অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-বাংলাদেশে আজ
প্রভাষ আমিনঃ হঠাৎ গজিয়ে ওঠা হেফাজতে ইসলামের ডাকে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে বিশাল সমাবেশ দেখে আমার বন্ধুদের কেউ কেউ ভয় পেয়েছেন। এত বড় সমাবেশ! আমি একটুও ভয় পাইনি, অবাকও হইনি। সরকার নানা কৌশলে বাধা না দিলে লোক আরো অনেক বেশি হতো। ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে ৯০ ভাগ মুসলমান। তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগলে তারা মাঠে নামতেই পারে। হেফাজতে ইসলাম যদি সত্যি সত্যি ইসলামের হেফাজতের জন্যই মাঠে নামতো তাহলে আমরাও শাপলা চত্বরের সমাবেশে যেতে পারতাম। হেফাজতে ইসলামের নেতারা মুখে বারবার বলছেন, তারা অরাজনৈতিক সংগঠন, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু তাদের দাবি-দাওয়া, কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে তারা আসলে হেফাজতে জামায়াতে ইসলামী। তাদের ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায়, হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন আড়াল করে দিতে চাইছে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজা আর জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার দাবি। হেফাজতের আন্দোলনের সুবিধাভোগী জামায়াতে ইসলামী। সমাবেশ দেখে ভয় না পেলেও সমাবেশের আগেই তাদের ১৩ দফা দাবি দেখে আমি সত্যি সত্যি ভয় পেয়েছি। হেফাজতে ইসলাম বারবার বলেছে তারা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করবে। কিন্তু সমাবেশে যাওয়ার পথে মহাখালীতে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সমাবেশে আর ফেরার পথে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে হামলা চালিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে তারা শান্তির ধর্ম ইসলামের হেফাজত করার যোগ্য নয়। বরং বারবার উস্কানী সত্ত্বেও দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে অহিংস আন্দোলন করে গণজাগরণ মঞ্চ বুঝিয়ে দিয়েছে ইসলাম ধর্মের যে মূল চেতনা শান্তি, সত্যিকার অর্থে সেটি তারাই ধারণ করতে পেরেছেন। বলছিলাম ভয়ের কথা। হেফাজতের ১৩ দফা দাবি দেখে যতটা ভয় পেয়েছি, তারচেয়ে অনেক বেশি ভয় পেয়েছি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর পরিবেশমন্ত্রীর কথা শুনে। ৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তিপূর্ণ (!) সমাবেশ করায় হেফাজতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন, হেফাজতের দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। হায় আল্লাহ। এ কি শুনছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস শুনে আমি আশ্বস্ত হতে পারিনি, বরং আতঙ্কের একটা শীতল স্রোত আমাকে গ্রাস করেছে। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আপনি কী হেফাজতের দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন? যদি আপনার পূর্বসূরীর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাগর-রুনীর খুনীদের গ্রেপ্তারের মত ঢালাও আশ্বাস হয়, তাহলে বলার কিছু নেই। আর যদি আপনি পড়ে-বুঝে দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে থাকেন, তাহলে এই মূহুর্তে আপনার পদত্যাগ বা অপসারণ (যেটা দ্রুততম সময়ে সম্ভব) দাবি করছি। অবিলম্বে অপসারণ দাবি করছি পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদেরও। বন-জঙ্গল নিয়ে কাজ করতে করতে হেফাজতে ইসলামের জংলী দাবি তার পছন্দ হয়ে গেছে। ড. হাছান বলেছেন, হেফাজতের অনেক দাবি পূরণ হয়েছে। অনেকগুলো পূরণ হওয়ার পথে। কিন্তু বাস্তবতা হলো ৩০ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত এই বাংলাদেশে হেফাজতের ১৩ দফা দাবি পূরণ তো দূরের কথা, বিবেচনারও কোনো সুযোগ নেই। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী, সংসদ উপনেতা, কৃষিমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, টেলিযোগাযোগমন্ত্রী, শ্রম প্রতিমন্ত্রী নারী সে দেশে হেফাজতের দাবি বিবেচনার কোনো সুযোগ থাকতে পারে না।
১৩ সংখ্যাটি অশুভ। কিন্তু হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবির মত এত অশুভ কোনো ১৩ আমি আমার জীবনে দেখিনি। তাদের একটি দাবি হলো ‘ব্যক্তি ও বাক স্বাধীনতার নামে সকল বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্জ্বলনসহ সকল বিজাতীয় সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।’ বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ, সাদেক হোসেন খোকা, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি; জাতীয় পার্টি নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ ৬ এপ্রিলের সমাবেশের মঞ্চে উঠে নিজ নিজ দলের পক্ষে সংহতি প্রকাশ করেছেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ উত্তরায় ঘুরে ঘুরে হেফাজতের কর্মীদের পানি খাইয়েছেন। কিন্তু আমার প্রশ্ন, তারা কী সংহতি প্রকাশ করার আগে ১৩ দফা দাবি পড়ে দেখেছেন? এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের আগে তো বিএনপির দলীয় প্রধানের পদ থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে অপসারণ করতে হবে। নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ যারা মানে না, তারা কি নারী নেতৃত্ব মানবে? হরতালের সময় বিএনপির নারী এমপি ও নারী নেত্রীরা যেভাবে পুলিশের সঙ্গে মারামারি করে, গাড়ি ভাঙে, সেটা কী সমর্থন করবে হেফাজতে ইসলাম। আর বাংলাদেশে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ বন্ধ হয়ে গেলে লাম্পট্যে নোবেল পাওয়ার দাবিদার এরশাদের কী হবে। তার সব নারীবন্ধু যদি প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে, তাহলে সেই বিশাল মিছিলের নেতৃত্ব কে দেবে? সব আন্দোলনেই মূল দাবির পাশাপাশি কিছু উটকো দাবি থাকে। কিন্তু হেফাজতের ১৩ দফার সবগুলোই তারা বিশ্বাস করে দিয়েছে বলেই মনে হয়। তাদের সমাবেশে যেভাবে তারা নারী সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাতে মনে হয় ‘নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ’ বন্ধ করাই তাদের মূল দাবি। হেফাজতের সমাবেশ কাভার করতে কেন নারী সাংবাদিক গিয়েছে, এই অপরাধে ইটিভির নাদিয়া শারমিনকে যেভাবে রাজপথে দৌঁড়ে দৌঁড়ে পিটিয়েছে হেফাজতিরা তাতে আমরা ভয় পাই। একজন নারীকে যারা হেফাজত করতে পারেন না, তারা কিভাবে ইসলামকে হেফাজত করবেন? হেফাজতে ইসলাম শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের বিরোধিতা করছে। কিন্তু ২ মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে যে আন্দোলন চলছে, তাতে নারী-পুরুষ পাশাপাশি নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই সময়ে শাহবাগে একজন নারীও আক্রান্ত হননি। তার মানে নারীরা শাহবাগে নিরাপদ, মতিঝিলে আক্রান্ত। আর আক্রমনের ধরণ দেখলেই বোঝা যায় তারা কতটা বিকৃত, কতটা ধর্ষকামী।
স্বাধীনতার ৪২ বছরে রাজনীতিবিদরা মারামারি করে দেশের উন্নয়ন আটকে রাখার চেষ্টা করলেও অদম্য জনগণ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে। আমাদের শ্রমিকরা সারাবিশ্বে পরিশ্রম করে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে, তাতে সচল থাকছে অর্থনীতির চাকা। যে পাকিস্তানের কাছ থেকে ৪২ বছর আগে আমরা স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি, সেই পাকিস্তান এখন প্রায় অকার্যকর রাষ্ট্র। অনেক সামাজিক সূচকে আমরা এখন ভারতের চেয়েও এগিয়ে। এই এগিয়ে যাওয়ার সংগ্রামে নারীরা পুরুষের পাশে থেকে সমানতালে পা ফেলছে। ভোরে আশুলিয়ার দিকে গেলে যে কারো মন ভালো হয়ে যাবে। গার্মেন্টসের নারী শ্রমিকদের মিছিল যেন প্রগতিরই সমার্থক। ২০ লাখ নারী শ্রমিক প্রতিদিন সেলাই করে যাচ্ছে দেশের উন্নয়ন, দেশের অর্থনীতি। হাসিনা-খালেদা না হয় উত্তরাধিকার সূত্রে নেতৃত্ব পেয়েছেন। কিন্তু দেশের প্রায় সবক্ষেত্রেই নারীরা এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন নিজেদের যোগ্যতায়। এখন আর- এটা পুরুষের কাজ, এটা নারীদের- এমন কোনো বিভেদ নেই। রাজনীতি, বিচার বিভাগ, সেনাবাহিনী, পুলিশ, সাংবাদিকতা- সব ক্ষেত্রেই নারীদের যোগ্য বিচরণ। নারীরা এখন ট্রেন চালাচ্ছে, প্যারাস্যুটে ঝাঁপ দিচ্ছে, এভারেস্টের চুড়ায় তুলে ধরছে দেশের পতাকা। বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর। এই অর্ধেককে অন্তরালে রেখে যারা দেশের অগ্রগতিকে থামিয়ে দিতে চায়, তাদের থামাতে হবে এক্ষুনি। সরকারি দলের যারা এদের সঙ্গে সমঝোতার পথে এগুতে চাচ্ছেন, তাদের বলি, সমঝোতা করে এদের বোঝানো যাবে না। এদের দমন করতে হবে কঠোরভাবে। এর আগে আমরা এই বাংলাদেশে মৌলবাদীদের ভয়াবহতা দেখেছি। মৌলবাদীদের উত্থানের শুরুটাও হয়েছিল তখনকার বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রাথমিক নমনীয়তা থেকেই। চট্টগ্রামে যদি ১৪৪ ধারা দিয়ে গণজাগরণ মঞ্চকে ফিরিয়ে দেয়া না হতো, তাহলে হয়তো হেফাজতে ইসলাম এতদূর আসতে পারতো না।
৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে ইসলাম ধর্ম, পবিত্র কোরআন, মোহাম্মদ (সঃ) সম্পর্কে অবমানার প্রতিবাদ হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অবমাননা কারা করেছে, সেটা তো আগে চিহ্নিত করতে হবে। কোথাকার কোন ব্লগার কী লিখেছে, তার দায় কেন গণজাগরণ মঞ্চের ওপর চাপানো হবে। শাহবাগে দুই মাসেরও বেশি সময়ের আন্দোলনে অন্তত ২০ লাখ লোক যোগ দিয়েছেন। এখন এই সবার ব্যক্তিগত অপরাধের দায় তো গণজাগণ মঞ্চ নেবে না। শাহবাগে তো কোনোদিন ইসলামের বিরুদ্ধে একটি অক্ষরও উচ্চারিত হয়নি। তবে কেন গণজাগরণ মঞ্চকে নাস্তিকদের মঞ্চ বলা হবে। হেফাজতে ইসলাম আসলে বারবার ভুল দরজায় কড়া নাড়ছে। ইসলামের অবমাণনা যদি কেউ করে থাকে, তবে তা আমার দেশ আর মাহমুদুর রহমান। ব্লগার রাজিব হায়দার মারা যাওয়ার দুদিন পর আমার দেশ তার নামে কুৎসা রটানো শুরু করেছে। পরে প্রমাণিত হয়েছে, আমার দেশে যা ছাপা হয়েছে, তা রাজিব মারা যাওয়ার পরে লেখা। তাহলে রাজিবের নামে যা ছাপা হলো, তা কে লিখেছে? এখন পর্যন্ত ইসলাম ও মোহাম্মদ (সঃ)এর জন্য অবমাননাকর যা ছাপা হয়েছে, সবই আমার দেশে। তাহলে ইসলাম হেফাজত করতে আমার দেশের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা উচিত। সে আন্দোলন গণজারগণ মঞ্চের বিরুদ্ধে কেন। আমি নিশ্চিত সেদিন শাপলা চত্বরের সমাবেশে যারা এসেছিলেন তাদের ৯৯ শতাংশই জানেন না ব্লগ ব্যাপারটি কি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একজন বলেছেন, ব্লগ দিয়ে ইন্টারনেট চালায়। ডিজিটাল বাংলাদেশে ব্লগ আর ইন্টারনেট সম্পর্কে এই যাদের ধারণা, তাদের দাবি বিবেচনায় নিতে হবে কেন। কে কোথায় কবে ইসলামের অবমাননা করেছে, সে ব্যাপারেও তাদের কোনো ধারণা নেই। চিল নিয়েছে কানের দশা। আমার দেশ দিনের পর দিন গোয়েবলসীয় কায়দায় প্রচারণা চালিয়ে ধর্মভীরু, সরলপ্রাণ মুসলমানদের বুঝিয়েছে শাহবাগ মানেই নাস্তিক, ব্লগ মানেই খারাপ। কী আশ্চর্য এই একবিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশ যখন ডিজিটালে বদলে যাচ্ছে, তখন এমন একটি ধারণা নিয়ে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নামতে পারে, এটাই বিস্ময়কর। তাই সবার আগে যারা মুসলমানদের বিভ্রান্ত করেছে, ভুল বোঝাচ্ছে, ইসলামের অবমাননা করছে সেই আমার দেশ বন্ধ করা প্রয়োজন, প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে।
সবার আস্কারায় হেফাজতের বাড় এতটাই বেড়েছে যে তারা অবিশ্বাস্য ১৩ দফা নিয়ে রাস্তায় নামতে পেরেছে। সেই ১৩ দফায় নারী নীতি-শিক্ষানীতি বাতিল করা, ভাস্কর্য স্থাপন বন্ধ করা, ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবি রয়েছে। এই দাবিগুলো শুধু মধ্যযুগীয়, অসাংবিধানিক, মামা বাড়ির আবদারসুলভই নয়; এই দাবিগুলো অনৈসলামিকও। ইসলাম শান্তি আর উদারতার ধর্ম। ইসলাম কখনো অন্যের ধর্ম, অন্যের বিশ্বাসের ওপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেয় না। শাপলা চত্বরের সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের প্রধান আল্লামা শাহ আহমেদ শফী বলেছেন, ক্ষমতায় থাকতে হলে ১৩ দফা দাবি মেনেই থাকতে হবে। আবার ক্ষমতায় যেতে হলেও এসব দাবি মেনেই যেতে হবে। ক্ষমতায় থাকা বা যাওয়ার জন্যই বোধহয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত- সবাই হেফাজতের মন পাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছে। কেউ সংহতি প্রকাশ করছে, কেউ পানি খাওয়াচ্ছে, কেউ ফান্ড দিচ্ছে, কেউ গোপনে সমঝোতা করছে। মখা বা হাছান যতই বিবেচনার আশ্বাস দেন, আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, বাংলাদেশে কোনোদিনই এই ১৩ দফা বাস্তবায়িত হবে না। আর শুধু বাংলাদেশ কেন, এই একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের কোনো দেশেই এই ‘অশুভতম ১৩’ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এমনকি আফগানিস্তান বা পাকিস্তানেও নয়। পাকিস্তানেও তালেবানদের নয়, জয় হয় মালালাদেরই। রাজনীতিবিদদের ক্ষমতার অঙ্কের কারণে এক অদ্ভূত আঁধার গ্রাস করেছে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে। কিন্তু আমি নিশ্চিত জানি, রাত যত গভীর, ভোর ততই নিকটবর্তী। উজ্জ্বল এক ভোর অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। ৩০ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত এই বাংলাদেশ হবে অসাম্প্রদায়িক, উদার, গণতান্ত্রিক; যেখানে সব মানুষের, সব ধর্মের সমান অধিকার থাকবে। নারী-পুরুষ, হিন্দু-মুসলমানে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না।
প্রভাষ আমিনঃ সাংবাদিক।।