আইন সংশোধনের দাবিতে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের অবস্থান কর্মসূচি
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ
বিদ্যমান আইনের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে তামাক কোম্পানিগুলো পরোক্ষ বিজ্ঞাপনসহ নানা ধরনের প্রচারণা কার্যক্রমের মাধ্যমে যুব সমাজকে ধূমপানে আকষ্ট করতে নানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তামাক কোম্পানির এ ধরনের কার্যক্রমে ফলে ধূমপায়ীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশকে তামাকজনিত রোগ ও মহামারীর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তামাকজনিত মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব রোধে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন জরুরি। আজ সকাল ১১টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার সামনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা এ দাবি জানায়।
প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারন সম্পাদক হেলাল আহমেদ এর সভাপতিত্বে ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম সুজন এর পরিচালনায় অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন স্যোসাল এডভান্সমেন্ট ফোরাম (সাফ) সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মীর আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, বি.আর.সি.টি’র পরিচালক মাহবুবুল হক, সাডা’র নির্বাহী পরিচারক মুরাদ আহমেদ প্রমুখ।
আইনভঙ্গ করে বিজ্ঞাপন প্রচারের অভিযোগ তুলে তামাক কোম্পানির শাস্তি দাবি করে বক্তারা বলেন, কিশোর ও তরুন প্রজন্মকে ধূমপানের নেশা থেকে বিরত রাখতে আইনে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু কোম্পানিগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নানা ধরনের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের তরুণ প্রজন্মকে ধুমপানে উৎসাহী করতে বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে। নাটক সিনেমায় ধূমপানের দৃশ্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের তরুণ সমাজকে রক্ষায় তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।
সভপতির বক্তব্য হেলাল আদমেদ বলেন, সচিত্র স্বাস্থ্যসতর্কবানীর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ নিরক্ষর। এ সকল জনসাধারণকে তামাকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী প্রদান করতে হবে। পৃথিবীর উন্নত দেশে কোম্পানিগুলো সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী প্রদান করলেও, বাংলাদেশে প্রদান করছে না। এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, পাবলিক পেলস, পরিবহনে ও কর্মস্থলে পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ধূমপান না করেও প্রায় ১ কোটি নারী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধূমপানে নারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হচ্ছে। এ সকল নারীদের তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব হতে রক্ষায় সকল পাবলিক পেলস, পরিবহন ও কর্মক্ষেত্রে ১০০% ধূমপানমুক্ত করা প্রয়োজন।
মীর আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা কোম্পানিগুলোর এমন একটি কার্যক্রম যার মাধ্যমে তারা নিজেদের অপকর্মকে আড়াল করে থাকে। এ সকল কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা মানুষের সহানুভুতি আদায় করছে। তামাক কোম্পানীগুলো এর্কার্যক্রম করেই ক্ষান্ত নয়, বিভিন্ন কুটকৌশলে নীতি নির্ধারক ও প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদেরও প্রভাবিত করছে। সরকারের কর্মকর্তাদের কোম্পানিগুলোর সাথে কিভাবে কার্যক্রম করবে সে বিষয়ে সুপষ্ট নীতি থাকা প্রয়োজন। এধরনের নীতি তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সরকারের নীতিকে কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
বক্তারা বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের কারণে প্রতিবছর ৫৭,০০০ মানুষের মৃত্যু ৩,৮২,০০০ মানুষের পঙ্গুত্ব বরণ করে এবং ১১,০০০ কোটি টাকা চিকিৎসা খাতে ব্যয় করতে হচ্ছে। মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ অপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই হতে পারে না। তাই জনপ্রতিনিধিদের অবিলম্বে এই আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।