হরতালঃ সোম,মঙ্গল,বুধ
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ তিন দিনের হরতালের ফাঁদে পড়ছে দেশ। নাস্তিক ব্লগারদের শাস্তি দাবিসহ ১৩ দফা দাবিতে রাজধানীর শাপলা চত্বরে শনিবারের মহাসমাবেশ থেকে সোমবার হরতালের ডাক দেয় হেফাজতে ইসলাম। অন্যদিকে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় রোববার বিকেলে ১৮ দলীয় জোট মঙ্গল ও বুধবার ৩৬ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে। ফলে টানা তিন দিনের হরতালের কবলে পড়ছে সারা দেশ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ আটক নেতাদের মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আগামী ৯ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ১০ এপ্রিল বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩৬ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে ১৮ দলীয় জোট। রোববার বিকেলে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ এই ঘোষণা দেন। এক প্রশ্নের জবাবে সালাহ উদ্দিন বলেন, ১০ এপ্রিল নয়া পল্টনে ১৮ দলীয় জোটের পূর্বঘোষিত সমাবেশ বাতিল করা হয়েছে। সালাহ উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়েছি কারো জামিন বহাল রাখা হয়নি। সবাইকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। রাষ্ট্র জুডিশিয়াল টেরোরিজমে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় প্রিয় মাতৃভূমি পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার নিজেই সারা দেশে অবরোধ সৃষ্টি করেছে। রাজপথ, নৌ-পথ, রেলপথ বন্ধ ঘোষণা করেছে। আমরা বিষ্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম, সরকারের জোটভুক্ত বিভিন্ন সংগঠন, সাংস্কৃতিক জোট, ঘাদানিক, একজন মন্ত্রীর নেতৃত্বে সেক্টর কমান্ডার ফোরাম, সরকারের আশ্রিত তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চকে দিয়ে নজিরবিহীনভাবে শুক্রবার ও শনিবার হরতাল পালন করেছে। ইতোপূর্বে বেশ কয়েকবার সরকার বিরোধী দলের কর্মসূচি বানচাল করার জন্য একই অপকৌশল প্রয়োগ করেছে। তিনি বলেন, অগণতান্ত্রিক, স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট এই সরকার জোর করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার কুমানসে দলন-পীড়ন নির্যাতনের স্ট্রিম রোলার চালিয়ে জনগণের কণ্ঠরোধ করতে চায়, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করতে চায়, নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে গণআন্দোলন স্তব্ধ করতে চায়। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, মামলা, হামলা, নির্যাতন, গ্রেফতার, জুলুম, অপহরণ ও খুন করে অতীতের বাকশাল সরকারও তাদের শাসন দীর্ঘায়িত করতে পারেনি। দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশনাকারী এই সরকারেরও একই পরিণতি হবে বলেই দেশপ্রেমিক জনগণ বিশ্বাস করে। সালাহ উদ্দিন বলেন, আপনারা জানেন ইতোপূর্বে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ পণ্ড করে কার্যালয়ের কক্ষ ভেঙে দলের সিনিয়র নেতাসহ ১৫৪ জন নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে তাদের ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করে ৮ দিনের রিমান্ডে নির্যাতন করে। তিনি বলেন, ‘আমরা গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশব্যাপী পরিচালিত গণহত্যার প্রতিবাদে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন ও অদক্ষ, অযোগ্য দুর্নীতিবাজ ব্যর্থ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ইতোপূর্বে বেশ কয়েকদিন হরতালসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালন করেছি। এখনো সরকারকে জনদাবিসমূহ মেনে নিয়ে দেশে গণতন্ত্রের যাত্রাকে অব্যাহত রাখার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় তীব্র গণআন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট এই সরকারের পতন অনিবার্য। আমরা এ সমস্ত দাবিসহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ৯ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ১০ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩৬ ঘণ্টা হরতাল পালনের জন্য দেশবাসীকে বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে আহ্বান জানাচ্ছি।’
ব্রিফিং এ অন্যদের মধ্যে সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহীন, শামীমুর রহমান শামীম, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক সিকদার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।