ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে প্রযুক্তিতে বাংলার ব্যবহার আরো বাড়ানো প্রয়োজন

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে প্রযুক্তিতে বাংলার ব্যবহার আরো বাড়ানো প্রয়োজন

আসিফ রায়হান,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ প্রযুক্তির সুফল জনগণের কাছে পেঁৗছে দিতে প্রয়োজন সাধারণ মানুষকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করা। বিশ্বে যেসব দেশ তথ্যপ্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রয়োগে এগিয়েছে তারা সবাই মাতৃভাষা প্রয়োগ করছে। তাই তথ্য-প্রযুক্তিসংক্রান্ত সব উদ্ভাবন ও প্রয়োগে বাংলা ভাষা বেশি মাত্রায় ব্যবহার করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।  বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাষাপ্রেমী প্রযুক্তিবিদরা দীর্ঘদিন ধরেই তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিয়ে কাজ করছেন। এতে অগ্রগতিও হয়েছে বিস্ময়কর। বিশ্বের অন্যান্য ভাষার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখন বাংলাতেই সম্ভব হচ্ছে কম্পিউটারে লেখালেখি, বই-পুস্তক ও পত্র-পত্রিকা প্রকাশ, গবেষণা, ওয়েবসাইট নির্মাণ, তথ্য ও ছবি অনুসন্ধান, ই-মেইল আদান-প্রদান, বস্নগিং, ফায়ারফক্স ব্রাউজার, ওপেন অফিস, জুমলা, গুগল, লিনাক্স, উবুন্টু। এছাড়া ওয়েব ব্রাউজার মজিলা, জনপ্রিয় ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন গুগল ও জি- মেইল বাংলা ভাষাকে যুক্ত করেছে।

বাংলা ভাষার অগ্রগতি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেসবুকেও। এদিকে মোবাইল ফোনেও বাংলাতেই সংক্ষিপ্ত বার্তা (এসএমএস) আদান-প্রদান করা যাচ্ছে। পাশাপাশি মোবাইল হ্যান্ড সেটে বাংলা কি-প্যাড থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাদের মতে, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলার ব্যবহার আরো বাড়াতে হবে।

ভাষা গবেষণা প্রতিষ্ঠান এথনোলগ : ল্যাংগুয়েজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডের ২০০৯ সালে প্রকাশিত হিসাব মতে, সারা বিশ্বে প্রায় ৭ হাজার ৩৫৮টি ভাষা এবং প্রায় ৩৯ হাজার ৪০০টি উপভাষা রয়েছে। দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ অফ দ্য ওয়ার্ল্ড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী, পৃথিবীতে প্রায় ৬ হাজারের মতো ভাষা আছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ ভাষায় কথা বলে পৃথিবীর ৯৬ শতাংশ মানুষ।  বর্তমানে বিশ্বের মোট জনসংখ্যা ৭০০ কোটি। এরা প্রায় ৬ হাজার ভাষায় কথা বলে। তবে ভাষাতত্ত্ববিদরা মনে করছেন, আগামী ১০০ বছরের মধ্যে প্রায় ৩ হাজার ভাষা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।  উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে, বিশ্বে প্রায় ২৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ বাংলা ভাষা ব্যবহার করে। ভাষাভাষীর সংখ্যা অনুসারে বাংলার স্থান ষষ্ঠ। বাংলাদেশসহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর, বিহার ও উড়িষ্যা, আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিয়ন এবং মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চলের রোহিঙ্গারাও বাংলা ভাষায় কথা বলে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, তথ্য ও জ্ঞানের ভান্ডার এখন কম্পিউটারকেন্দ্রিক। সারাবিশ্বে ভাষাগত অবস্থানে বাংলা ষষ্ঠ হলেও কম্পিউটারের মাতৃভাষা ইংরেজি। তাই প্রয়োজন পরিপূর্ণ ইউনিকোড সমর্থিত উইন্ডোজ ও লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম সমর্থনে বাংলা অপারেটিং সিস্টেম। তাদের মতে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে প্রযুক্তিতে বাংলার ব্যবহার আরো বাড়ানো প্রয়োজন। আর বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি এবং বাংলা কম্পিউটিং নিশ্চিত করতে বিশাল পরিসরে বাংলা ডিকশনারি প্রস্তুত করা জরুরি। এছাড়াও প্রয়োজন ইংরেজি থেকে বাংলা, বাংলা থেকে ইংরেজি করার ভালো ট্রান্সলেশন সিস্টেম।

নিজস্ব প্রতিনিধি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।