প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আগামী নির্বাচন পদ্ধতি ঠিক করতে আলোচনায় বসেছেন রাষ্টীয় অতিথি ভবন যমুনায়। খুব ছোট প্রতিনিধিদল, দুই নেত্রীরই। প্রধান মন্ত্রীর সাথে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম আর আইন মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। খালেদা জিয়ার সাথে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সাবেক মন্ত্রী ডঃ খন্দকার মোশাররফ। যদিও দু’দিক থেকে জামাত এবং জাতীয় পার্টি প্রতিনিধি দলে ঢোকার জন্য খুব চেষ্টা করেছিল, কিন্তু দুই নেত্রীর দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত তারা আলোচনার টেবিলে জায়গা পায়নি।
খুব বেশি আলোচনা করতে হলো না। নির্বাচনের অনেকগুলো ফর্মুলাই তাদের কাছে ছিল, তাই ৩/৪ দিনের আলোচনাতেই দুই নেত্রী একমত হলেন যে স্পিকারের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি সংসদীয় সরকার নির্বাচন পরিচালনা করবে। যাতে উভয় দলের ৫ জন করে সদস্য থাকবেন, তবে তারা কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে সেনাবাহিনী। একমত হবার পর দুই নেত্রী একসাথে সংবাদ সম্মেলন এসব ঘোষণা দেন। তারা বলেন, নির্বাচনে যে দলই জিতুক, তারা ভবিষ্যতে পরষ্পরকে সহযোগিতা করবেন, বিরোধী দল সংসদ বর্জন করবেন না। সরকার প্রতিহিংসা মূলক কর্মকান্ড, হয়রানীমূলক মামলা, গ্রেপ্তার করবে না। বিরোধী দল হরতাল অবরোধের মতো ধংসাত্মক কর্মসূচি দেবে না। দেশের সকল সংবাদ পত্রে দুই নেত্রীর হাস্যোজ্জ্বল ছবি পরদিন ব্যানার হেডিং দিয়ে ছাপা হয়।
এই খুশিতে পরবর্তী শুক্রবার বাদ জুম্মা দেশের সকল মসজিদে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মন্দির ও অন্যান্য উপাসনালয়েও বিশেষ পার্থনা করা হয়। তবে জামাত ও জাতীয় পার্টিকে এই আলোচনায় না নেয়ার প্রতিবাদে তারা উভয় জোট পরিহারের ঘোষণা দেয়।
কিছুদিন পর রংপুরকে বাংলাদেশের রাজধানী করা হবে এমন ঘোষণা দিয়ে হো মো এরশাদ একাই নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। আর বাংলাদেশকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানে ফিরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে জামাত। এ ব্যাপারে তাদেরকে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন হেফাজতে ইসলামের নবনিযুক্ত সভাপতি বাবুনগরী। তবে তাদের বাড়া ভাতে ছাই দিয়ে সরকার একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে জামাতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
পাদটিকাঃ দুই নেত্রী ইচ্ছা করলে এর এই রঙিন স্বপ্নের বাস্তবায়ন অসম্ভব না। দেশের অন্তত ৯৫ শতাংশ মানুষ তাই চায়।