বইমেলায় মধ্যরাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডঃ নাশকতা ভাবছেন বিশেষজ্ঞরা
বিশেষ প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৪ ফেব্রুয়ারি (রোববার) দিবাগত মধ্যরাতে ভস্মীভূত হয়েছে একুশে বইমেলার ৪০টি স্টল। বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গনে মেলা উপলক্ষ্যে স্থাপিত বইয়ের অস্থায়ী স্টলগুলোতে রোববার দিবাগত রাত একটার দিকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট সেখানে পৌঁছে আধা ঘণ্টারও বেশি সময় চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বাংলা একাডেমীর নতুন ভবনের কাছে অবস্থিত স্টলগুলোতে এ আগুনের সূত্রপাত ঘটে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিসের সূত্র। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার আগেই পুড়ে যায় মেলার ২৬৪ থেকে ৩০৪ নম্বর স্টল পর্যন্ত ২৪টি প্রকাশনীর মোট ৪০টি স্টল। ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মনির হোসেন জানান, রাত ১টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
রহস্যজনক আগুনঃ প্রথম দফার আগুন নিয়ন্ত্রনে আসলেও, কিছুক্ষণ পরই বইমেলার অপর দু’টি প্রান্তে আরও দুই দফা আগুনের সূত্রপাত ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে ,রাত পৌনে দুইটার আগেই প্রথম দফার আগুন নিভিয়ে ফেলা হলেও রাত দুইটার দিকে আবারও আগুন লাগে মেলার ৩৬০ থেকে ৩৬১ নম্বর স্টলে অবস্থিত জিনিয়াস পাবলিকেশনে। অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই তা নিভিয়ে ফেলার কারণে স্টলের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। পরে রাত আড়াইটার দিকে আবারও আগুন লাগে ৩৩০ ও ৩৩২ নম্বর স্টলে অবস্থিত প্রকাশনী সংস্থা বিজয়প্রকাশে। ফায়ার সার্ভিস দ্রুত এই আগুনও নিভিয়ে ফেলে। বইমেলার বিভিন্ন প্রান্তে দফায় দফায় এসব অগ্নিকাণ্ডকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে রহস্যের। বিজয় প্রকাশের স্টলে অগ্নিকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী নুর কাশেম পাবলিশিংয়ের মালিক প্রকাশক সাইফুল্লাহ খান জানান, হঠাৎই তিনি স্টলটির ভেতর থেকে পোড়া গন্ধ পান এবং সেখান থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখেন। পরে সেখানে ফায়ার সার্ভিস এসে দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলে। প্রকাশকদের ধারণা এসব অগ্নিকাণ্ড নাশকতা। তাদের দাবি রাত নয়টার পর থেকে মেলা প্রাঙ্গনে সব বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন বন্ধ থাকে। তাই এখানে শর্ট সার্কিটজনিত দুর্ঘটনা ঘটা সম্ভব নয়। ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মনির হোসেন প্রথমে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটকে আগুনের প্রাথমিক কারণ হিসেবে ধারণা করলেও পরবর্তীতে জানান অগ্নিকাণ্ডের ধরণ নাশকতাকেই ইঙ্গিত করে। তবে তিনি জানান মেলায় রাত নয়টার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে রাতেও মেলা প্রাঙ্গনে একটি বৈদ্যুতিক লাইনের সংযোগ ছিলো। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে। তবে এখন নাশকতার আশঙ্কাকেও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’
ক্ষতিগ্রস্ত অন্য প্রকাশনীগুলো হলোঃ পলল, পলাশ, কিশোর ভূবন, চারুলতা, কাশবন, তৃপ্তিপ্রকাশ কুটির, গদ্যপদ্য, জয়তী, গতি, জোৎসনা, গাজী প্রকাশ, ঐক্য, নিমফিয়া, ঘাস-ফুল-নদী, রয়েল , রূপ প্রকাশ, সিদ্দিকিয়া, শিরিন, পারিজাত, বর্ণ বিচিত্রা, মর্ধণ-ণ ও মুক্ত দেশ প্রকাশনী ।