৪৩তম মহান স্বাধীনতা দিবসঃ বিশ্বের বুকে লাল সবুজের পতাকা ওড়ানোর দিন আজ
সৌরভ চৌধুরী,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ বাঙালি জাতির আবেগ আর আনন্দের দিন আজ। আজ ২৬ মার্চ। মহান স্বাধীনতা দিবস। বিশ্বের বুকে লাল সবুজের পতাকা ওড়ানোর দিন আজ। ১৯৭১ সালের এদিনে বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনতা পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের সূচনা করে। বিশ্বের সকল মানুষকে বীর বাঙালিদের স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন ঘোষণার আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে ঘোষিত হয় মুক্তি সংগ্রামের দৃপ্ত শপথ। বহু কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে জাতি ৪৩তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করছে। এ বছর মহান স্বাধীনতার ৪২ বছর পূর্তিতে দিবসটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। বিশেষ করে স্বাধীনতাবিরোধী ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের কয়েকজনের বিচারের রায় বাস্তবায়ন পর্যায়ে থাকায় এবারের স্বাধীনতা দিবস জাতীয় জীবনে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাঙালির স্বাধীনতা অন্যসব স্বাধীনতার মতো নয়। পৃথিবীর কোন দেশই বাংলাদেশের মতো দীর্ঘ যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়নি। ভারত উপমহাদেশ প্রত্যকটি দেশ স্বাধীন হয়েছে ভাগবাটোয়ারার মাধ্যমে। একটি নির্দিষ্ট তারিখে ব্রিটেন আমেরিকাকে স্বাধীন করে দিয়েছিল। কিন্তু বাঙালি স্বাধীনতা অর্জন করেছে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে। তাই এ স্বাধীনতা অন্য সব স্বাধীনতা থেকে আলাদা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা বড়ই গর্বের বড়ই আনন্দের। আমাদের প্রাণ প্রিয় এই স্বাধীনতার বিরুদ্ধে সেদিন যারা অবস্থান নিয়েছিল এবং আজ যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ ও বিচারের শপথ নেয়ার দিন আজ।
বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের রয়েছে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এ স্বাধীনতা ১৯৭১ সালে আকস্মিকভাবে সূচনা হয়নি। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের কাছ থেকে স্বাধিকার অর্জনে যে সংগ্রাম পরিচালিত হয় সেখানেও নেতৃত্বে ছিল বাঙালিরা। কিন্তু পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর শাসকগোষ্ঠী বাঙালিদের প্রতি তাদের প্রভুসুলভ আচরণ ত্যাগ করতে পারেনি। সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও প্রায় সব ক্ষেত্রেই বাঙালির প্রতি বঞ্চনা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের নৈমিত্তিক। বিশেষ করে উন্নয়ন, চাকরি, শিক্ষার ক্ষেত্রে এই বঞ্চনা সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি জনগণকে আরো বেশি ক্ষুব্ধ করে তোলে। পশ্চিম পাকিস্তানিদের শাসক হওয়ার এ মানসিকতা পাকিস্তানের দুটি অংশের মানুষের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে। অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী একইভাবে বাঙালিদের ওপর শোষণ নিপীড়ন চালতে থাকে। তবে রাজনৈতিকভাবে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় বেশি সচেতন ছিল। তাদের অধিকার সচেতনতা পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলে। তাই তারা এই ভূখন্ডের জনগণকে অধিকার দিতে চায়নি। ফলে শেষ পরিণতি অনুযায়ী এক রক্তাক্ত অধ্যায়ের মধ্য দিয়েই বাঙালিকে তাদের স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। মার্চ থেকে ডিসেম্বর নয় মাসের মধ্যেই বিশ্বের বুকে নতুন এক জাতি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ ও ২৫ মার্চে পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষণাভিত্তিক তারবার্তার আদলে স্বাধীনতা ও স্বাধীনতাযুদ্ধ সম্পর্কিত অনুষ্ঠান কালুরঘাট থেকে সমপ্রচার করেন এম এ হান্নান।