সম্ভাব্য নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়ে প্রচার-অপপ্রচার
শওগাত আলী সাগরঃ রাজনীতির মাঠে সারাক্ষণই নানা ধরনের গুজব উড়ে বেড়ায়।সরকার কিংবা বিরোধী রাজনৈতিক দল বা দলের নেতাদের কেউ সেই গুজব থেকে বাদ পড়েন না। আর এই গুজবে আনন্দদায়ক অনুভূতির যেমন সুযোগ আছে,তেমনি অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতির মতো গুজবও রাজনীতির মাঠে উড়ে বেড়ায়। রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত কে হবেন তা নিয়ে রাজনীতির মাঠে নানা ধরনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সেই গুঞ্জন মাঠ পেরিয়ে জায়গা করে নিয়েছে মিডিয়ায়,সংবাদপত্রের পাতায়।কে রাষ্ট্রতি হতে পারেন,সম্ভাব্য সৌভাগ্যবানদের নামের তালিকাও প্রকাশিত হয়েছে/হচ্ছে প্রতিদিন। এইসব নামগুলো নিশ্চয়ই সম্ভাবনাময় হিসেবে কোথাও না কোথাও আলোচিত হয়েছে? নইলে দেশে এতো নাম থাকতে এই নামগুলোই মিডিয়ায় আসবে কেন? প্রশ্ন হচ্ছে, কোন লেভেলে, কোন মহলের আলোচনা থেকে রাষ্ট্রপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি পদের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এই রাজনীতিকদের নাম মিডিয়ায় এলো? রাজনৈতিক দলের সম্মেলনের সময় শীর্ষ নেতৃত্বে আসার সম্ভাবনা আছে,এমন নেতাদের নাম ধাম চলে আসে মিডিয়ায়। সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নেতাদের একটা ভূমিকা থাকে। তারা চান তাদের নামটা শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দী হিসেবে মিডিয়ায় উচ্চারিত হউক। আর সেটি নিশ্চিত করার জন্য তারা সব ধরনের চেষ্টাই করেন। নির্বাচনের আগে মনোয়ন পেতে পারেন এমন নেতাদের নামও আগাম উচ্চারিত হয় মিডিয়ায়।আর কে মন্ত্রী হচ্ছেন, কে হচ্ছেন না তা নিয়ে তো রিপোর্ট হয়ই।কাজেই রাষ্ট্রপতি পদে সম্ভাব্য প্রার্থী কারা, কিংবা কে হতে পারেন, তা নিয়ে রিপোর্ট হওয়াটা নতুন কিছু নয়। তবে রাষ্ট্রপতি জিল্রুর রহমানের মৃত্যুর পর সম্ভাব্য নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে আলোচনায় আসে বেগম সাজেদা চৌধুরীর নাম।একজন অগ্রজ সাংবাদিক এবং পরে কয়েকজন সাংবাদিক বন্ধু ফেসবুকে ‘দেশ একজন নারী রাষ্ট্রপতি পেতে যাচ্ছে’ বলে স্ট্যাটাস দেন।বলাই বাহুল্য রাষ্ট্রপতি জিল্রুর রহমানের মৃত্যুর পর তাকেঁ ঘিরে শোকের ঐক্যবদ্ধ যে আবহ তৈরি হয়েছে,সেখানে রাষ্ট্রপতি পদে সাজেদা চৌধুরীর নামটা এক ধরনের হাস্যরসের তৈরি করে।দ্রুতই সেই নামের সাথে জেনারেল এরশাদের নামটি সংযোজিত হয়ে দুই জনের তীব্র প্রতিদ্বন্ধীতার আভাস দিতে শুরু করে কোনো কোনো মিডিয়া ।রাষ্ট্রপতি হিসেবে বেগম সাজেদা চৌধুরী এবং এরশাদের নাম নিয়ে আলোচনা রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের জন্য কোনো ইতিবাচক ফল দেয় নি।রাষ্ট্রপতির পদটি অলংকৃত করার মতো গুনাবলী বা যোগ্যতা এদের দুজনের কেইউ ধারন করে বলে মানুষ বিশ্বাস করে না। কোনো কোনো পত্রিকায় অবশ্য স্পিকার আবদুল হামিদের সম্ভাবনার কথাই জোড়েসোড়ে তুলে ধরা হয়।প্রবীন রাজনীতি তোফায়েল আহমেদ এমন কি সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের নামও সম্ভাব্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে মিডিয়ায় এসেছে।
জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে শোকাহত জাতিকে শোকে মুহ্যমান রেখেই তার উত্তরসূরী নির্বাচন নিয়ে প্রচারনায় রাজনৈতিক রঙ তামাশা হতেও দেখা যায়। শেখ রেহানার নাম রাষ্ট্রপতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে- এমন তথ্যের পাশাপাশি শেখ রেহানাকে প্রধানমন্ত্রী করে শেখ হাসিনা নিজেই রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন- এমন অপপ্রচারও চলছে ফেসবুকে। ফেসবুকে এই ধরনের পোষ্টগুলোর বক্তব্য বিশ্লেষন করলে এটি পরিষ্কার হয়ে যায় যে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়েও বিএনপি- জামাত সমর্থকরা এক ধরনের নোংরামিতে মেতে আছেন।সেই নোংরামীর মূখ্য হচ্ছে মিথ্যাচার এবং অপপ্রচার। আমরা মনে করি পছন্দের ব্যক্তিকে লাইমলাইটে নিয়ে আসার চেষ্টা নয়, রাজনৈতিক নোংরামী নয়,বরং জাতীয় স্বার্থকে প্রধান্য দিয়ে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। এ ব্যাপারে মিডিয়া এবং সচেতন জনগোষ্ঠীও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। শিক্ষক-কলামলেখক আলী রিয়াজ ফেসবুকে একটি পোষ্টে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে সুচিন্তিত একটি মতামত দিয়েছেন। তাঁর এই মতামতটি রাজনীতি, রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের শুভদৃষ্টি পেলে,আমরা সামনের রাজনেতক হানাহানি এড়াতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি।প্রিয পাঠক, আলী রিয়াজের প্রস্তাবনাটি এখানে উপস্থাপন করছি। আপনার কাছে এটি গ্রহনযোগ্য মনে হলে এর স্বপক্ষে কথা বলুন,আওয়াজ দিন।
আলী রিয়াজের প্রস্তাবনাঃ
রাষ্ট্রপতিজিল্লুররহমানেরবেদনাবহমৃত্যুরপরতারস্থলাভিষিক্তকেহবেনসেবিষয়েআলোচনাচলছে।একথাবলারঅপেক্ষারাখেনাযেআওয়ামীলীগযাকেমনোনীতকরবেতিনিইহবেনবাংলাদেশেরবিংশতিতমরাষ্ট্রপতি।কোনোকোনোদুর্ঘটনাওদুর্যোগেরমধ্যেসম্ভাবনারএকটাদিকওথাকে।বাংলাদেশেররাজনীতিতেবিরাজমানসংকটেরপ্রেক্ষাপটেজিল্লুররহমানেরমৃত্যুরমধ্যদিয়েতেমনিএকটিসম্ভাবনারদিকতৈরিহয়েছেকিনাসেটাভেবেদেখাযেতেপারে।আসন্ননির্বাচনকেকেন্দ্রকরেযেঅনিশ্চয়তাতৈরিহয়েছেতারঅবসানেরজন্যকেউকেউরাষ্ট্রপতিরনেতৃত্বেতত্বাবধায়ক/ অন্তর্বর্তীসরকারগঠনেরকথাপ্রস্তাবআকারেতুলেছিলেন।এখনক্ষমতাসীনআওয়ামীলীগএকটাসম্ভাব্যবিকল্পহিসেবেসেইসম্ভাবনারদরজাখুলেদিতেপারে।তারজন্যদরকারসর্বজনশ্রদ্ধেয়কোনোব্যক্তিকেরাষ্ট্রপতিহিসেবেনির্বাচিতকরা।আওয়ামীলীগচাইলেএনিয়েসংসদীয়বিরোধীদলেরসঙ্গেআলোচনাওকরতেপারে।সেইআলোচনাদুইদলেরমধ্যেযদিসবারজ্ঞাতসারেহয়ভালো।নাহলেএনিয়েদলীয়ভাবেযোগাযোগকরেএকটাঐকমত্যতৈরিকরাগেলেতানিয়েচিন্তিতহয়েপড়ারকারণদেখিনা।যেভাবেইহোকএইধরণেরপদক্ষেপনিতেপারলেমনেহয়এখনকারসংকটইকেবলকাটবেতানয়সামনেরঅনেকবিষয়েঐকমত্যতৈরিরপথখোলাহবে।কেননাবাংলাদেশেরসংবিধানের৫০ (১) অনুযায়ীবলাহয়েছে, “৫০। (১) এইসংবিধানেরবিধানাবলীসাপেক্ষেরাষ্ট্রপতিকার্যভারগ্রহণেরতারিখহইতেপাঁচবৎসরেরমেয়াদেতাঁহারপদেঅধিষ্ঠিতথাকিবেন”।তারঅর্থহলডিসেম্বর২০১৩/জানুয়ারি২০১৪নির্বাচনেযেইবিজয়ীহোকনাকেনসেইদলকেইকাজকরতেহবেএখনযিনিরাষ্ট্রপতিহবেনতারসঙ্গে।সেইবিবেচনায়ওআওয়ামীলীগেরদিকথেকেনির্দলীয়, সর্বজনগ্রহণযোগ্যব্যক্তিকেরাষ্ট্রপতিমনোনীতকরাটাইহবেবিবেচকেরকাজ।আরঅন্যদিকেএধরণেরকোনোসুযোগতৈরিহলেতাপ্রত্যাখ্যানকরাবিএনপি’রজন্যযেমনদুরূহহবেতেমনিরাজনৈতিকভাবেওলাভজনকহবেনা।বিএনপিআগবাড়িয়েযদিএখনএটাবলেযেতাঁরারাষ্ট্রপতিনির্বাচনেরপ্রক্রিয়ায়অংশনিতেচায় – তবেওখারাপহবেনা।তাঁরাসেটাভেবেদেখতেপারে।আরদলগুলোরলাভালাভেরকথাযদিযদিআমরাবাদওদেই – সাধারনমানুষএইধরণেরপদক্ষেপেস্বস্তিপাবেন, একনতুনধরণেররাজনীতিতৈরিরব্যাপারেএকটাআশাপাবেন।
লেখকঃ শওগাত আলী সাগর, কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক।।