কুয়াকাটা, বরগুনা, তালতলী এলাকাকে পর্যটন-জোন হিসেবে গড়ে তোলা হবেঃ শেখ হাসিনা
বিশেষ প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহের সময় অপরাধী জওয়ানদের পালাতে বিরোধী দল বিএনপি সহযোগিতা করেছিল। আর এখনো বিরোধী দল বিডিআর বিদ্রোহের বিচারকাজে সহযোগিতা করছে না। আজ শনিবার বিকেলে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের দিন যারা হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল, তাদের ধরে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। তাদের বিচার অবশ্যই হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের বাঁচাতে পারেননি। বিডিআর বিদ্রোহের হত্যাকারীদেরও তিনি বাঁচাতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, কুয়াকাটায় তৃতীয় নৌবন্দর খোলার সমীক্ষা চলছে। জাহাজভাঙাশিল্প গড়ার পরিকল্পনাও সরকারের আছে। তিনি বলেন, কুয়াকাটা, বরগুনা, তালতলী এলাকাকে পর্যটন-জোন হিসেবে গড়ে তোলা হবে। জনসভায় বক্তব্য দেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান প্রমুখ।
এর আগে পটুয়াখালীর নবগঠিত রাঙ্গাবালী উপজেলা কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে কমপ্লেক্সের মাঠে এক মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিলখানায় সেনা কর্মকর্তাদের হত্যাকারীদের বিচার বাংলার মাটিতে হবেই। বিচার দ্রুত করার ব্যবস্থা নেবে সরকার। পিলখানা ও জেলায় জেলায় যারা বিদ্রোহ করেছিল তাদের বিচার করা হয়েছে। রাঙ্গাবালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহসান কবীর চানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. শাহজাহান মিয়া এবং কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী আসনের সাংসদ ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমান।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে যারা মা-বোনের ইজ্জত লুটেছে, যারা হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, অগ্নিসংযোগ করেছে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের বিচারের কাজ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। অত্যাচার, নির্যাতন, জমি দখল—এটাই ছিল তাদের কাজ। তারা মানুষের ওপর শুধু অত্যাচার করেছে, লুটপাট করেছে, অর্থসম্পদ পাচার করেছে। জনগণের জন্য তারা কিছুই করে যেতে পারেনি। রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ অবহেলিত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ এলাকাটি খুবই চমত্কার, বিশেষ করে সোনারচর। কুয়াকাটা এখন যেমন পর্যটন কেন্দ্র হয়েছে, আগামীতে সোনাচরও যাতে এভাবে গড়ে ওঠে সে ব্যবস্থা করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পৌঁছান। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রাঙ্গাবালী উপজেলার বাহেরচর এলাকায় অবতরণ করে। বেলা ১১টায় তিনি হেলিকপ্টারে করে সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটার উদ্দেশে রওনা দেন। প্রধানমন্ত্রীকে বহন করা হেলিকপ্টারটি দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কুয়াকাটার পাঞ্জুপাড়ায় নির্মিত হেলিপ্যাডে এসে নামে। কুয়াকাটায় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের যুব পান্থনিবাস, পৌরসভা ভবন এবং তুলাতলীতে ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কে তিন ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলের নামে তিনটি সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সম্প্রসারিত ভবনের উদ্বোধন করেন। এরপর তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেন।