গুলশান লেকের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

গুলশান লেকের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

বিশেষ প্রতিবেদক, এসবিডি নিউজ২৪ ডট কম: গুলশান-বনানী-বারিধারা লেকের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৪২টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। গত ৬ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অভিযান চলে। কিছু লোক অভিযানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও অভিযানকারী দল আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে তাঁরা সরে যান। অপরদিকে ঢাকা সিটি করপোরেশন (দক্ষিণ) গতকাল গুলিস্তান এলাকায় ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদে অভিযান চালায়। সেখানে হকারদের প্রায় ৮০০ চৌকি ভেঙে ফেলা হয়। জরিমানা হিসাবে আদায় করা হয় ৩৭ হাজার টাকা।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জানুয়ারি ‘বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে গুলশান লেক, বাঁধ দিয়ে নতুন নতুন অবৈধ স্থাপনা’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার ভিত্তিতে হাইকোর্ট ওই দিন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি রুল জারি করেন। একই সঙ্গে লেক রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে রাজউক চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রীয় টেলিযোগাযোগ কোম্পানি বিটিসিএলের চেয়ারম্যানকে আদালতে হাজির হতে বলেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৫ জানুয়ারি আদালত লেকের সীমানা নির্ধারণ করে দুই মাসের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন ৩০ মার্চের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়। রাজউকের নির্বাহী মাজিস্ট্রেট রোকন-উদ্-দৌলা প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের নির্দেশ মানতেই অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে ৪০ জনের মতো পুলিশের সদস্য অংশ নেন। প্রথমে বনানী ১১ নম্বর সড়কে সেতুর কাছে লেকের জায়গা দখল করে তৈরি ১২০টির মতো স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। পূর্ব পাশে সেতুর নিচে লেকে তৈরি ১২টি স্থাপনা এবং করাইল বস্তির কাছে লেকে তৈরি ১০টি স্থাপনা ভেঙে দেয়া হয়। দুপুরে করাইল বস্তির কাছে অবৈধ স্থাপনা ভাঙতে গেলে একদল লোক বাধা দেন। এ সময় পুলিশসহ অভিযানকারী দল তাঁদের জানায় যে লেকের জায়গার সরকারি মালিকানা নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। হাইকোর্টের নির্দেশে অভিযান চালানো হচ্ছে। এতে বাধা দেয়া হলে ঘটনাস্থলে আটক করাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরপর বাধাদানকারী ব্যক্তিরা সরে যান।
লেকের মধ্যে তৈরি স্থাপনাগুলো ভাঙতে পাঁচটি নৌকা ভাড়া করা হয়। উচ্ছেদের সময় কিছু বস্তিঘরের নারী-শিশুরা কাঁদতে থাকে। তাদের মধ্যে বিদ্যালয়ের পোশাক পরা শিশুও ছিল। অভিযানকারী দল অবশ্য স্থাপনার মালামাল সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় দিয়েছে। রাজউকের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম জানান, ৯ ফেব্রুয়ারি সেখানে আবার অভিযান হবে।
হকার উচ্ছেদ: সিটি করপোরেশন (দক্ষিণ) গতকাল সকালে গুলিস্তান এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ফুটপাতে হকারদের প্রায় ৮০০ চৌকি ভেঙে দেয়। গোলাপশাহ মাজার থেকে অভিযান শুরু করে জিরো পয়েন্ট, জিপিওর বিপরীত পাশে, খদ্দর মার্কেটের সামনে এবং বংশাল রোডের ফুটপাতে অভিযান চালানো হয়। সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট খলিল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদের প্রস্তুতি হিসেবে চৌকিগুলো ভাঙা হচ্ছে। যাঁরা অভিযানে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের কাছ থেকে মোট ৩৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পরে গুলিস্তান পাতাল মার্কেটেও হকার উচ্ছেদ শুরু করা হয়। ব্যবসায়ীরা ভবিষ্যতে দোকানের সামনে মালামাল না রাখা এবং হকারদের বসতে না দেয়ার মুচলেকা দিলে অভিযান থামানো হয়।

বিশেষ প্রতিনিধি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।