স্থলবন্দর বেনাপোলে আমদানি-রফতানি বন্ধ ।। প্রতিদিন ১০ কোটি টাকা রাজস্ব হাতছাড়া
মিজানুর রহমান, যশোর জেলা প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে দু’দিন ধরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ। বেনাপোল বন্দরের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের কাস্টম স্টেশনে ঘনঘন কম্পিউটারসহ ইন্টারনেট মডেমে নেটওয়ার্ক সমস্যা সমাধানসহ ৬ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমদানি-রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে পেট্রাপোলস্থ ভারতীয় সিএন্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ীরা। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে এই ধর্মঘট অনির্দিষ্টকালের জন্য শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে গত মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির সাথে পেট্রাপোল বন্দর ও কাস্টমসের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। যা গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত চালু হয়নি। এছাড়াও গত বুধবার উভয় দেশে পহেলা মে’র সরকারী ছুটির কারণে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে কোন আমদানি-রফতানি হয়নি। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ভারত থেকে দেশের সিংহভাগ শিল্প কলকারখানাসহ গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজের কাঁচামাল বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি করা হয়। ফলে, বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় সবমিলিয়ে প্রতিদিন ১০ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। সে মোতাবেক গত দুই দিনে অন্তত ২০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় কম হয়েছে। ভারতের পেট্রাপোল বন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শ্রী স্বপন শেড বলেন, পেট্রাপোল কাস্টমস অফিসের কম্পিউটারাইজড ও ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক সমস্যাসহ ৬ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মত ধর্মঘট চলছে। তবে, দাবি পূরন না হওয়া পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। তিনি আরও বলেন, কম্পিউটারাইজড ও ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক অচল থাকায় ঘনঘন এই বন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক সচল না থাকায় গেল মাসের (এপ্রিল) ১৫ দিনই দু’দেশের মধ্যে বন্ধ ছিল আমদানি-রফতানি বানিজ্য। শ্রী স্বপন শেড বলেন, ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক সমস্যা সমাধানের জন্য কোলকাতা থেকে ইঞ্জিনিয়ার এসে কাস্টমস ও বন্দরে বেশ কিছু দিন কাজ করেও নেটওয়ার্কিং সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। এ বিষয়ে বেনাপোল কাষ্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় দু’দেশের বন্দর এলাকায় শত শত পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকা পড়ে আছে। তিনি আরও বলেন, একটি ট্রাক একদিন অপেক্ষা করলে ব্যবসায়ীদের দুই হাজার টাকা ক্ষতিপূরন দিতে হয়। ফলে, অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণে একাধিক ব্যবসায়ী এই বন্দর থেকে ব্যবসা গুটিয়ে অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছে। বেনাপোল কাস্টমস চেকপোষ্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, আমাদের হিসাব অনুযায়ী বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলে সবমিলিয়ে প্রতিদিন ১০ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আয় কমে যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল বন্দরের পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে কম্পিউটারাইজড ইন্টারনেট লিংক সমস্যার কারনে প্রায়শ দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দর ও কাস্টমস হাউসে কাজকর্ম চলছে স্বাভাবিক গতিতে। তিনি আরও বলেন, বন্দর থেকে মালামাল ডেলিভারি কাজ দ্রুত চলছে।