়ে ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে এ আন্দোলন চলবে রাতভর। রাত যতো বাড়ছে আন্দোলনের সঙ্গে আরও অধিক মানুষের একাত্মতা বাড়ছে। ইতোমধ্যে ক্ষমতাসীন সরকারের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগ নেতা নূহ উল আলম লেনিন, আহমদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, নারী নেত্রী খুশি কবির, সংস্কৃতিকর্মী নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতা আ ব ম ফারুক, প্রফেসর ড. আব্দুর সালাম, শফিউল আলম ভূঁইয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা শাহবাগে এসে জড়ো হয়েছেন। কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগ মোড়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে, মশাল মিছিল করে এবং প্রগতিশীল গান বাজনা ও চলচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে আন্দোলনকারীরা গোটা শাহবাগ মুখরিত করে রেখেছেন। এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নেতা নূহ উল আলম লেনিন বলেন, ‘রাজাকারদের বিষদাঁত ভাঙতে হলে শুধু পুলিশের ওপর নির্ভরশীল হলে চলবে না। সর্বস্তরের মানুষকে বিশেষ করে ছাত্র সমাজকে জাগ্রত হতে হবে।’ বিচারকদের প্রতি তিনি বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা মনে রাখবেন, আপনাদের বিচারে কি বাংলার জনগণের আশার প্রতিফলন হয়েছে? আমরা এ রায় মানি না।’ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, ‘৪১ বছর পর বর্তমান প্রজন্ম রাজাকারের বিচারের জন্য জেগে উঠেছে। আমাদের একটাই দাবি তাদের ফাঁসি চাই। আমরা কোনো বিচার মানি না। শুধু ফাঁসি চাই।’ রাত ৯টায় শাহবাগে এসে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, মহান সংসদের সদস্য এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। সব পরিচয় এবং দায়িত্ব নিয়েই আমি আপনাদের কাছে এসেছি। এখান থেকে কয়েক গজ দূরে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম গণআদালত বসিয়েছিলেন। সেই গণআদালতে কাদের মোল্লার মৃতুদণ্ড দিয়েছিলেন। আজ আইনের আদালতে সেই কসাই কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। আইনের আদালতে যাবজ্জীবন হলেও জনতার আদালতে তার মৃতুদণ্ড দেয়া হয়েছে। জনতার রায় আমার কাছে শিরোধার্য। আমি সেই রায়ের পক্ষে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ আইনের আদালতে কাদের মোল্লার যে রায় দেয়া হয়েছে তা জনতা মানে না। একজন মন্ত্রী হই, আর যাই হই, আমিও জনগণের পক্ষে। আমিও এ রায় মানি না।’ আন্দোলনে মিশে গেছে ছাত্র-জনতা-শিক্ষক-নাট্যকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। তাদের একটাই দাবি ‘ফাঁসি ভিন্ন অন্য রায় মানি না।’ আন্দোলনের একটি সূত্র জানিয়েছে, আজ সারা রাত শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেবেন। আজ রাতের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে শাহবাগেই গণচাঁদা তুলে। এখান থেকেই আগামীকাল সকালে ট্রাইব্যুনাল ঘোরাও করার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।