ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের কাছে ৮ উইকেটে সিলেট রয়্যালস পরাজয়!
ক্রীড়া প্রতিবেদক,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের কাছে ৮ উইকেটে হেরে বিপিএলে টানা সপ্তম পরাজয়ের স্বাদ পেল সিলেট রয়্যালস। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিলেটের ১২৮ রানের মামুলি সংগ্রহ খুব সহজেই টপকে যায় ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস। মোহাম্মদ আশরাফুলের ৪০ ও আহত হয়ে অবসর নেওয়ার আগে ইমরান নাজিরের ৩১ রান ঢাকার জয়ের পথকে করে দেয় প্রশস্ত ও নিষ্কন্টক। পরে আশরাফুল আউট হওয়ার পর আজহার মেহমুদ ও কাইরন পোলার্ড খুব সহজেই ঢাকাকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। আজহার মেহমুদ ২৯ করে আউট হয়ে গেলেও পোলার্ড শেষ পর্যন্ত ২২ রানে আপরাজিত থেকে তিন ছক্কার সাহায্যে অপরাজিত থাকেন মাত্র ৬ বল খেলে।
ব্যাটে-বলে সিলেটের পারফরম্যান্স দেখে মনে হয়েছে প্রতিযোগিতার ফিকশ্চার দেখে আজ ঢাকার বিপক্ষে তারা কেবল খেলতেই নেমেছে। জয়ের স্পৃহা, লড়িয়ে মনোভাব-সবকিছুই অনুপস্থিত ছিল সিলেট রয়্যালসের খেলায়। ব্যাটিংয়ের সময় এলোমেলো ব্যাট চালিয়ে উইকেট দিয়ে আসার উত্সবে মেতেছিলেন সিলেট রয়্যালসের ব্যাটসম্যানরা। ১২৮ রান রক্ষা করতে নেমে যে ধরনের বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের প্রয়োজন ছিল, সেটাও যেন করতে ভুলে গিয়েছিল সিলেট রয়্যালস। একের পর এক বাজে বল। আকাশে ওঠা ক্যাচ ধরতে নিদারুণ ব্যর্থতার পরিচয়-কি ছিলনা সিলেটের ফিল্ডিংয়ে। পুরো খেলাতেই সিলেট রয়্যালসের শরীরী ভাষায় ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ ব্যাপারটি বড় নগ্ন হয়ে ফুটে উঠেছিল। অথচ এই দলটিতে ইমরুল কায়েস, অলোক কাপালিদের পাশাপাশি খেলছেন সোহেল তানভীর, কামরান আকমল , স্টট স্টাইরিসের মতো বিশ্ব পর্যায়ের ক্রিকেট তারকারা। দলটির প্রশিক্ষণের দায়িত্বে আছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ স্টুয়ার্ট ল।
১২৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে ব্যাটিংয়ে নেমে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের প্রয়োজন ছিল কেবল মাথা ঠাণ্ডা রাখা। সে ব্যাপারটি বেশ ভালোভাবেই করতে পেরেছেন ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের ব্যাটসম্যানরা। ইমরান নাজির ও আশরাফুল শুরুটাও করেন উত্তুঙ্গ। ফর্মে থাকা আশরাফুল উইকেটের চারদিকে বল পাঠাচ্ছিলেন দারুণ কুশলতায়। ব্যক্তিগত ৪০ রানে ‘আশরাফুলীয়’ কায়দায় অধৈর্য্য হয়ে না উঠলে আশরাফুল হয়ত ঢাকাকে জিতিয়েই মাঠ থেকে বের হতে পারতেন। লেগ স্পিনার নূর হোসেনের বলে উইকেটরক্ষক কামরান আকমলের হাতে স্ট্যাম্পড হন তিনি। আশরাফুল আউট হওয়ার কিছ পরেই মাথায় বল লেগে অবসর নেন ইমরান নাজির। অবসরে যাওয়ার আগে ইমরান নাজিরের সংগ্রহ ছিল ৩১। এরপর আজহার মাহমুদ নাবিল সামাদের বলে স্ট্যাম্পড হন। তাঁর সংগ্রহ ছিল ২৯। জয়ের শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে কাইরন পোলার্ড কেবল ঢাকার জয়কেই তরান্বিত করেছেন ২২ রানে অপরাজিত থেকে।
এর আগে, টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা সিলেটেরে শুরুটা কিন্তু একেবারেই মন্দ ছিলনা। কামরান আকমল ও ইমরুল কায়েস মিলে ২ দশমিক ৩ ওভারেই তুলে ফেলেছিলেন ২২ রান। এরপরই ছন্দপতনের শুরু। ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কাইরন পোলার্ডের হাতে ধরা পড়েন কামরান। রানের চাকা জোরে ঘোরানোর দায়িত্ব নিয়ে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা সোহেল তানভীর আউট হন দায়িত্বহীন শট খেলে। ইমরুল কায়েসও ব্যর্থতার নাগপাশে আটকে থাকেন আজহার মাহমুদের বলে পোলার্ডের হাতে ক্যাচ দিয়ে। নিয়মিত বিরতিতে সিলেটের উইকেট পড়তে থাকলে পিটার ট্রেগো ও নাঈম ইসলাম কিছুটা লড়াই জমানোর চেষ্টা করেন। ট্রেগো ৩৫ ও নাঈম ২৮ করেই মূলত রক্ষা করেছেন সিলেটের সম্মান। বাকি ব্যাটসম্যানদের যে অবস্থা তাতে এই দুটি স্কোর না থাকলে দলীয় স্কোরের অবস্থা কি হতো, তা ভেবে কোচ স্টুয়ার্ট ল আতঙ্কিত হতেই পারেন!
ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের সবচেয়ে সফল বোলার রানা নাভিদ-উল-হাসান। ৩ ওভারে ১৮ রান দিয়ে তিনি তুলে নিয়েছেন ৩টি উইকেট। এছাড়া আজহার মাহমুদ ২টি এবং মাশরাফি ১টি ও ইলিয়াস সানি ১টি করে উইকেট দখল করেন।