এ সরকার উন্মাদ হয়ে গেছে পাগলের মতো যা ইচ্ছা তা-ই করছেঃ কলারোয়ায় খালেদা জিয়া
বিশেষ প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ দেশ নিয়ে যতই ষড়যন্ত্র করেন না কেন, কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে লাগবে না বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। সাতক্ষীরার কলারোয়া হাইস্কুল মাঠে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। সম্প্রতি হরতাল-সহিংসতায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে ও সহায়তা দিতে বেগম জিয়া কলারোয়া সফরে যান। সমাবেশে তিনি বলেন, “এ সরকারের সময়ে কোন হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না। তাই আর কোন অশ্রু নয়। শোককে শক্তিতে পরিণত করে রাজপথে নেমে আসুন। আগামী দিনের আন্দোলন কর্মসূচিতে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নিয়ে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।” খালেদা জিয়া বলেন, “এ সরকার উন্মাদ হয়ে গেছে। পাগলের মতো যা ইচ্ছা তা-ই করছে। হত্যা, খুন, গুম অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। কর্মসংস্থান ও দুই বেলা ঠিকমত খাবার না দিয়ে মানুষ খুন করে যাচ্ছে। তারা জনগণের সরকার নয়।” খালেদা জিয়া বক্তব্যের এক পর্যায়ে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, “এই সরকারের পরিনতি কি হতে পারে ?” জনতা সমস্বরে উত্তর দেয়, বর্তমান সরকারকে ভারতে পাঠাতে হবে। তিনি বলেন, “এই সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। তাই এখন দেশের জনগণ সরকার প্রধানকে ভারতে চলে যেতে বলেন।” তিনি আরো বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেশি কথা বলেন। তিনি এর জন্য একদিন ধরা পড়বেন। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী তাকে রাজাকার বলছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা হলে তিনি সাক্ষীও দিতে প্রস্তুত আছেন। তিনি বড় রাজাকার। সবার আগে এই রাজাকারকে ফাঁসি দিতে হবে।” খালেদা জিয়া বলেন, “আমরাও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। কিন্তু সে বিচার হতে হবে আন্তর্জাতিক মানের। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ।”
খালেদা জিয়া কলারোয়ায় পুলিশের হাতে নিহত চারজনের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান ও এক লাখ টাকা করে অর্থ সহায়তা দেন। এরপর তিনি সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। সেখানে আরেকটি জনসভায় তার বক্তৃতা করার কথা। বৃহস্পতিবার রাতেই রাজবাড়ি-মানিকগঞ্জ হয়ে তার রাজধানী ঢাকায় ফেরার কথা। সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পথসভায় বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, ড. আব্দুল মঈন খান ও স্থানীয় নেতারা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে খালেদা জিয়া যশোর সার্কিট হাউজ থেকে কলারোয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। বেলা ১টা ১৭ মিনিটে কলারোয়ার পৌঁছান তিনি। ব্যাপক সংবর্ধনায় তাকে স্বাগত জানিয়েছে সাতক্ষীরাবাসী। ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকরা রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে তাকে স্বাগত জানায়। এ সময় খালেদা জিয়াও হাত নেড়ে শুভেচ্ছার জবাব দেন। সফরে তার সাথে রয়েছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ওসমান ফারুক, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব শিমুল বিশ্বাস, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল। বুধবার বিকেল ৩ টা ৫৫ মিনিটে তিনি ঢাকা থেকে সড়ক পথে রওনা দিয়ে রাত ১০টার দিকে যশোর পৌঁছান। সেখানে সার্কিট হাউসে স্থানীয় নেতাকর্মীরা তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।