অনিশ্চয়তার ধূম্যজালে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডঃ গণমাধ্যমের ১১ মার্চের ধর্মঘট নিয়েও জটিলতা
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ সাগর সরওয়ার-মেহেরুন রুনি সাংবাদিক দম্পতি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে ১১ই মার্চ গণমাধ্যমে ধর্মঘট অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে৷ সাংবাদিক নেতারা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন৷ এদিকে, সাংবাদিক ঐক্যও দুর্বল হয়ে পড়েছে৷ সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি নিহত হওয়ার পর সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলেন৷ তারা অপরাধীদের গ্রেফতার এবং বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ, মানববন্ধন, কালোব্যাজ ধারণসহ শতাধিক কর্মসূচি পালন করেন৷ আর গত ১১ই ফেব্রুয়ারি হত্যাকাণ্ডের এক বছরে প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিক মহাসমাবেশ থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়৷ সেই কর্মসূচি হল ১১ই মার্চ বাংলাদেশের সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন ও অনলাইনসহ সব ধরণের গণমাধ্যমে ২৪ ঘন্টার ধর্মঘট ৷ কিন্তু এই কর্মসূচি শেষ পর্যন্ত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ৷এখন পর্যন্ত কর্মসূচি বাস্তবায়নের কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছেনা ৷গণমাধ্যম মালিক বা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাংবাদিক নেতারা কর্মসূচি বাস্তবায়নে কোন বৈঠকও করেননি ৷আন্দোলনের শরীক সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান জানান, ১১ই মার্চের কর্মসূচি বাস্তবায়নে বৃহস্পতি এবং শুক্রবার ২ দফা বৈঠকের সময় দেয়া হলেও সাংবাদিক নেতাদের অধিকাংশই উপস্থিত না হওয়ায় সে বৈঠক হয়নি৷ আবারো বৈঠক ডাকা হয়েছে৷ সেই বৈঠকেই হয়তো সিদ্ধান্ত হবে গণমাধ্যমে ধর্মঘট নিয়ে৷ তবে তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি কর্মসূচি পালন হবে কি না৷ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শাহেদ চৌধুরী জানান কর্মসূচি এখনো প্রত্যাহার, স্থগিত বা পরিবর্তন করা হয়নি৷ সাংবাদিক নেতাদের বৈঠকের পরই সিদ্ধান্ত জানা যাবে৷ আর বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী জানিয়েছেন শনিবার দুপুরের পর তারা আন্দোলনে জড়িত সাংবাদিক সংগঠনগুলোর বৈঠক ডেকেছেন৷ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই তারা সিদ্ধান্ত নেবেন৷ অন্যদিকে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের আরেক অংশের সভাপতি রুহুল আমীন গাজি জানিয়েছেন, তাঁরা বৈঠক ডেকেছেন রবিবার৷ তারা চান সাংবাদিকদের ঐক্য থাকুক এবং ১১ই মার্চের কর্মসূচি বাস্তবায়ন হোক ৷তবে বৈঠকের আগে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছেনা ৷
জানা গেছে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর সাংবাদিকরা যে ঐক্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, তা এখন নড়বড়ে হয়ে পড়েছে ৷শাহবাগ গণজাগরণ নিয়ে সাংবাদিকরা দু’ভাগে ভাগ হয়ে পড়েছেন ৷তার প্রভাব এই আন্দোলনেও পড়তে পারে৷ আর সাংবাদিকরা রাজনৈতিক মতাদর্শ অনুযায়ী অনেক আগে থেকেই বিভক্ত ৷এ কারণেই ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন দুটি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনয়িনও দুটি ৷গত বছরের ১১ই ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে সাগর-রুনি ঢাকায় তাদের নিজ বাসায় দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হন৷ এখনো এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি হয়নি ৷ধরা পাড়েনি মূল অপরাধী রুনির ভাই নওশের রোমান জানান সাংবাদিকরা এতদিন যে আন্দোলন করেছেন তার জন্য তারা কৃতজ্ঞ ৷তাদের আশা অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবিতে তাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে ৷