পিলখানা ট্রেজিডিঃ ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না
শুভাশিস ব্যানার্জি শুভঃ শুনছিলাম টেলিভিশনের একটি চ্যানেলে ইঞ্জিনিয়ার হায়দার হোসেন আর শায়ানের গান। রাত বাড়তে বাড়তে ২টা, তবুও তাদের গান আর আলাপচারিতা শেষ হয় না। হাজারো দর্শক-শ্রোতা উন্মুখ প্রশ্ন করছে তাদের। আর শুনতে চাচ্ছে তাদের পছন্দের গানটি, পছন্দের শিল্পীর কণ্ঠে। এরা দু’জনই দেশাত্মবোধক গানকে নতুন মাত্রায় নিয়ে এসেছেন। জনপ্রিয় করেছেন। সমসাময়িক, আর্থসামাজিক আর রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাদের দু’জনকে বিপুলভাবে প্রভাবিত করেছে, নাড়া দিয়েছে; তা তাদের গানের প্রতি ছত্রে ছত্রে অনুরণিত হয়। গানের মধ্যে দর্শক-শ্রোতারা অনুরোধ করেন হায়দার হোসেনকে, বিডিআরের হত্যাযজ্ঞ উপলক্ষ করে লেখা তার গানটি শুনতে। তিনি এ গানটি বেশি গাইতে চান না একটি কারণে। তিনি বললেন, এতে যদি প্রতিহিংসা বেড়ে যায়! যদি একটি শ্রেণীর ওপর লোকজনের ক্ষোভ-আক্রোশ বাড়ে?
এমনি ফেব্রুয়ারি মাসটা রক্ত ঝরার মাস। ২১ ফেব্রুয়ারি মায়ের ভাষা আদায়ে এ দেশের ছাত্র-জনতা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। সেই যে আন্দোলনের সূত্রপাত, তার হাত ধরেই পর্যায় অতিক্রম করে ধাপে ধাপে আমরা স্বাধীনতা আন্দোলনের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হই ১৯৭১ সালে। আর ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআরের ঘটনাকে কীভাবে সাজাবো? কাকে দুষবো? কাকে উপরে তুলবো। কাকে কী জন্য ধন্যবাদ দেবো? তবুও যারা মৃত্যুর দুয়ার থেকে বেঁচে এসেছিলেন, তাদের জন্য নবজীবন পাওয়া! যারা তাদের উদ্ধারে গিয়েছিলেন তাদের অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা আর সম্মান জানানোই স্বাভাবিক। আর যারা মৃত্যুকে ধীরে ধীরে আলিঙ্গন করেছিলেন, পশুর থাবায় নিথর দেহকে অত্যাচার থেকে রক্ষা করতে পারেননি, মৃতদেহকে ড্রেনে ফেলে আবর্জনা হিসেবে পরিত্যক্ত করার হিংস্র, অমানুষতুল্য চেষ্টা থেকে বিরত রাখতে পারেননি, তাদের কী জবাব দেবো? শহীদদের স্ত্রী, পরিজনকে কী বলে সান্ত¡না দেবো? তাদের কাছে দাঁড়ানোর কি কোনো সাহস, শক্তি, মর্যাদাবোধ ও লজিক আমাদের আছে? তবুও জীবন চলে। যারা চলে গেছেন তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি। আর যারা বিশেষত তাদের জীবিত পরিবারবর্গ অসহ্য গঞ্জনা সহ্য করেছেন, তাদের সমবেদনা জানাই।
একটি নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের অল্প সময়ে এ ঘটনা মর্মন্তুদ, বিভীষিকাময়। যে পাকিস্তানিরা ১৯৭১ সালে অত্যাচার-বর্বরতার সীমারেখা টেনেছিল, স্বগর্বে আমাদের বাঙালি কিছু বিডিআর পথভ্রষ্ট সৈনিক, তা অতিক্রম করে দেখালো। এসব বর্বরতা দেখে তখনকার পাকিস্তানি হায়েনারাও এখন লজ্জা পাবে। মৃতদেহের ওপর অত্যাচার আর নারী ও শিশুদের ওপর নির্যাতন কোনো ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রে আছে? অথচ এসব ঘটনাই ঘটলো এ প্রিয় মাতৃভূমিতে, ঘটলো এ প্রিয় বিডিআর বাহিনীতে! যে বাহিনীর স্বাধীনতা-সংগ্রামে ঐতিহ্য গর্ব করার মতো। প্রশ্ন আসে, মানুষ কেন পশুতে রূপান্তরিত হয়? আর এই তামাশা আমরা চোখভরে দেখলামই বা কেন? ঠিক ১৯৭৫ সালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুও আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি ফোর্স পাঠাতে বললেন তারই নিযুক্ত সেনাপ্রধানের কাছে। অথচ খুনিরা দ্রুত শেষ করলো তাকে ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে। নারী ও শিশুরাও রেহাই পেল না। মানুষ এতো ভয়ঙ্কর হতে পারে! একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। স্বয়ং বিডিআরপ্রধান সাহায্য চাইলেন তারই প্রধানমন্ত্রীর কাছে, তারই সেনাপ্রধানের কাছে। কিন্তু রাজনৈতিক বিবেচনায় সে সাহায্য পৌঁছালো না। খুনিরা ধীরেসুস্থে বীরদর্পে আস্তে আস্তে খুন করলো পঞ্চাশেরও অধিক অফিসারকে। নির্যাতিত হলো তাদের মরদেহ। যে ইউনিফর্ম জাতির গর্ব, স্বাধীনতার প্রতীক, আইনের ধারক; সে ইউনিফর্মধারী মরদেহ আবিষ্কৃত হলো ড্রেনে, নর্দমায়। একটি জাতিকে দুর্নাম, লজ্জা আর গ্লানিতে ডুবাতে আর কী দরকার! খুনিরা উল্লাস করলো, আর আমরা তা চেয়ে চেয়ে দেখলাম। আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আলোচনায় গেলেন। অথচ কেউ জিজ্ঞেস করলেন না, ‘তোমাদের মহাপরিচালক কোথায়? তোমাদের সেক্টর কমান্ডারদের নিয়ে আস।’ কেননা বিদ্রোহীদের দাবি-দাওয়া, আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে, তারা ছাড়া সরকারি প্রতিনিধি আর কারা হতে পারেন! অথচ নির্বিঘেœ সবই চললো। পিলখানা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হলো। খুনিরা পিলখানায় লাশের গন্ধ আর রক্তের দাগ সহ্য করতে পারেনি। সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ে পালিয়ে গেল অন্ধকারে। আঁধারে মিশে গেল যেন তাদের সব পরিকল্পনা, সব হোতার নাম-নিশানা আর তাদের পৃষ্ঠপোষকদের শেষ চিহ্নটুকু। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদেরও বিচার হয়েছে। নিয়তি খুবই নিষ্ঠুর! সময় পেরুতে পারে। তবে পিলখানায় যারা ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের খুঁজে পাওয়া কি সহজ হবে? সত্যিকারভাবে সম্ভব হবে?
গত ১৩ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে একটি জাতীয় দৈনিকের কলামে দেখেছিলাম, “আগামী দিনেও কোনো উদ্দেশ্যপ্রবণ কোনো বাহিনী, ইউনিট বা কোনো মেজর, ক্যাপ্টেন, সুবেদার বা অন্য কেউ যদি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে হাতিয়ার তুলে নেয়, তার যোগ্য কর্তৃপক্ষের অবাধ্য হয়ে খুনের জন্য পিপাসার্থ হয় তাহলে নিচের বিষয়গুলো দয়া করে ভেবে দেখা দরকার—
ক. প্রথমেই বিদ্রোহ, রাহাজানি, কর্তৃপক্ষের অবাধ্যতা যেই করুক বা দেখাক না কেন, প্রথমেই বলে দিতে হবে এটি বিচারযোগ্য অপরাধ, এর কোনো মাফ নেই। এটি ঘৃণ্য কাজ। মাইক, রেডিও, টেলিভিশনে এ প্রচার দ্রুত পেঁৗঁছাতে হবে।
খ. প্রথমেই অভ্যুত্থানকারী, বিদ্রোহকারীদের নির্বিঘেœ কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিপরীতে তাকে এনগেজ বা ব্যতিব্যস্ত করা জরুরী। সে যেন সুস্থ মস্তিষ্কে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে না পারে। সে যেন আত্মরক্ষা ও পালানোর বিষয়ে অস্থির থাকে। যদি তাকে বিস্তর সময়, অকপটে কথা বলা, নির্বিঘেœ চলার স্বাধীনতা যথেচ্ছ দেয়া হয় তাহলে ২৫ ফেব্রুয়ারির ঘটনা আরো ঘটার সমূহ আশঙ্কা বিদ্যমান।
গ. যতোদ্রুত ঘটনা ঘটার পরপরই অভ্যুত্থানকারী ও বিশৃঙ্খলাকারীদের নিয়ন্ত্রণ কার্য সম্পাদন করতে হবে, যাতে তা বেশি না ছড়ায়। যোগ্য নেতৃত্ব, পরিপূরক অস্ত্রসম্ভার নিয়ে কর্ডন করে বিদ্রোহের বিস্তার রোধ করতে হবে। আর যোগ্য কর্তৃপক্ষ দ্বারা তাদের আত্মসমর্পণের সময় বলে দিতে হবে। একটি গেট বা পথ খোলা রেখে (যদি তা কোনো ফল নাও দেয় তবুও) নিরীহ বৃদ্ধ, শিশু, মহিলা আর আত্মসমর্পণকারীদের তল্লাাশির মাধ্যমে অভ্যর্থনার ব্যবস্থা করতে হবে। বিপথগামীদেরও মানবতার নিদর্শন দেখিয়ে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হবে।
ঘ. যোগ্য কর্তৃপক্ষের দেয়া সময় অতিক্রমের সঙ্গে সঙ্গে অভিযান শুরু করা। এতে কে কতো ঘায়েল হলো, সেটি বড় বিবেচ্য নয়। বিবেচ্য হলো সরকারের ভাবমূর্তি, সরকারের কর্তৃত্ব, রাষ্ট্রের অধিকার রক্ষায় আমরা কতো সাবধানী, তা জানান দেয়া। এতে হোতাদের খতম করা বা আহত হয়ে ধরা পড়ার প্রবল সম্ভাবনা ও পরবর্তী সময়ে তদন্তে যথেষ্ট সুবিধা পাওয়া যায়, যা এখন সম্ভব হচ্ছে না বা দুরূহ ঠেকছে।
ঙ. অভিযান শুরুর সময় ব্যাপক সমন্বয়, ভারি অস্ত্রের সামান্য ব্যবহার, আকাশযানের ব্যবহার বিশৃঙ্খলাকারীদের মনোবল ভাঙতে ব্যাপক সাহায্য করে। নিরাপত্তাহীন, অস্ত্রহীন কোনো যান পাঠালে তা বিতাড়নে বিদ্রোহীদের উপরন্তু সাহায্য করে ও মনোবল চাঙ্গা করে। ২৫ ফেব্রুয়ারি তার প্রমাণ।
চ. অভিযান শুরুর আগে কোন পক্ষে কতো মারা যাবে, এ নিয়ে তত্ত্ব কথা বলা অনুচিত। ভালো পরিকল্পনা, যোগ্য নেতৃত্ব আর সঠিক যন্ত্রসম্ভার ত্বরিত গতিতে ব্যবহার শত্রুকে হতচকিত করে, আশাভঙ্গ করে ও তার নিজের আত্মরক্ষার পথ খুঁজতে বাধ্য করে। সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিই হলো সরকার/যোগ্য কর্তৃপক্ষের আদেশে মৃত্যুকে আপন ভেবে লড়াই করা। এতে যে ‘সম্মান ও গৌরবের’ জন্য সামরিক চাকরি, তা অক্ষুণœ থাকে। তখন সে প্রমাণ করতে পারে যোগ্যতার, সাহসিকতার, দেশপ্রেমের, কমরেডশিপ বা সাথীদের জন্য মমত্ত্ববোধের। এসব না হলে সশস্ত্র বাহিনীই থাকে না।
ছ. বিদ্রোহীদের দমনে প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক হওয়া ও অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সর্বশক্তি নিয়োগ জরুরী। বিদ্রোহীরা আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য সাধারণ মানুষকে গুলি করে মারে, ছবি তুলতে ক্যামেরা গেলে তাকেও গুলি করে, অথচ যাদের হাতিয়ার থেকে একটি গুলিও সাধারণের ওপর ছোড়া নিষেধ আছে, তা জানানোর ও প্রতিরোধের বাস্তবায়ন জরুরী। এ জন্য ছাদে উঠে, গাছে উঠে নির্বিঘেœ গুলি ছোড়ার আত্মতৃপ্তি থেকে বিদ্রোহীদের নিবৃত্তি করা জরুরী। এসব বিদ্রোহীকে সশস্ত্র বাহিনীর স্নাইপার দিয়ে গুলি করে আহত/নিহত করা অত্যন্ত প্রাথমিক কাজ। তাহলে তাদের ঊুবং ্ ঊধৎং নষ্ট হবে। তারা ভীত থাকবে এবং আত্মরক্ষার চিন্তায় ব্যাপ্তিত থাকবে, যা ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর ঘটনায় ঘটেনি।”
তবুও দেখতে দেখতে কয়েক বছর পার হয়ে গেলো বিডিআর ট্র্যাজেডির। ২৫ ফেব্র“য়ারি ২০০৯ ঘটে গিয়েছিল ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ। একদল সুশৃঙ্খল, বন্ধুবৎসল, শান্তিপ্রিয়, প্রশিক্ষিত, যোগ্য, নিবেদিতপ্রাণ সেনাসদস্য প্রাণ বলি দিলেন প্রতিহিংসার কাছে। পাকিস্তানের ১৯৭১ সালের হানাদার পশুতুল্য বাহিনী যে নির্যাতনগুলো বাকি রেখেছিল, তা পূরণ হলো। ঘাতকদের নিবৃত্ত করতে গিয়ে বিডিআরের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ সৈনিক, সেন্ট্রাল সুবেদার মেজরও প্রাণ দিলেন। কিন্তু হিংসার উন্মত্ততার কাছে সব ‘শৃঙ্খলার আকুতি’ নিঃশেষ হলো। ঝরে পড়লো এ দেশের কৃতী সন্তানদের জীবন প্রদীপ।
পাখি শিকারের মতো তারা তাদের কমান্ডারদের নিরস্ত্র অবস্থায় মেরেছে। দু-দুটি দিন অস্ত্রের মহড়া প্রদর্শন করেছে পিলখানাসহ বাংলাদেশের অন্যান্য বিডিআর স্থাপনার মধ্যে এবং তার নিকটবর্তী স্থানে। যাদের চাকরি দেয়া হয়েছে দেশের সীমান্ত প্রহরায় আর দেশের ক্রান্তিকালে দ্বিতীয় সারির প্রতিরক্ষা রচনায়, তারা জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় কেনা গুলি ছুড়লো আকাশে, নিরস্ত্র মানুষের ওপর। আশ্রয়স্থল পরিণত হলো মৃত্যুর ভাগাড়ে।
সব কথার পরও কথা থাকে। সব ষড়যন্ত্র আর হত্যার যন্ত্রণা সহ্য করেও প্রতিকার পাওয়া যায়। রবার্ট ক্লাইভ নবাব সিরাজউদ্দৌলার সঙ্গে বেইমানি করে পরবর্তীসময়ে নিজের আত্মার সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে একদিন আত্মহত্যা করেছিলেন নিজের দেশ লন্ডনে। সুতরাং যারা এতো নির্মম অত্যাচার বিডিআরে সংঘটিত করলো, তারা কি অতো সহজে পার পেয়ে যাবে? আইনের ছিদ্র গলিয়ে কি হত্যাকারী, অত্যাচারী রেহাই পাবে? পেতে পারে, নাও পেতে পারে। আর সে জন্য দরকার আইনের শাসনের প্রতি সবার সমর্থন ও বিশ্বাস। প্রতিহিংসা শুধু প্রতিহিংসাই বাড়িয়ে দেয়। সমাজ সংসার ধ্বংস করে। প্রতিহিংসার প্রতিযোগিতা আমাদের দেশকে ইরাক আর আফগানিস্তানের অবস্থায় ফেলে দিতে পারে। এ জন্য দরকার সবার আত্মবিশ্লেষণ, ধৈর্য আর সহমর্মিতা। আমাদের ৫৭ জন গেছে, এ জন্য ওদের ৫৭ জনের ফাঁসি চাইÑ এ মনোবৃত্তি যেন আমাদের ধরে না বসে। আইনে যারা দোষী সাব্যস্ত হবে, তারাই যেন শাস্তি পায়। পুলিশি ধারায় যেন ‘জজ মিয়ারা’ বিচারকে আবার প্রহসনে পরিণত না করে! কেননা আমাদের দেশে অতি উৎসাহী লোকের সংখ্যাও কম নয়। ষড়যন্ত্রকারী যিনিই হোন, তিনি যেন বিচারের মুখোমুখি হন। ষড়যন্ত্রকারী ও হত্যাকারীদের পৃষ্ঠপোষকদের যেন বাঁচিয়ে দেয়া না হয়। মনে রাখতে হবে, একটি যুক্তিযুক্ত বিচারই কেবল ৫৭ পরিবারের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে পারে। এরপরও সৃষ্টিকর্তার বিচার তো রয়েছেই। রাঘববোয়ালরা যুগে যুগে হত্যা ঘটিয়ে বেঁচে গেছে। তারা প্রত্যক্ষ হত্যাকারী হিসেবে কখনো আবির্ভূত হয় না। তবুও ক্লাইভ, হিটলার, টিক্কা, নিয়াজিরা অনেক হত্যা করেছে। তাদের ভাগ্য দেখুন? নিজেরাই আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিল। ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে তাদের স্থান আজ। মানুষ তাদের ঘৃণা করে, তুচ্ছ করে। আমাদের বিশ্বাস ও আশ্রয়ের স্থলগুলো নড়বড়ে, অনেক ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ। তবুও আমরা একত্রে চলুন বিশ্বাস ও আশ্রয়স্থলগুলোর এবারের সিদ্ধান্তগুলোর জন্য অপেক্ষা করি। দেখি জাতির সামনে তারা কীভাবে প্রকাশিত হন। প্রমাণিত হোক আইনের শাসনের প্রতি আমাদের অবিচল থাকার যৌক্তিকতা। প্রতিহিংসা নয়, আইনের আশ্রয়ই হোক আমাদের সব বিশ্বাস আর আশ্রয়ের কেন্দ্র। এটা সত্যি, ইতিহাসের গতি শ্লথ। তবে ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না।
শুভাশিস ব্যানার্জি শুভঃ সম্পাদক,এসবিডি নিউজ24 ডট কম।।