মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাঈদীর বিরুদ্ধে ফাঁসির রায়

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাঈদীর বিরুদ্ধে ফাঁসির রায়

নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ  মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ, ধর্মান্তরিত, অগ্নি-সংযোগসহ  মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে  মৃত্যুদন্ড দিয়ে রায় ঘোষনা করেছেন ট্রাইব্যুনাল। প্রায় সোয়া আড়াই ঘন্টার মতো সময় নিয়ে ১২০ পৃষ্ঠার  রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পাঠ করার পরে আসামী সাঈদীর বিরুদ্ধে মুত্যুদন্ডের রায় ঘোষনা করেন আদালত। ট্রাইব্যুনাল-১এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর রায় ঘোষণার প্রাক্কালে বলেন, আসামী সাঈদী দেশব্যাপি পরিচিত ব্যক্তি। তিনি দু’বার সংসদ সদস্য ছিলেন এবং বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর। তবে আমরা আজ থেকে ৪২ বছর পুর্বে সংঘটিত অপরাধের বিচার করছি। ওইসময় সাঈদী ছিলেন ৩০ বছরের যুবক। তখন তাকে তার গ্রামের সাধারণ মানুষ দেলু বলে জানতো। তিনি বলেন তার বিরুদ্ধে গ্রামের অশিক্ষিত সাধারণ, নিরিহ, নির্যাতিত মানুষ সাক্ষ্য দিয়েছেন।

 

 

প্রসিকিউশন আনীত অভিযোগ, আসামীপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট আইন, বিধি ও প্রাসঙ্গিক বিষয় পর্যালোচনা করে এ রায় প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি বলেন ১২০পৃষ্টার রায়ের মধ্যে সংক্ষিপ্ত অংশ পাঠ করা হবে উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনাল-১এর চেয়ারম্যান ও সদস্যরা প্রায় ২ঘন্টাব্যাপী  সময় ধরে তা উপস্থাপন করেন। ট্রাইব্যুনাল-১এর চেয়ারম্যান রায়ের মূল অংশ পাঠ করেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ এই রায়ের ঘোষণা দেন।  ট্রাইব্যুনাল তার রায় ঘোষনার সময় বলেন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ গুলোর মধ্যে ৮ ও ১০ নং অভিযোগ দুটি  সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছি। তবে ৮টিতে অীভযোগ প্রমাণিত হলেও  সে অভযোগ গুলোতে কোন ধরণের শাস্তির রায় দেইনি।  কারণ তাকে দুটিতেই ফাঁসির রায় দেয়া হয়ে গেছে।  রায়ে বলা হয়, আসামী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন আনীত ২০টি অভিযোগের মধ্যে ৮টি অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হয়েছে। এর মধ্যে ২টি অভিযোগ  তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। তবে প্রসিকিউশন আনীত ২০টি অভিযোগের মধ্যে ১২টি অভিযোগ প্রমানীত হয়নি।  তাকে দুটি অভিযোগে মুত্যুদন্ড দেয়ার পরে অন্য কোন অভিযোগে কোন সাজা দেয়ার প্রয়োজন বোধ করছি না। সকাল ১১টা ১২ মিনিটে ট্রাইব্যুনাল বসার আগে ১০ মিনিটের সময় সাঈদীকে হাজতখানা থেকে ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষে নিয়ে আসা হয়। ১১টা ২০ মিনিট থেকে রায় পাঠ শুরু করেন। প্রথমে রায় পাঠ শুরু করেন  ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি আনোয়ারুল হক, দ্বিতীয় পর্যায়ে অপর সদস্য মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও সর্বশেষ রায়ের সমাপ্তি ও ঘোষনা করেন  চেয়ারম্যান বিচারপতি  এটিএম ফজলে কবীর। ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষনার সময় রাষ্ট্রের প্রধান আইনকর্মকর্তা অ্যার্টনি জেনারেল মাহাবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যার্টনিজেনারেল ও প্রসিকিউশনের সমন্বয়ক এমকে রহমান, ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপুসহ অন্যান্য প্রসিকিউটর, তদন্ত সংস্থার প্রধান ককর্মকর্তা আবদুল হান্নান খানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও বিচারের দাবিতে সেচ্ছার ঘাতক দালাল নির্মূল  কমিটর ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন। বুধবার প্রথমে সাঈদীর মামলার রায় সংক্রান্ত ঘোষনার তারিখ ট্রাইব্যুনাল ঠিক করে দেন। পরে ডেপুটিরেজিস্ট্রার মেজবাহ উদ্দিন তার বিরুদ্ধে রায় ঘোষনার বিষয়টি মিডিয়ার কাছে  প্রকাশ করেন। রেজিষ্ট্রার সাংবাদিকদের বলেন, মামলাটির বিচার কার্য শেষে পক্ষগণের যুক্তি-তর্ক শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল মামলাটির রায় ঘোষণার বিষয়টি অপক্ষেমান রেখেছিল।

 

নিজস্ব প্রতিনিধি