সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে আপনাদের কোনো মাথাব্যথা নেইঃ সাংবাদিক নেতাদের উদ্দেশ্যে নির্মল সেন
নিজস্ব প্রতিনিধি, এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর বিভক্তির সমালোচনা করে নিজেদের অধিকার আদায়ে তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রবীণ সাংবাদিক নির্মল সেন। সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক নেতাদের আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু বাংলাদেশের দুটি সাংবাদিক ইউনিয়ন দুটি রাজনৈতিক ধারায় বিভক্ত। রাজনৈতিক নেতারাও বিভক্ত হয়ে সাংবাদিক ইউনয়নের দুটি দলের অনুষ্ঠানে আসেন। এটা আমি পছন্দ করি না।” “এর আগেও আপনারা আমাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ডেকেছেন। আমি বলেছি, আপনারা ঐক্যবদ্ধ হন, আমি আসবো। আজ আপনারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন, তাই আমি এসেছি”, যোগ করেন এই সাহিত্যিক-রাজনীতিক।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), জাতীয় প্রেসক্লাব এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এক যৌথসভা থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর মধ্যে প্রথম দুটি সংগঠনই ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলপন্থী হিসেবে চার ধারায় বিভক্ত। দুই সংগঠনেরই আলাদা কমিটি আছে, যারা আলাদাভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে থাকে।
১৯৯০ সালের পর এবারই প্রথম সবগুলো ধারার সাংবাদিক সংগঠন একজোট হয়ে সাগর-রুনির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে।
অধিকারবঞ্চিত মানুষের পক্ষে অতীতে বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় নির্মল সেন এই সমাবেশে সাংবাদিক নেতাদের উদ্দেশে বলেন, “সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে আপনাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।”
“আমি অতীতে যা দেখেছি, তাই লিখেছি। এজন্য অনেক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাকে। আমি এক সময় লিখেছি স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই। এটা এখন স্লোগানে পরিণত হয়েছে”, যোগ করেন তিনি।
১৯৫৯ সালে দৈনিক ইত্তেফাকে সাংবাদিকতা শুরু করা নির্মল সেনের সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল দৈনিক বাংলা। বিভিন্ন আন্দোলনে যোগ দিয়ে একাধিকবার কারাবরণও করতে হয়েছে তাকে। সাগর-রুনির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে রাজধানীর পাশাপাশি সারাদেশের সব সাংবাদিক সংগঠনও স্থানীয় পর্যায়ে সমাবেশ করছে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর এবং তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুনি। এরপর ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও খুনের কারণ কিংবা খুনিদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।
সাংবাদিক সংগঠনগুলো খুনিদের গ্রেপ্তারের জন্য বুধবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে বলেছিল, এর মধ্যে হত্যাকারী গ্রেপ্তার না হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।