বিএসএফ এর হাতে বাংলাদেশি হত্যা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিকঃ মার্কিন রাষ্ট্রদূত
সৌরভ চৌধুরী,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা ও নির্যাতন প্রসঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা বলেছেন, এসব ‘ঘটনায়’ ভারতকে দক্ষতার সঙ্গে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। ভারতের সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে বাংলাদেশি হত্যা এবং সম্প্রতি এক বাংলাদেশিকে বিএসএফ সদস্যদের নির্যাতন প্রসঙ্গে মজিনার কাছে জানতে চান এক সাংবাদিক।
জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, “আমি বুঝতে পারছি এটা ভারত সীমান্তের খুব কাছাকাছি। আগামীকাল আমি সীমান্ত পরিদর্শনে যাব বলে আশা করছি।”
ভারত সীমান্তে স¤প্রতি ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনা সম্পর্কেও তিনি অবহিত- এ মন্তব্য করে রাষ্ট্রদূত বলেন, “এসব ঘটনা খুবই দুঃখজনক, খুবই মর্মান্তিক।”
“এসব ঘটনার জন্য দায়ীদের বিষয়ে ভারত সরকার দক্ষতার সঙ্গে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বলে আমি আশা করি।”
রোববার রাজশাহীর পুঠিয়ার রাজবাড়ি পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মজিনা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সচিব পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী রোববারই রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বলেন, সীমান্ত রক্ষা বাহিনী (বিএসএফ) গুলি না করার কড়া নির্দেশ মানার চেষ্টা করছে।
স¤প্রতি রাজশাহীর খানপুর সীমান্তে চাঁপাই নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার গরু ব্যবসায়ী হাবিবুব রহমান হাবুর ওপর নির্যাতনের একটি ভিডিওচিত্র প্রকাশ পায় ভারতের বেসরকারি টেলিভিশন এনডিটিভিতে। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়।
ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় দায়ী আট বিএসএফ জওয়ানকে বিচারের মুখোমুখি করেছে ভারত। ওই ভিডিওটি তিনি দেখেছেন উল্লেখ করে ড্যান মজিনা বলেন, “ওরা জানে কারা ওই ঘটনায় জড়িত। আশা করি তাদের বিরুদ্ধে তারা [ভারত] ব্যবস্থা নেবে।” তবে ওইসব ঘটনা কিছু ব্যক্তির কর্মকাণ্ড- এ মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে এ জন্য ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক একটি ভিন্ন বিষয়- এ মন্তব্য করে রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশের সরকার [আমেরিকা] এই দুই দেশের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক চায়। তিনি বলেন, এ সম্পর্ক দুই দেশেরই নিরাপত্তা ও উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নয়া দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরমও সীমান্তে হত্যাকাণ্ড অনেক কমেছে বলে দাবি করেন। নয়াদিল্লি সীমান্তে হত্যা বন্ধে বারবার আশ্বাস দিয়ে এলেও সীমান্তে গুলি চলবে- এমন মন্তব্য করে বিএসএফ প্রধান সপ্তাহ খানেক আগেই বাংলাদেশে বিভিন্ন মহলের সমালোচনায় পড়েন।
স¤প্রতি ঢাকা সফরে আসা ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একটি প্রতিনিধি দলও বলে, ব্রাসেলসে ফিরে তারা সীমান্তে হত্যার বিষয়টি নিয়ে সেখানকার ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলবে।
সীমন্তা হত্যায় দায়ী বিএসএফ সদস্যদের বিচারে ইতিমধ্যে একাধিকার ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
বাংলাদেশ-ভারত সুসম্পর্ক বজায় থাকলে অর্থনৈতিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মজিনা। এর আগে বিকেলে নাটোরের উত্তরা গণভবন পরিদর্শন শেষে মজিনা পুঠিয়া রাজবাড়িতে যান। তিনি রাজশাহী অঞ্চলে পাঁচ দিন অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছে মার্কিন দূতাবাসের গণমাধ্যম শাখা।